1. কন্টেন্টে যান
  2. মূল মেন্যুতে যান
  3. আরো ডয়চে ভেলে সাইটে যান

খাঁটি বোলোনেজ খেতে হলে বোলোনিয়া যেতে হয়

২৩ ফেব্রুয়ারি ২০২৪

অনেক জনপ্রিয় খাদ্যই বিশ্বের বিভিন্ন প্রান্তে মূল ‘রূপ' থেকে ভিন্ন৷ স্প্যাগেটি বোলোনেজও ব্যতিক্রম নয়৷

https://p.dw.com/p/4cmqQ
বলোনিয়ার বাণিজ্য চেম্বারে স্প্যাগেটি বোলোনেজ তৈরির প্রক্রিয়া নথিভুক্ত রয়েছে
স্প্যাগেটি বোলোনেজ৷ ফাইল ফটো ছবি: Colourbox

বোলোনিয়া শহরে কিন্তু কড়া নিয়ম মেনে সেই পদ রান্না করা হয়৷ সেখানকার বাণিজ্য চেম্বারে গোটা প্রক্রিয়া নথিভুক্ত রয়েছে৷

রাগু আলা বোলোনেজে – ইটালির এই কিমার সস গোটা বিশ্বে পরিচিত৷ মার্কিন যুক্তরাষ্ট্র, ব্রিটেন ও জার্মানির মতো অনেক দেশে স্প্যাগেটির সঙ্গে সেই সস মিশিয়ে পরিবেশন করা হয়৷

ইটালির বোলোনিয়া শহর সেই সসের উৎস৷ সে কারণেই বোলোনেজে নাম রাখা হয়েছে৷ সেখানেও কি স্প্যাগেটির সঙ্গে সেই সস খাওয়া হয়? শহরের বাসিন্দারা মোটেই এমন ‘অনাচার’ বরদাস্ত করেন না৷

কীভাবে সেই খাঁটি তালিয়াতেলে আল রাগু বোলোনেজে তৈরি করা হয়, সেটা জানতে ঐতিহ্যবাহী এক রেস্তোরাঁয় যেতে হবে৷ ইটালির রাঁধুনী অ্যাকাডেমি রাগু বোলোনেজ খাবার জন্য সেই রেস্তোরাঁয় যাওয়ার পরামর্শ দেয়৷ সেখানকার রাঁধুনী হিসেবে সালভাতোরে আস্তারিতা এমনকি কিমা নিয়ে তৈরি তাঁর শিল্পকীর্তির দৌলতে এক পুরস্কারও জিতেছেন৷ তিনি বলেন, ‘‘রাগু বরাবর আমার জীবনের অংশ৷ বোলোনিয়ার বেশিরভাগ নারীর মতো আমার মাও প্রতি রোববার তালিয়াতেলে আল রাগু রান্না করতেন৷ মায়ের স্তনের দুধের পর বেশিরভাগ শিশুই এখানে প্রথম শক্ত খাবার হিসেবে মাংসের রাগু খায়৷’’

বিখ্যাত এই নুডেল সসের রন্ধন প্রণালী বোলোনিয়ার মানুষের জন্য অত্যন্ত গুরুত্বপূর্ণ৷ এমনকি সেই রেসিপি প্রায় পেটেন্ট বা সত্তের মতো স্থানীয় বাণিজ্য চেম্বারে রাখা আছে৷ অষ্টাদশ শতাব্দীর শেষে বোলোনিয়ার কাছে কোনো জায়গায় সেই রাগু উদ্ভাবন করা হয় বলে ধরে নেওয়া হয়৷ বাণিজ্য চেম্বারের প্রধান জান্দা গ্রান্দি মনে করেন, ‘‘এর ফলে মূল রন্ধনপ্রণালী কিছুটা সরকারি স্বীকৃতি পাচ্ছে৷ আমাদের অঞ্চলের সংস্কৃতি ও রন্ধনশিল্পের ঐতিহ্যের সুরক্ষার লক্ষ্যে এমন আরো রেসিপি এখানে রাখা আছে৷’’

