জর্জিয়ায় যেভাবে চলছে বিক্ষোভ
গত সপ্তাহে জর্জিয়ার সরকার ইউরোপিয়ান ইউনিয়নের সঙ্গে আলোচনা স্থগিত করার পর দেশটির বিভিন্ন শহরে শুরু হয় বিক্ষোভ৷ বিক্ষোভকারীরা মনে করছেন, সরকারের উপর প্রভাব বিস্তার করছে রাশিয়া৷
আলোচনা স্থগিত
পূর্ব ইউরোপের দেশ জর্জিয়ার প্রধানমন্ত্রী ইরাকলি কোবাখিদজে গত বৃহস্পতিবার জানান, তার দেশ ইউরোপীয় ইউনিয়ন (ইইউ)-র সদস্য হওয়ার আলোচনা ২০২৮ সাল পর্যন্ত স্থগিত করছে৷ তার আগে অনিয়মের অভিযোগ তুলে গত অক্টোবরে অনুষ্ঠিত দেশটির জাতীয় নির্বাচনের ফলাফল প্রত্যাখ্যান করে ইইউ৷
বিক্ষোভের শুরু
সরকার প্রধানের এমন ঘোষণার পর শুরু হয় বিক্ষোভ৷ রাজধানী তিবিলিসিসে বৃহস্পতিবার রাস্তায় নেমে আসে ইউরোপপন্থিরা৷ এরপর গত কয়েকদিনে দেশের বেশ কয়েকটি শহরে বিক্ষোভ ছড়িয়ে পড়ে৷ উল্লেখ্য, জর্জিয়ার ৮০ শতাংশ মানুষ ইইউর সদস্য হতে আগ্রহী বলে এক জরিপে দেখা গেছে৷
রাস্তায় হাজারো মানুষ
রাজধানী তিবলিসিসসহ বিভিন্ন শহরে সরকারের সিদ্ধান্তের প্রতিবাদে রাস্তায় নেমে আসে হাজার হাজার মানুষ৷ ইইউ এবং জর্জিয়ার পতাকা হাতে নিয়ে বিক্ষোভ প্রদর্শন করে প্রতিবাদকারীরা৷
দিন-রাত বিক্ষোভ
গত বৃহস্পতিবার সরকারের সিদ্ধান্তের পর শুরু হওয়া বিক্ষোভ যেন থামছেই না৷ টানা পাঁচ দিন ধরে চলতে থাকে বিক্ষোভ৷ রাতেও বিক্ষোভকারীরা বিভিন্ন সড়কে অবস্থান নিয়ে বিক্ষোভ চালিয়ে যাচ্ছেন৷
পটকা ফুটিয়ে প্রতিবাদ
দেশটির বিভিন্ন শহরের বিক্ষোভকারীরা পটকা ফুটিয়ে সরকারের সিদ্ধান্তের প্রতিবাদ জানান৷ বিক্ষোভ চলাকালে প্রতিবাদকারীদের অনেকে পুলিশের দিকে ডিম ছুঁড়ে মারেন৷ মিছিলে ক্রমাগত হুইসেল ও ভুভুজেলা বাজাচ্ছিলেন বিক্ষোভকারীরা৷
পুলিশকে লক্ষ্য করে পটকা
বিক্ষোভ সামলাতে বিভিন্ন শহরে পুলিশ মোতায়েন করে সরকার৷ এ সময় পুলিশকে লক্ষ্য করে পটকা ছুঁড়ে মারেন অনেক বিক্ষোভকারী৷
প্রতিবাদে নারীরা
ইউরোপীয় ইউনিয়নে যোগদানের দাবি নিয়ে রাস্তায় নেমে আসেন নারীরাও৷ জর্জিয়া এবং ইইউর পতাকা হাতে সরকারের সিদ্ধান্তের প্রতাবাদে শামিল হন তারা৷
পুলিশের লাঠি চার্জ
বিক্ষোভকারীদের ঠেকাতে লাঠিচার্জ করে পুলিশ৷ তাছাড়া জলকামানও ব্যবহার করে আইন-শৃঙ্খলা বাহিনী৷ পুলিশের বিরুদ্ধে সহিংসতার অভিযোগ এনেছেন অনেকে৷
আহতদের সংখ্যা বাড়ছে
পুলিশের সাথে বিক্ষোভকারীদের সংঘর্ষে বাড়ছে আহতের সংখ্যা৷ জর্জিয়া সরকারের বরাত দিয়ে বার্তা সংস্থা রয়টার্স জানায়, বিক্ষোভ শুরুর পর থেকে এ পর্যন্ত মোট ১১৩জন আহত হয়েছেন৷ এদিকে এএফপির এক খবরে বলা হয়, রোববার রাতে রাজধানী তিবিলিসিসে পুলিশের সাথে সংঘর্ষে অন্তত ২৬ জন আহত হয়েছেন৷
আটক দুই শতাধিক
প্রথম পাঁচ দিনের বিক্ষোভে দুই শতাধিক ব্যক্তিকে আটক করা হয়েছে৷ সরকার বলছে, এখন পর্যন্ত ২২৪ জনকে আটক করা হয়েছে৷
‘জর্জিয়ার সদস্যপদকে স্বাগত জানাবে জার্মানি’
জার্মান সরকার জানায়, জর্জিয়ার জনগণ যদি চায়, তাহলে জার্মানি দেশটির ইইউর সদস্যপদ পাওয়ার বিষয়টিকে স্বাগত জানাবে৷ সোমবার দেশটির পররাষ্ট্র মন্ত্রানলয়ের মুখপাত্র সেবাস্টিয়ান ফিশার জানান, ব্যাপক বিক্ষোভ দেখে পরিষ্কার বোঝা যাচ্ছে, জর্জিয়ার জনগণ ভবিষ্যতে ইউরোপের সাথে থাকতে চায়৷