জার্মানদের বকশিশ দেওয়ার রীতি-নীতি
বকশিশ দেওয়ার রীতি প্রায় সারা বিশ্বেই প্রচলিত৷ তবে দেশ ও স্থানভেদে পার্থক্য রয়েছে৷ রেস্তোরাঁ, বিউটি পার্লার কিংবা হোটেলের মতো জায়গায় জার্মানদের বকশিশ বা ‘টিপস’ দেওয়ার কিছু নমুনা থাকছে ছবিঘরে৷
মাত্র দুই ইউরো!
জার্মান এক রাজনীতিক এক টক শো-তে বলেছিলেন, ডেলিভারি সার্ভিসের কর্মী বাড়িতে পিৎজা নিয়ে এলে তাঁকে তিনি মাত্র দুই ইউরো বকশিশ দিয়ে থাকেন৷ যদিও স্বাভাবিক নিয়মে খাবারের দামের শতকরা ১০ ভাগ বকশিশ দেওয়ার কথা৷
রেস্তোরাঁর ওয়েটার
বকশিশ বলতে সাধারণত প্রথমেই ওয়েটারদের কথা আসে৷ হ্যাঁ, সেখানে বিলের শতকরা ১০ ভাগ দেওয়ার নিয়ম৷ তবে ওয়েটারের ব্যবহার বেশি বন্ধুসুলভ হলে কেউ কেউ বেশিও দিয়ে থাকেন৷
সাইকো ট্রিকস
রেস্তোরাঁয় বেশি টিপস পাওয়ার জন্য অনেক নারী ওয়েটার বিলের সাথে লজেন্স দিয়ে থাকেন কিংবা কেউ কেউ আবার বিলের ওপর স্মাইলি এঁকে দেন৷ এতে কাজও হয়, অর্থাৎ পুরুষদের কাছ থেকে শতকরা পাঁচভাগ বেশি টিপস পান তাঁরা৷ এক সমীক্ষা থেকে এই তথ্য জানা যায়৷
খাবার ভালো না হলেও বকশিশ?
খারাপ খাবারের জন্য কিন্তু ওয়েটার দায়ী নন৷ তাছাড়া তাঁদের আয় যেহেতু বেশি নয়, তাই ওয়েটারকে তাঁর পাওনা থেকে বঞ্চিত করা হয়ত ঠিক নয়৷ তবে ওয়েটারকে সমস্যাটি ভালো করে জানিয়ে দেওয়া উচিত, যাতে রেস্তোরাঁর মালিক এবং পাচক বিষয়টি জানতে পারেন৷
হোটেল টিপস
হোটেলে রাত প্রতি দুই ইউরো, তবে শুধু এক রাত থাকলে পাঁচ ইউরো দেওয়া উচিত৷ ইউরোপীয় টুরিস্ট বীমা কোম্পানির গ্রাহক সেবার প্রধান বির্গিট ড্রেয়ার তা মনে করেন৷ বকশিশের পরিমাণ নির্ভর করে হোটেল ক্যাটাগরি এবং রুম সার্ভিসের ওপর৷ তবে টিপস টেবিল বা বিছানায় না রেখে সরাসরি দেওয়াই ভালো৷
সেবিকাদের কপাল মন্দ!
জার্মানির হাসপাতালে কোনো একজন নার্স বা সেবিকাকে সাধারণত আলাদাভাবে বকশিশ দেওয়া হয় না৷ রোগী সুস্থ হয়ে বাড়ি যাওয়ার সময় সকল সেবিকার জন্য কাউন্টারে রাখা ‘কফি তহবিল’ বা কাঁচের ব্যাংকে ইচ্ছেমতো ছোট বা বড় নোট ঢুকিয়ে দেন৷ তবে অনেকে কিন্তু সেবিকাকে আলাদাভাবে চকলেটও দিয়ে থাকেন৷
ট্যাক্সি চালক
ট্যাক্সি চালকদের জন্য ধরাবাঁধা নিয়ম নেই৷ তবে কেউ কেউ রাতে ট্যাক্সি চালককে স্বাভাবিকের চেয়ে একটু বেশিই দিয়ে থাকেন৷ ছুটি কাটাতে বিমানবন্দরে নিয়ে গেলেও অনেক চালকের ভাগ্যে একটু বেশি বকশিশ জোটে৷ ট্যাক্সি চালকের আর্থিক অবস্থার কারণে খানিকটা সহানুভূতি থেকেই নাকি জার্মানরা একটু বাড়তি টাকা দিয়ে থাকেন৷
পার্লার কর্মী
সাধারণত পার্লার কর্মীকে পাঁচ ইউরো দেওয়া হয়৷ তবে কর্মীর সাথে ব্যক্তিগত বন্ধুত্ব থাকলে বকশিশ বা টিপস দেওয়া কিছুটা সমস্যার৷ সেক্ষেত্রে জার্মান এক মনস্তত্ত্ববিদের পরামর্শ, এরকম পরিস্থিতিতে বকশিশটা পকেটে গুঁজে দিয়ে বলুন, ‘‘তুমি না নিলে তোমার ছেলে বা মেয়েকে দিও...৷’’
বকশিশ দেওয়ার প্রচলন যেভাবে শুরু
শোনা যায়, ষোড়শ শতকে ইংল্যান্ডে বকশিশ প্রথা শুরু হয়৷ ইংল্যান্ডে হোটেলে রাত কাটানো অতিথিরা মূলত কাজে সন্তুষ্ট হয়ে কিংবা অতিরিক্ত সেবা পেতে কর্মীদের কিছু টাকা দিয়ে যেতেন৷ এভাবেই সারা বিশ্বে বকশিশ দেওয়ার প্রচলন ছড়িয়ে পড়ে৷