টিউনিশিয়ায় বিক্ষোভ বাড়ছে। গোটা দেশ জুড়ে সেনা নামিয়েছে সরকার। সোমবার গ্রেফতার হয়েছেন ৬৩২ জন প্রতিবাদী। আটক ব্যক্তিদের অবিলম্বে ছাড়ার আর্জি জানিয়েছে অ্যামনেস্টি ইন্টারন্যাশনাল। সরকারের বক্তব্য, করোনা প্রকোপ কমাতে নতুন করে লকডাউনের সিদ্ধান্ত ঘোষণার পরেই রাস্তায় নেমে বিক্ষোভ দেখাতে শুরু করেন বহু মানুষ।
-
প্রশ্ন-উত্তরে করোনার টিকা
কতগুলো টিকা অনুমোদন পেয়েছে
ইউরোপ, যুক্তরাষ্ট্র ও ব্রিটেন বায়োনটেক-ফাইজার, মডার্না ও অক্সফোর্ড-অ্যাস্ট্রাজেনেকা, এই তিন টিকার অনুমোদন দিয়েছে৷ এর বাইরে রাশিয়া স্পুটনিক ৫ ও চীন সিনোভ্যাক টিকার অনুমোদন দিয়েছে৷
-
প্রশ্ন-উত্তরে করোনার টিকা
পার্থক্য
বায়োনটেক-ফাইজার ও মডার্নার টিকা হচ্ছে এমআরএনএ টিকা৷ মডার্নার টিকা ঘরের রেফ্রিজারেটরে সর্বোচ্চ ৩০ দিন পর্যন্ত রাখা যায়৷ বায়োনটেক-ফাইজারের টিকার মতো মডার্নার টিকাকে পরিবহনের সময় মাইনাস ৭০ ডিগ্রি সেলসিয়াস তাপমাত্রায় রাখতে হয় না৷ আর অক্সফোর্ড-অ্যাস্ট্রাজেনেকার টিকাটি ভেক্টর ভাইরাস টিকা, যা সাধারণ রেফ্রিজারেটরে রাখা যায়৷
-
প্রশ্ন-উত্তরে করোনার টিকা
দ্বিতীয় ডোজে অন্য টিকা?
তিনটি টিকার ক্ষেত্রেই দুটো করে ডোজ দিতে হয় এবং ডোজ দুটো একই টিকার হতে হবে৷ কারণ দুই ডোজে দুই ধরনের টিকা নিলে কী হতে পারে সে বিষয়ে এখনও কোনো তথ্য নেই৷
-
প্রশ্ন-উত্তরে করোনার টিকা
করোনা হলেও টিকা নিতে হবে?
হ্যাঁ, নেয়া ভালো৷ কারণ একবার সংক্রমিত হলে পরে আর হবে না, এমন কোনো নিশ্চয়তা নেই৷
-
প্রশ্ন-উত্তরে করোনার টিকা
কী অবস্থায় টিকা নেয়া যাবেনা?
করোনায় আক্রান্ত অবস্থায় এবং সাধারণ সর্দি, কাশি ও জ্বর থাকলে সেই সময় টিকা নেয়া যাবে না৷ কোয়ারান্টিনে থাকার সময়ও টিকা নেয়া যাবে না৷ যাদের কোনো বিষয়ে অ্যালার্জি আছে তাদের বেশিরভাগই টিকা নিতে পারবেন৷
-
প্রশ্ন-উত্তরে করোনার টিকা
শিশুদের টিকা?
টিকাগুলো ১৬ বছর বা তার বেশি বয়সিদের দেয়ার জন্য অনুমোদন পেয়েছে৷ শিশুদের টিকা দেয়ার বিষয়ে গবেষণা চলছে বলে জানিয়েছে জার্মানির রবার্ট কখ ইনস্টিটিউট৷
-
প্রশ্ন-উত্তরে করোনার টিকা
গর্ভবতীরা টিকা নিতে পারবেন?
‘জার্মান স্ট্যান্ডিং কমিশন অন ভ্য়াকসিনেশন’ বা স্টিকো গর্ভবতীদের টিকা নেয়ার পরামর্শ দিচ্ছেনা৷ আবার না-ও করছেনা৷ তবে গর্ভবতী মায়েদের মধ্যে যাদের করোনায় আক্রান্ত হওয়ার আশঙ্কা রয়েছে তারা ডাক্তারের সঙ্গে কথা বলে ঝুঁকি-লাভ বিবেচনা করে টিকা নিতে পারেন বলে জানিয়েছে স্টিকো৷ এদিকে, এমআরএনএ টিকা গর্ভবতী মা ও গর্ভের শিশুর জন্য ঝুঁকিপূর্ণ বলে বিশ্বাস করেননা বিশেষজ্ঞরা৷ তবে এ বিষয়ে এখন প্রাণীর উপর গবেষণা চলছে৷
-
প্রশ্ন-উত্তরে করোনার টিকা
পার্শ্বপ্রতিক্রিয়া?
