1. কন্টেন্টে যান
  2. মূল মেন্যুতে যান
  3. আরো ডয়চে ভেলে সাইটে যান

গত বছর সারা বিশ্বে প্রাণ দিয়েছেন ১১০ সাংবাদিক

১২ ফেব্রুয়ারি ২০১০

পেশাগত দায়িত্ব পালন সহ নানা কারণে গত বছর সারা বিশ্বে ১১০ জন সাংবাদিক প্রাণ হারিয়েছেন৷ গত এক দশকে এই সংখ্যা সবচেয়ে বেশি৷

https://p.dw.com/p/LzK5
ব্রিটিশ সাংবাদিক জেমস ম্যুলার, ২০০৩ সালে ইসরায়েলি ট্যাঙ্কের গোলার আঘাতে প্রাণ দেন তিনিছবি: AP

ঝুঁকি থাকবেই, তবু থামবে না তথ্য সংগ্রহ

বিশ্বের অন্যান্য পেশার চেয়ে সাংবাদিকতার অবস্থান বোধ হয় এজন্যই আলাদা কারণ প্রত্যেক সাংবাদিককেই তাঁর পেশাগত জীবনের কোন না কোন সময় প্রাণের ঝুঁকি নিতে হয়৷ সেটা যে দেশেই হোক না কেন৷ হোক না দেশটি যুদ্ধে আক্রান্ত, কিংবা যুদ্ধ অতিক্রান্ত৷ পেশাগত কারণেই সাংবাদিকদের বেশিরভাগ সময় ক্ষমতাধর ব্যক্তিদের বিপরীত মেরুতে অবস্থান করতে হয়৷ তাই শারীরিক ও আর্থিক দন্ডের পাশাপাশি অনেক সময় জীবন দিয়ে তার মাসুল গুনতে হয় বর্তমান বিশ্বের অন্যতম এই আধুনিক পেশাজীবীদের৷ তারপরও সাংবাদিকরা থামেন না, থেমে নেই তথ্য সংগ্রহে তাদের অবিরাম প্রচেষ্টা৷

এক দশকে সর্বোচ্চ প্রাণহানি

আন্তর্জাতিক প্রেস ইন্সটিটিউট বা আইপিআই প্রতি বছরের মত এবছরও গণমাধ্যমের স্বাধীনতা বিষয়ক পর্যালোচনা প্রতিবেদন প্রকাশ করেছে৷ এবং এতে উঠে এসেছে সাংবাদিকদের ওপর নির্যাতনের বিভিন্ন চিত্র৷ তবে যেটি সবচেয়ে আশংকাজনক সেটি হলো পেশাগত দায়িত্ব পালনকালে সাংবাদিকদের প্রাণহানির বিষয়টি৷

Journalisten an der syrisch-irakischen Grenze
ঝুকিপূর্ণ সীমান্ত এলাকাতে কাজ করছেন দুই ভিডিও সাংবাদিকছবি: AP

গত বছর সারা বিশ্বের দেশে দেশে মোট ১১০ জন সাংবাদিক তাদের জীবন বিলিয়ে দিয়েছেন তথ্য সংগ্রহের দায়িত্ব পালনকালে৷ এর মধ্যে সবচেয়ে ভয়াবহ ঘটনাটি ঘটে ফিলিপাইন৷ গত নভেম্বরে সন্ত্রাসীদের হামলায় একসঙ্গে ৩২ জন সাংবাদিক নিহত হন৷ এই কারণে বিদায়ী বছরে এশিয়াতে নিহত সাংবাদিকের সংখ্যাও হঠাৎ করে আকাশচুম্বী হয়ে গেছে, মোট ৫৫ জন৷ এরপর রয়েছে ল্যাটিন আমেরিকা যেখানে নিহত সাংবাদিকের সংখ্যা ২৮ জন৷ আফ্রিকায় প্রাণ হারিয়েছেন ১৪ জন সাংবাদিক৷ মধ্যপ্রাচ্যে নিহত সাংবাদিকের ছয়জনের মধ্যে চারজনই ইরাকে প্রাণ হারিয়েছেন৷ এছাড়া ইউরোপে নিহত সাংবাদিকের সংখ্যা সাত জন যার মধ্যে কেবল রাশিয়াতেই পাঁচ জন৷

নির্যাতনের শীর্ষে ইরান

আগেই বলেছি, জীবনের ঝুঁকির পাশাপাশি নানা ধরণের নির্যাতনের মুখোমুখিও হয়ে থাকেন সাংবাদিকরা৷ বিগত বছরেও তার ব্যতিক্রম ঘটেনি৷ এক্ষেত্রে সবার আগে রয়েছেন ইরানের সাংবাদিকরা৷ বিগত জুন মাসে প্রশ্নবদ্ধ প্রেসিডেন্ট নির্বাচনের পর এখন পর্যন্ত শতাধিক সাংবাদিক কারান্তরীণ হয়েছেন সরকারের রোষানলে পড়ে৷ এবং এখনও অনেক সাংবাদিক জেল খাটছেন বলে জানিয়েছে আন্তর্জাতিক প্রেস ইন্সটিটিউট৷

Global Media Forum - Noha Atef, journalist and blogger
ডয়চে ভেলের গ্লোবাল মিডিয়া ফোরামে অংশ নেন সাংবাদিক ও ব্লগার নোহা আতেফছবি: DW/K. Danetzki

এছাড়া দেশটিতে সংবাদ মাধ্যমের ওপর অতিরিক্ত কড়াকড়ি আরোপেরও সমালোচনা করেছে আইপিআই৷ তবে সাংবাদিকদের জন্য বিশ্বে সবচেয়ে বিপজ্জনক দেশ হিসেবে পরিচিত হয়েছে ফিলিপাইন৷ এরপর রয়েছে মেক্সিকো যেখানে ১১ জন সাংবাদিক প্রাণ হারিয়েছেন এবং সোমালিয়া যেখানে প্রাণ হারিয়েছেন নয়জন সাংবাদিক৷

সাংবাদিকদের পেশাগত ঝুঁকি বাড়ছে

দেখা যাচ্ছে, গোটা বিশ্বে সাংবাদিকদের পেশাগত ঝুঁকি ক্রমাগত বাড়ছে৷ গণমাধ্যমের স্বাধীনতার পক্ষে ক্ষমতাসীনরা যত কথাই বলুন না কেন কার্যত তার উল্টোটাই ঘটছে৷ সংবাদ মাধ্যম ও সাংবাদিকদের অনুগত রাখার জন্য প্রয়োজনে তারা নির্মম হতে কসুর করছে না৷ সেদিকে লক্ষ্য রেখে আইপিআই রিভিউ প্রতিবেদনের সম্পাদক এ্যান্থনি মিলস বলেন, মিলেনিয়াম অর্জনে বর্তমান বিশ্ব এগিয়ে থাকলেও, পেশাগত কারণে সাংবাদিকদের খুন করার প্রশ্নটি যখন এসে যায় তখন মনে হয় আমরা এখনও সেই বর্বরতার যুগেই বাস করছি৷

প্রতিবেদক: রিয়াজুল ইসলাম, সম্পাদনা: সাগর সরওয়ার