কাশ্মীরে নির্বাচনে লড়ছেন ১০ সাবেক ‘বিচ্ছিন্নতাবাদী’
১৮ সেপ্টেম্বর ২০২৪এই প্রার্থীরা কাশ্মীরের আধা-স্বায়ত্তশাসনের মর্যাদা ফিরিয়ে আনার অঙ্গীকার করেছেন৷
ভারতের কেন্দ্রীয় সরকার ২০১৯ সালে এই মর্যাদা প্রত্যাহার করে কাশ্মীরকে কেন্দ্রশাসিত অঞ্চল ঘোষণা করে৷ এরপর এই প্রথমবার কাশ্মীরে বিধানসভা নির্বাচন হচ্ছে৷
নির্বাচনে প্রার্থী হওয়া ১০ ‘বিচ্ছিন্নতাবাদী'র একজন হাফিজ মোহাম্মদ সিকান্দার মালিক৷ ৩৭ বছর বয়সি মালিক বর্তমানে জামিনে আছেন৷ যেদিন মনোনয়ন দাখিল করতে গিয়েছিলেন, সেদিনও তার পায়ের গোড়ালিতে জিপিএস ট্র্যাকার লাগানো ছিল৷
২০১৯ সালে ‘সন্ত্রাসবাদের' দায়ে তাকে কারাদণ্ড দেওয়া হয়েছিল৷ সিকান্দার মালিকসহ কয়েক ডজন ‘বিচ্ছিন্নতাবাদী'কে সেই সময় গ্রেপ্তার করা হয়েছিল৷ পরিস্থিতি নিয়ন্ত্রণে রাখতে নিরাপত্তা বাহিনীর অতিরিক্ত সদস্য পাঠানো হয়েছিল৷
সাবেক ‘বিচ্ছিন্নতাবাদী'রা বলছেন, তারা নির্বাচিত হলে জম্মু ও কাশ্মীরের আধা-স্বায়ত্তশাসন মর্যাদা ফিরিয়ে আনবেন৷ তবে ভারতের স্বরাষ্ট্রমন্ত্রী অমিত শাহ চলতি মাসেই বলেছেন, ঐ মর্যাদা ‘এখন ইতিহাস এবং কেউ এটি ফিরিয়ে আনতে পারবে না'৷
মালিক স্বতন্ত্র প্রার্থী হিসেবে নির্বাচন করছেন, কারণ তার দল জামাত-ই-ইসলামীকে ২০১৯ সালে নিষিদ্ধ করা হয়েছে৷ দলটি জঙ্গিবাদের সমর্থন করে বলে নতুন দিল্লির অভিযোগ৷
রয়টার্সকে মালিক বলেন, তার প্রধান লক্ষ্য তার দলের উপর থেকে নিষেধাজ্ঞা তুলে নেওয়ার ব্যবস্থা করা এবং বিভিন্ন অভিযোগে বন্দি করে রাখা ব্যক্তিদের মুক্ত করা৷ ‘‘অন্য দলগুলো যেহেতু এসব নিয়ে কথা বলবে না, তাই আমরা এগুলো নিয়ে কথা বলতে চাই৷ নির্বাচিত হলে মানুষের ভালোর জন্য কাজ করবো,'' রয়টার্সকে বলেন তিনি৷
কাশ্মীরের প্রধান দুটি দল হলো ন্যাশনাল কনফারেন্স ও পিপলস ডেমোক্র্যাটিক পার্টি৷ ১৯৪৭ সাল থেকে মূলত এই দুটি দলই পালা করে কাশ্মীর শাসন করে আসছে৷
দুটি দলই জম্মু ও কাশ্মীরের আধা-স্বায়ত্তশাসন মর্যাদা ফিরিয়ে আনার বিষয়ে অঙ্গীকার করেছে৷
ন্যাশনাল কনফারেন্সের নেতা ওমর আব্দুল্লাহ, যিনি তার দাদা ও বাবার মতোই জম্মু ও কাশ্মীরের মুখ্যমন্ত্রী ছিলেন, তিনি সম্প্রতি বলেছেন, ২০১৯ সালে মোদী সরকারের নেওয়া সিদ্ধান্ত বদলে কাশ্মীরের ‘নিজের পরিচয় ফিরিয়ে আনা প্রয়োজন'৷
কাশ্মীরের রাজনীতিতে মোদীর বিজেপি দলের উল্লেখযোগ্য অবস্থান নেই৷ তাই ১৯৯৬ সালের পর এবারই প্রথম ভারতের সাধারণ নির্বাচনে বিজেপি কাশ্মীরে কোনো প্রার্থী দেয়নি৷ তবে বিধানসভা নির্বাচনে ৯০ আসনের মধ্যে ৬২টিতে প্রার্থী দিয়েছে দলটি৷
কেন্দ্রে বিজেপির মূল প্রতিদ্বন্দ্বী কংগ্রেস আধা-স্বায়ত্তশাসন মর্যাদা ইস্যুতে নিশ্চুপ৷ তবে বিধানসভা নির্বাচনে তারা ন্যাশনাল কনফারেন্সের সঙ্গে জোট গঠন করেছে৷
কাশ্মীরের মূল দুই দলের বাইরে সংগঠিত হলে স্বতন্ত্র প্রার্থীরা আওয়ামী ইত্তেহাদ পার্টির সঙ্গে হাত মিলিয়েছেন৷ সাবেক ‘বিচ্ছিন্নতাবাদী' নেতা আব্দুল রশিদ শেখ এই দলের নেতা৷ গত সাধারণ নির্বাচনে তিনি হেভিওয়েট প্রার্থী কাশ্মীরের সাবেক মুখ্যমন্ত্রী ওমর আব্দুল্লাহকে হারিয়েছেন৷
আরেক সাবেক জামাত নেতা ও স্বতন্ত্র প্রার্থী সায়ার আহমাদ রেশি বলেছেন, ন্যায়বিচারের জন্য লড়ার একমাত্র উপায় নির্বাচন৷
জেডএইচ/এসিবি (রয়টার্স)