টিকা নেয়ার পর তিনদিনের মধ্যে কিছু পার্শ্বপ্রতিক্রিয়া দেখা দিতে পারে৷ যেমন টিকার স্থান ফুলে যাওয়া, মাথাব্য়াথা, জ্বর, দুর্বল লাগা ইত্যাদি৷ তবে দুদিনের মধ্যে এগুলো সেরে যাবার কথা৷
-
প্রশ্ন-উত্তরে করোনার টিকা
অন্য টিকা নিতে কতদিন অপেক্ষা?
ইনফ্লুয়েঞ্জা, হাম, রুবেলা কিংবা টিটেনাসের টিকা নিতে চাইলে করোনার টিকা নেয়ার আগে বা পরে ১৪ দিন অপেক্ষা করার পরামর্শ দিচ্ছেন বিশেষজ্ঞরা৷
-
প্রশ্ন-উত্তরে করোনার টিকা
টিকা হালাল?
ফাইজার, মডার্না ও অ্যাস্ট্রাজেনেকার মুখপাত্ররা টাইমস অফ ইন্ডিয়াকে নিশ্চিত করেছেন তাদের টিকায় শূকরের কিছু নেই৷
-
প্রশ্ন-উত্তরে করোনার টিকা
টিকা নেয়ার পরও হাত ধোঁয়া, মাস্ক পরতে হবে?
টিকা আপনাকে কতদিন রক্ষা করতে পারে সে বিষয়ে এখনও কোনো গবেষণা নেই৷ তাই টিকা নিলেও স্বাস্থ্যবিধি মেনে চলা, সামাজিক দূরত্ব বজায় রাখা, মাস্ক পরা চালিয়ে যেতে হবে৷
গত বেশ কয়েক দিন ধরেই টিউনিশিয়ায় বিক্ষোভ দেখাচ্ছেন সাধারণ মানুষ।করোনার সংক্রমণ গোটা দেশেই ছড়িয়ে পড়েছে। ফলে গত বেশ কিছু দিন ধরেই সেখানে লকডাউন চলছে। লকডাউনের ফলে মানুষের কাজ গিয়েছে। দেশের অধিকাংশ যুবক কর্মহীন হয়ে পড়েছেন। শুধু তাই নয়, অর্থনীতির অবস্থাও ভয়াবহ। পর্যটন নির্ভর টিউনিশিয়ায় গত এক বছরে কার্যত কোনো পর্যটক যাননি। ফলে অর্থনীতি কার্যত ভেঙে পড়েছে। তারই মধ্যে লকডাউনে মানুষ ধৈর্য হারিয়েছেন।
সরকার বিরোধী বিক্ষোভ শুরু হয়েছে গোটা দেশ জুড়ে। সোমবার তা ভয়াবহ চেহারা নেয়। রোববার লকডাউন শেষ হওয়ার পরে সোমবার নতুন করে লকডাউনের ঘোষণা দেয় প্রশাসন। তারপরই দেশের বিভিন্ন প্রান্তে রাস্তায় নেমে পড়েন বিক্ষোভকারীরা। টায়ার জ্বালিয়ে, ডাস্টবিন জ্বালিয়ে তাঁরা বিক্ষোভ দেখাতে শুরু করেন। মানবাধিকার সংস্থা গুলির দাবি, কাঁদানে গ্যাস চালিয়ে, লাঠিচার্জ করে বিক্ষোভকারীদের ছত্রভঙ্গ করেছে পুলিশ। গ্রেফতার করা হয়েছে ৬৩২ জনকে। টিউনিশিয়ার প্রতিরক্ষামন্ত্রী জানিয়েছেন, গোটা দেশেই সেনা নামানো হয়েছে। পরিস্থিতি স্বাভাবিক করতে সেনা দেশ জুড়ে ফ্ল্যাগমার্চ করছে।
অ্যামনেস্টি জানিয়েছে, যাঁদের গ্রেফতার করা হয়েছে, তাঁদের অধিকাংশের বয়সই ১৫ থেকে ২০ বছরের মধ্যে। দ্রুত তাঁদের মুক্তির দাবি জানিয়েছে মানবাধিকার রক্ষার সংস্থাটি।
সরকার অবশ্য এখনই কাউকে মুক্তি দিতে চায় না। বরং পরিস্থিতি স্বাভাবিক হওয়া পর্যন্ত তাঁদের আটকই রাখতে চায়। বস্তুত, টিউনিশিয়ার অর্থনীতি ভয়াবহ জায়গায় পৌঁছেছে। আফ্রিকার বেশ কিছু দেশ করোনায় বিধ্বস্ত। ভয়াবহ অর্থকষ্ট শুরু হয়েছে। কাজ হারাচ্ছেন বহু মানুষ। তারই মধ্যে টিউনিশিয়ার বিক্ষোভকারীদের বক্তব্য, তাঁদের এক নতুন টিউনিশিয়ার স্বপ্ন দেখানো হয়েছিল। কিন্তু বাস্তবে তার ঠিক উল্টো ঘটনাই ঘটেছে।
এসজি/জিএইচ (রয়টার্স, এএফপি)