জার্মানি, পোল্যান্ড, অস্ট্রিয়ায় চরম আবহাওয়া সতর্কতা
১৩ সেপ্টেম্বর ২০২৪চেক প্রজাতন্ত্রে ভারী বৃষ্টিপাতের প্রভাব প্রতিবেশী রাষ্ট্র পোল্যান্ড, জার্মানি, অস্ট্রিয়া ও স্লোভাকিয়ায় পড়বে বলে আশঙ্কা করা হচ্ছে৷ একইসঙ্গে বাভারিয়ান আল্পস সংলগ্ন এলাকায় বছরের প্রথম ভারী তুষারপাতের সম্ভাবনা রয়েছে৷
পোল্যান্ড, জার্মানি, চেক প্রজাতন্ত্র, স্লোভাকিয়া ও অস্ট্রিয়ার কিছু অংশে ভারী বৃষ্টিপাতের ফলে মধ্য ইউরোপের বড় এই অংশটিতে সপ্তাহান্তে সম্ভাব্য বন্যার জন্য প্রস্তত থাকতে বলা হয়েছে৷
স্থানীয় আবহাওয়া কেন্দ্রগুলোর পূর্বাভাস অনুসারে, মাত্র ৭২ ঘন্টার মধ্যে পোলিশ-চেক সীমান্তের পার্বত্য অঞ্চলে ৪০০ মিলিমিটার পর্যন্ত বৃষ্টিপাত হবে বলে অনুমান করা হচ্ছে৷ অতিরিক্ত বৃষ্টিপাতের কারণে ৭২ ঘণ্টার মধ্যে আশেপাশের অঞ্চল ও শহরগুলো প্লাবিত হতে পারে৷
পোলিশ কর্তৃপক্ষ লোয়ার সিলেসিয়া, ওপোল ও সিলেসিয়ার দক্ষিণাঞ্চলে সর্বোচ্চ আবহাওয়া সতর্কতা জারি করেছে৷ দুর্যোগ মোকাবেলায় রোক্লো শহরের মেয়র একটি জরুরি কমিটি গঠন করেছে৷ ১৯৯৭ সালে রোক্লোর শহরের প্রায় এক তৃতীয়াংশ বন্যার পানিতে প্লাবিত হয়েছিল৷
পোলিশ আবহাওয়া অধিদপ্তর বলছে, ‘‘শুক্রবার থেকে রবিবারের মধ্যে ঝুঁকিপূর্ণ বন্যার সম্ভাবনা রয়েছে৷''
চেক-প্রজাতন্ত্রে ২০ বছরের মধ্যে সর্বোচ্চ বৃষ্টিপাতের শঙ্কা
চেক-প্রজাতন্ত্রের আবহাওয়া অধিদপ্তর এক সতর্ক বার্তায় বলেছে দেশটির পূর্বাঞ্চল মোভারিয়াতে ঘণ্টায় ১০০ কিলোমিটার বেগে ঝড়ো বাতাস বইতে পারে৷ বন্যার পানি থেকে শহরগুলো রক্ষার জন্য বালুর বস্তা ও বন্যা নিয়ন্ত্রক বাঁধ তৈরি করা হচ্ছে৷
দেশটির পরিবেশ মন্ত্রী পেটার হ্লাডিক এই পরিস্থিতিকে অতীতের বন্যাগুলোর সাথে তুলনা করে বলেন, ‘‘যেমনটা আমরা ১৯৯৭ ও ২০০২ সালে বন্যা দেখেছিলাম৷ যে বন্যায় অনেকের প্রাণহানি সহ কোটি কোটি ইউরোর ক্ষতি সাধন হয়৷''
২০০২ এর বন্যার প্রভাব পড়েছিল পার্শ্ববর্তী শহর জার্মানির ড্রেসডেনে৷ সেসময় এলবে নদীর উপর থাকা ব্রিজটি ভেঙে যায়৷
বন্যার ঝুঁকিতে অস্ট্রিয়া, স্লোভাকিয়া ও জার্মানি
চেক প্রজাতন্ত্রের দক্ষিণ ও পূর্ব সীমান্ত জুড়ে অস্ট্রিয়া ও স্লোভাকিয়ার কর্তৃপক্ষ তাদের বিভিন্ন নির্ধারিত অনুষ্ঠান বাতিল করেছে ও জরুরি পরিষেবাগুলোকে সহায়তা প্রদানের জন্য সামরিক বাহিনীর সদস্যদের মোতায়েনের প্রস্তুতি নিচ্ছে৷
অস্ট্রিয়ার চ্যান্সেলর কার্ল নেহামার বুধবার (১১ সেপ্টেম্বর) বলেছেন, রাষ্ট্রীয় সম্প্রচারক ওআরএফ পূর্বাভাস অনুযায়ী বৃষ্টিপাতের ফলে দানিউব নদীর পানির স্তর গত পাঁচ বছর বা এমনকি দশ বছরের মধ্যে সর্বোচ্চ উচ্চতায় উঠতে পারে৷
স্লোভাক ফায়ার ব্রিগেডের প্রধান অ্যাড্রিয়ান মিফকোভিচ পাঁচ থেকে ছয় কিলোমিটার দৈর্ঘ্যের ক্ষণস্থায়ী বাঁধ স্থাপনের জন্য প্রস্তুত রাখা হয়েছে বলে জানান৷ পাশাপাশি স্লোভাক সেনাবাহিনী ও স্বেচ্ছাসেবী দমকলকর্মীরাও সতর্ক অবস্থানে রয়েছেন৷
এদিকে দক্ষিণ জার্মানিতে, কিছু বাভারিয়ান আল্পস অঞ্চলে ৬০ থেকে ১০০ মিলিমিটার বৃষ্টিপাতের সম্ভাবনা রয়েছে৷ যেখানে জার্মান আবহাওয়া পরিষেবা (ডিডাব্লিউডি) বছরের প্রথম ভারী তুষারপাতের পূর্বাভাস দিচ্ছে, ৫০ সেন্টিমিটার বা প্রায় ২০ ইঞ্চি পরিমাণ ভারী তুষারপাত হতে পারে বলে পূর্বাভাসে জানানো হয়েছে৷
এসএইচ/এসিবি (ডিপিএ, এএফপি)