ইটালির এক শহরে স্প্যাগেটি বোলোনেজের বিশেষ স্বাদ

সেই রান্নায় তেল, পিঁয়াজ, সেলারি, গাজর, বেলি ফ্যাট, ওয়াইন, শুকর ও গরুর মাংস, টমোটো সস এবং টমেটো পেস্ট ব্যবহারের অনুমতি রয়েছে৷ সেগুলিই রান্নার মৌলিক উপকরণ৷ সব কিছু সমান আকারে কেটে নেওয়া হয় অথবা কিমার মতো মিহি করা হয়৷ বাকি প্রক্রিয়া সম্পর্কে সালভাতোরে আস্তারিতা বলেন, ‘‘প্রখমে সবজিগুলি কম গরম তেলে অল্প নেড়ে নিতে হয়৷ তারপর বেলি ফ্যাট মচমচে করে ভাজতে হয়৷ তবে পুড়ে গেলে চলবে না৷ তাতে হোয়াইট ওয়াইন ঢালতে হয়৷ ওয়াইন বাষ্পীভূত হলে প্রথমে শুকরের মাংস, তারপর গরুর মাংসের কিমা যোগ করতে হয়৷ এবার এতে এতে টমেটো সস ও টমেটো পেস্ট যোগ করার পালা৷ শেষে লবণ দিয়ে চেখে দেখতে হয়৷ তারপর অতি অল্প আঁচে তিন থেকে চার ঘণ্টা রান্না করতে হবে৷ ভালো জিনিসের জন্য সময় দিতে হবে৷ ঝোল যেন বেশি তরল না হয়, একটু মাখামাখা হতে হবে৷ চর্বি ও তেল আলাদা হয়ে যাবে৷ আসলে রন্ধন প্রণালী খুবই সহজ৷ তবে সেরা মানের উপকরণ ব্যবহার করা জরুরি৷ ধৈর্য্যই হলো আসল রহস্য৷’’

কিন্তু স্প্যাগেটির সঙ্গে কেন সেটা খাওয়া যাবে না? সালভাতোরে আস্তারিতা মনে করেন, ‘‘স্প্যাগেটি এমন এক নুডেল, যা এই ঝোলের সঙ্গে ঠিকমতো মেশে না৷ ফলে সেটি বোলোনেজের জন্য উপযুক্ত নয়৷’’

অর্থাৎ তালিয়াতেলে না হলে চলবে না৷ সালভাতোরে নিজেই সেই নুডেল তৈরি করতে ভালোবাসেন৷ পাতলা ময়দার তাল দিয়ে তিনি চ্যাপটা ও লম্বা ডিমের নুডেল বানান৷ সেই পাস্তার বৈশিষ্ট্যও সোনালি তালিয়াতেলার রূপে বোলোনিয়া শহরের বাণিজ্য চেম্বারে গচ্ছিত রয়েছে৷ সালভাতোরে বলেন, ‘‘এবার আমরা রাগুর সঙ্গে খাঁটি তালিয়াতেলা তৈরি করছি৷ হাতে তৈরি এগ নুডেলের উপরিভাগ একটু রুক্ষ৷ সে কারণে সেটি ঝোলের সব সুগন্ধ টেনে নেয়৷ প্রতিবার মুখে দিলেই সম্পূর্ণ স্বাদ পাওয়া যায়৷’’

বালারিনি রেস্তোরাঁর সবচেয়ে জনপ্রিয় পদই হলো তালিয়াতেলে আল রাগু৷ দুপুর হোক বা সন্ধ্যা, সবাই সেটাই খেতে চায়৷ বোলোনিয়ার মানুষের এই পদে কোনো অরুচি নেই৷

সুসানে গেসনার, মিশায়েল কাডেরাইট/এসবি