1. কন্টেন্টে যান
  2. মূল মেন্যুতে যান
  3. আরো ডয়চে ভেলে সাইটে যান
পশ্চিমবঙ্গের একটি চা বাগান
ছবি: DW/Prabhakar

চা করে চাকর, পান করেন...

অরুণ শঙ্কর চৌধুরী
১৯ এপ্রিল ২০১৬

চা এমন একটি পানীয়, ইউরোপীয়রা গোড়া থেকেই যার ভক্ত৷ যে কারণে চা-বাগান আসামেই হোক আর সিলেটেই হোক, চা ব্যবসায় ব্রিটিশ কোম্পানি আর ব্রিটিশ ব্র্যান্ডগুলি আজও ‘সব মাথা ছাড়িয়ে'৷

https://p.dw.com/p/1IXXC

খ্রিষ্টজন্মের প্রায় ২,৭০০ বছর আগে চা আবিষ্কৃত হয়, অর্থাৎ মানুষ চা খেতে শেখে৷ কোন না কম সাড়ে চার হাজার বছর ধরে চা খাচ্ছে মানবজাতি৷ কিন্তু ভারতের ইতিহাসে ভাস্কো ডা গামার আগমন যা, অ্যামেরিকার ইতিহাসে কলম্বাসের আগমন যা, চায়ের ইতিহাসে ১৬১০ সালটা সেইরকম; সে বছর ওলন্দাজরা চা নিয়ে আসে ইউরোপে, শুরু হয় এই চা-বিহীন মহাদেশে চায়ের জয়যাত্রা৷

চায়ের ইতিহাসে সেরকম আরেকটা বছর ছিল ১৯০৮, যখন প্রথম টি-ব্যাগ আবিষ্কৃত হয়, এবার কিন্তু মার্কিন মুলুকে৷ নিউ ইয়র্কের এক চা ব্যবসায়ী, নাম থমাস সালিভান, তাঁর গ্রাহকদের ছোট ছোট সিল্কের ব্যাগে করে চা-এর নমুনা পাঠাচ্ছিলেন৷ ততদিনে ইনফিউসন-এর দিন শুরু হয়ে গেছে: গ্রাহকরা ভাবেন, এ-ও বোধহয় সেরকম কিছু হবে; সিল্কের ব্যাগ সুদ্ধু চা পাতা গরম জলে দিয়ে ফেলেন৷ অপরদিকে সালিভানকে লেখেন, ব্যাগের বুনোটটা বড় আঁট৷ কাজেই সালিভান সিল্কের বদলে মেডিক্যাল গজ দিয়ে নতুন স্যাচেট তৈরি করে চায়ের নমুনা পাঠাতে শুরু করেন৷ শুরু হয় টি-ব্যাগের জয়যাত্রা৷

মজার কথা, ব্রিটেনে ঠিকমতো টি-ব্যাগের চল শুরু হয় কিন্তু দ্বিতীয় বিশ্বযুদ্ধের পর, ১৯৫৩ সালে৷ টেটলে কোম্পানি ফ্যাশনটা চালু করে, পরে অন্য কোম্পানিরা তা-তে যোগ দেয়৷ তার ফল: ষাটের দশকের গোড়ায় ব্রিটেনের চায়ের বাজারে টি-ব্যাগের ভাগ ছিল মাত্র তিন শতাংশ; ২০০৭ সালে তা হয়ে দাঁড়িয়েছে ৯৬ শতাংশ! বাজার মাত করা আর কা-কে বলে৷

টি-ব্যাগের কথা তুললাম, কেননা টি-ব্যাগের পিছনে চা শিল্প ও ব্যবসায়ের কতগুলি রহস্য লুকিয়ে আছে৷ চা পাতার কোয়ালিটি অনুযায়ী তার গ্রেড – এবং দাম – নির্ধারিত হয়৷ গোটা পাতা থেকে চায়ের গুঁড়ো; অরেঞ্জ পিকো, ব্রোকেন অরেঞ্জ পিকো থেকে ফ্যানিংস হয়ে ডাস্ট, অর্থাৎ গুঁড়ো চা৷ টি-ব্যাগে ঢোকে প্রধানত সেই সস্তার গুঁড়ো চায়ের ব্লেন্ড, যা মেশানোর জন্য বিশাল মাইনের টি-টেস্টাররা বসে আছেন৷

টি-ব্যাগ দুনিয়া জয় করার মানে সবচেয়ে নিকৃষ্ট মানের চা দুনিয়া জয় করেছে৷ পশ্চিমে টি-ব্যাগের ব্যবহার এখন সর্বত্র; সময়ের অভাবে ইউরোপ-অ্যামেরিকায় টি-ব্যাগ আজ লাইফস্টাইলও বটে৷ ওদিকে উপমহাদেশের মানুষরাও গুঁড়ো চা পছন্দ করেন, তা-তে কড়া লিকার হয় বলে৷ ফলে রুচি ও রেস্ত-সম্পন্নদের পছন্দসই লিফ টি এখন আর চায়ের নীলামে স্পটলাইট জুড়ে থাকে না৷

অরুণ শঙ্কর চৌধুরীর ছবি
অরুণ শঙ্কর চৌধুরী, ডয়চে ভেলেছবি: DW/P. Henriksen

হয়ত সে কারণেই কলকাতার নীলামে চা-পাতার দাম ২০১৫ সালের অক্টোবর থেকে ২০১৬ সালের মার্চ, এই ছ'মাসে কিলো প্রতি চার-পাঁচ টাকা বাড়াতেই ভারতে আনন্দের ধুম পড়ে যায়৷ অথচ ইংল্যান্ডে ৮০টি টি-ব্যাগ – যা-তে ২৫০ গ্রাম চা থাকে – তার দাম ১৯৯৯ সালে ছিল এক পাউন্ড ৮৯ পেন্স; তা ২০১৬ সালের ফেব্রুয়ারি মাসে বেড়ে দাঁড়িয়েছে এক পাউন্ড ৯৭ পেন্সে – অর্থাৎ নামমাত্র বেড়েছে৷ যদিও ব্রিটেনের মানুষ দিনে প্রায় সাড়ে ১৬ কোটি কাপ করে চা খেয়ে থাকেন৷

২০১৪-১৫ সালে ভারতে এক কিলো চা-পাতার দাম ছিল ১২৫ টাকার কিছু বেশি৷

সেই সময় ব্রিটেনের পিজি টিপস টি-ব্যাগের চা-পাতা কিলো হিসেবে বিক্রি করলে তার দাম হতো কিলো প্রতি ৭৪৪ টাকা – যদিও তা সস্তার গুঁড়ো চা৷

কথায় বলে না? চায়ের আমি, চায়ের তুমি, দাম দিয়ে যায় চেনা...

তাই কি? জানান আপনার মন্তব্য, নীচের ঘরে৷

স্কিপ নেক্সট সেকশন এই বিষয়ে আরো তথ্য

এই বিষয়ে আরো তথ্য

স্কিপ নেক্সট সেকশন ডয়চে ভেলের শীর্ষ সংবাদ

ডয়চে ভেলের শীর্ষ সংবাদ

টোকিওতে প্রধানমন্ত্রীর সরকারি বাসভবনে ওলাফ শলৎস ও জাপানের প্রধানমন্ত্রী ফুমিও কিশিদা

পরিবর্তিত আবহে জার্মান চ্যান্সেলরের জাপান সফর

স্কিপ নেক্সট সেকশন ডয়চে ভেলে থেকে আরো সংবাদ
প্রথম পাতায় যান