কোরআন পোড়ানোর ঘটনায় সুইডেনে বিচার শুরুর প্রক্রিয়া
২৯ আগস্ট ২০২৪২০২৩ সালে কোরআন পোড়ানোর ঘটনায় দুই ব্যক্তিকে জাতিগত ঘৃণা উস্কানির দায়ে বুধবার অভিযুক্ত করেছেন সুইডেনের কৌঁসুলিরা৷
সুইডিশ প্রসিকিউশন অথরিটি এক বিবৃতিতে বলেছে, ঐ দুই ব্যক্তি ‘একটি জাতি বা জাতীয় গোষ্ঠীকে ক্ষুব্ধ করে তোলার অপরাধ’ করেছেন ৷ স্টকহোমে মসজিদের বাইরে এবং অন্য স্থানে চারটি আলাদা ঘটনায় জনসমক্ষে ইসলামের পবিত্র ধর্মগ্রন্থ কোরআন পুড়িয়েছেন তারা৷
এসব ঘটনার প্রেক্ষিতে সুইডেনের অভ্যন্তরীণ নিরাপত্তা সংস্থাগুলো সন্ত্রাসী হামলার সতর্কতার মাত্রা বাড়ায়৷ প্রতিবেশী ডেনমার্কেও কোরআন পোড়ানোর প্রবণতা শুরু হয়, যা বন্ধে আইনে কাড়াকড়ি আরোপ করে সরকার৷
সুইডেনের জ্যেষ্ঠ কৌঁসুলি আনা হানকিও বিবৃতিতে বলেছেন, দুই ব্যক্তিকেই মুসলিমদের বিশ্বাসের অবমাননার উদ্দেশ্যে করা ঐ চারটি ঘটনার জন্য অভিযুক্ত করা হয়েছে৷ ঘটনার রেকর্ডকৃত ভিডিওতে দুই ব্যক্তির বিরুদ্ধে অভিযোগের মূল প্রমাণ রয়েছে বলে উল্লেখ করেছেন তিনি৷ তবে অভিযুক্তের একজন তার আইনজীবী মার্ক সাফারিয়ানের মাধ্যমে বার্তা সংস্থা রয়টার্সকে জানিয়েছেন তিনি কোনো অন্যায় করেননি৷ সাফারিয়ান জানান, তার মক্কেলের বিক্ষোভ প্রদর্শনের অধিকার সুইডেনের সংবিধানের দ্বারা সংরক্ষিত৷ তবে অন্য অভিযুক্তের আইনজীবী তাৎক্ষণিকভাবে কোনো প্রতিক্রিয়া জানাননি৷
ঐ অভিযুক্ত ইরাকের একজন শরণার্থী৷ তিনি জানিয়েছিলেন, ইসলামের প্রতিষ্ঠানের বিরুদ্ধে প্রতিবাদ এবং কোরআন যাতে নিষিদ্ধ করা হয় সেই দাবি তুলতে চেয়েছেন তিনি৷ সুইডেনের অভিবাসন সংস্থা জানিয়েছে আবেদনে মিথ্যা তথ্য দেয়ার তারা এই শরণার্থীকে ডিপোর্ট বা ফেরত পাঠানোর সিদ্ধান্ত নিয়েছিলেন৷ কিন্তু নিজ দেশে তার উপর নির্যাতনের ঝুঁকি থাকায় তা বাস্তবায়ন করা সম্ভব হবে না৷
২০২৩ সালে কোরান পোড়ানোর ঘটনায় মুসলিম প্রধান দেশগুলোতে সুইডেনের বিরুদ্ধে ক্ষোভতৈরি হয়৷ জুলাইতে বাগদাদে সুইডিশ দূতাবাসের কমপাউন্ডে আগুন জ্বালিয়ে দেন বিক্ষোভকারীরা৷ সে বছরের আগস্টে সুইডেনের গোয়েন্দা সংস্থা স্যাপো দেশটিতে হুমকির মাত্রা চার-এ উন্নীত করে, যার সর্বোচ্চ মাত্রা পাঁচ৷
চলতি মাসের শুরুতে কৌঁসুলিরা সুইডিশ-ডেনিশ বংশদ্ভূত আরেক ব্যক্তিকে ২০২২ সালে মালমো শহরে একই ধরনের অপরাধ সংঘটনের দায়ে অভিযুক্ত করেছেন৷
২০২০ সালে কোরআন পোড়ানোর আরেক ঘটনায় জাতিগত ঘৃণা উস্কে দেয়ার জন্য গত বছরের অক্টোবরে এক ব্যক্তিকে দোষী সাব্যস্ত করে সুইডিশ আদালত৷ মুসলিমদের ধর্মগ্রন্থ পোড়ানোর জন্য কারো বিরুদ্ধে দেয়া এটিই দেশটির আদালতের প্রথম কোনো রায়৷
সমালোচকদের কারো কারো মতে, বিশ্বের অন্যতম উদার দেশ সুইডেন ও ডেনমার্কে কোরআন পোড়ানোকে মত প্রকাশের স্বাধীনতা হিসেবেই দেখা উচিত৷
এফএস/এসিবি (রয়টার্স, এএফপি)