1. কন্টেন্টে যান
  2. মূল মেন্যুতে যান
  3. আরো ডয়চে ভেলে সাইটে যান

জার্মানির বেহাল ইন্টারনেট পরিষেবার ইতিবৃত্ত

৩ সেপ্টেম্বর ২০২১

বিশ্বের সেরা শিল্পোন্নত দেশের তালিকায় থাকা সত্ত্বেও জার্মানির ইন্টারনেট সংযোগের বেহাল অবস্থা সত্যি অবিশ্বাস্য৷ ঠিক সময়ে ফাইবার অপটিক্সের ব্যবহারের সিদ্ধান্ত না নেওয়ায় দেশটি এক ধাক্কায় অনেক পিছিয়ে পড়েছে৷

https://p.dw.com/p/3zsp3
ছবি: Reuters

জার্মানিতে ইন্টারনেটের এ কী দশা!আন্তর্জাতিক মানদণ্ডের তুলনায় পরিষেবার অবস্থা খুবই বেহাল৷ সর্বোচ্চ ডাউনলোডের গতির নিরিখে অন্য অনেক দেশ জার্মানির থেকে অনেক এগিয়ে রয়েছে৷ জার্মানি কোনোরকমে খোঁড়াতে খোঁড়াতে ৩৫তম স্থানে পৌঁছেছে৷

কিন্তু কেন? সেটা জানতে কিছুটা ফিরে দেখতে হবে৷ ১৯৮০-র দশকের প্রথম দিকে তৎকালীন পশ্চিম জার্মানির চ্যান্সেলর ছিলেন হেলমুট স্মিট৷ ১৯৮১ সালের এপ্রিল মাসে তিনি এক ঘোষণা করেছিলেন৷ তিনি বলেছিলেন, প্রযুক্তিগত প্রয়োজন মেটানো গেলেই জার্মান ফেডারেল ডাক বিভাগ সমন্বিত ব্রডব্যান্ড ফাইবার অপটিক নেটওয়ার্ক গড়ার কাজ শুরু করবে৷

সেটা ছিল ৪০ বছর আগের ঘোষণা৷ স্মিটের পরিকল্পনা বাস্তবায়িত হলে আজ জার্মানিতে বিশ্বের সবচেয়ে উন্নত ফাইবার অপটিক নেটওয়ার্ক থাকতো৷ কিন্তু তার বদলে এমন নেটওয়ার্কের খণ্ডচিত্র দেখা যাচ্ছে মাত্র৷ দশ শতাংশেরও কম বাড়িঘরে সেকেন্ডে ৫০ মেগাবাইট গতির ইন্টারনেট সংযোগ রয়েছে৷ শুধু মহামারির সময় নয়, স্বাভাবিক অবস্থায়ও জার্মানির আরও দ্রুতগতিসম্পন্ন ইন্টারনেট প্রয়োজন৷ জার্মানি না হাইটেক রাষ্ট্র!

অদূর ভবিষ্যতে জার্মানির হাইওয়ের উপর চালকবিহীন গাড়ি চলার কথা৷ স্যাটেলাইট ট্র্যাকটরের মতো কৃষিকাজে ব্যবহৃত যান নিয়ন্ত্রণ করবে৷

জার্মানির ইন্টারনেট সংযোগের বেহাল দশার কারণ

ভারচুয়াল রিয়ালিটি এসে গেছে৷ অগমেন্টেড রিয়ালিটি প্রযুক্তিও আসতে চলেছে৷ অথচ সর্বত্র হাইস্পিড ইন্টেরনেট ছাড়া সেগুলির প্রয়োগ সম্ভব নয়৷ কিন্তু জার্মানিতে এমন বেহাল অবস্থার কারণ কী? সেটা জানতে আবার ১৯৮০-র দশকে ফিরে যেতে হবে৷

১৯৮২ সালের অক্টোবর মাসে হেলমুট কোলের নেতৃত্বে এক সরকার তৎকালীন পশ্চিম জার্মানির হাল ধরেছিল৷ কোল ফাইবার অপটিকের পরিকল্পনা ত্যাগ করে জার্মানিতে প্রচলিত তামার তারের উপর নির্ভর করার সিদ্ধান্ত নেন৷ তামার তারের মূল্য কম৷ তাছাড়া জার্মানির সব বাড়িঘরে টেলিভিশন পৌঁছে দেবার জন্য সেই তারই যথেষ্ট৷ সেই সিদ্ধান্তের পরিণাম আজও টের পাওয়া যাচ্ছে৷

বর্তমানে ফাইবার অপটিক সংযোগ বাড়ছে বটে, কিন্তু বাড়ির মধ্যে জংশন বক্সে পৌঁছানোর শেষ পথটুকু তামার তারের হওয়ায় ইন্টারনেটের গতি কমে যাচ্ছে৷ তথ্য প্রযুক্তি বিশেষজ্ঞ নিক ক্রিগেসকটে বলেন, ‘‘২০১৫ সাল পর্যন্ত জার্মানি ব্রডব্যান্ডের পেছনে অর্থায়ন শুরুই করেনি, আন্তর্জাতিক মানদণ্ডের তুলনায় যা বড়ই দেরিতে হয়েছে৷''

ফাইবার অপটিক লাইন আরো উন্নত ও দ্রুত বটে, কিন্তু পুরানো টেলিফোন লাইন বদলানোর কাজ ব্যয়বহুল ও সময়সাপেক্ষ৷ নিক ক্রিগেসকটের মতে. অর্থের জোগান থাকলেও টেন্ডার জারি থেকে লাইন প্রস্তুত হওয়া পর্যন্ত কমপক্ষে দুই বছর সময় লাগে৷

তাহলে কবে এই ফারাক দূর হবে? নিক ক্রিগেসকটে বলেন, ‘‘ফাইবার অপটিক্স সম্প্রসারণ করে ল্যান্ডলাইনের জন্য গিগাবিট মানের পরিষেবা দিতে ২০৩০ সাল পর্যন্ত সময় লাগবে বলে আমার ধারণা৷''

জার্মানির এমন হাল সত্যি অবিশ্বাস্য৷ ফেডারেল অর্থনীতি বিষয়ক মন্ত্রী এস্টোনিয়ার কাছে এ বিষয়ে সহায়তার কথা ভাবছেন৷ শুধু ব্যবহারকারীরাই হতাশ নন, নেটওয়ার্ক নিয়ে সমস্যা প্রতিযোগিতার বাজারে জার্মানির অবস্থানের ক্ষতি করছে৷ তবে ২০২১ সালের জানুয়ারি মাসে একটা সুখবর শোনা গেছে৷ জার্মানির সংসদ নিজস্ব দফতরের ফ্যাক্স মেশিন দূর করার সিদ্ধান্ত নিয়েছে৷

মারিয়ন হ্যুটার/এসবি