কান্ট্রি মিউজিকের ‘সেরা’ দশ!
কান্ট্রি মিউজিক বললেই মনে পড়ে ষাট-সত্তরের দশক কাঁপানো বেশ কিছু গান৷ কিন্তু সেই গানগুলোর শিল্পীদের কি চিনি আমরা? এই ছবিঘরে কান্ট্রি সংগীতের বাছাই দশ শিল্পী...
উডি গাথরি
‘কান্ট্রি মিউজিক’-এর জন্ম মার্কিন যুক্তরাষ্ট্রে, উনিশ শতকের গোড়ার দিকে হলেও চল্লিশের দশকে হলিউডের ছবিতে ব্যবহৃত হবার পর থেকে জনপ্রিয় হতে শুরু করে৷ কান্ট্রি মিউজিকের উত্থানের পেছনে গুরুত্বপূর্ণ ভূমিকা ছিল উডি গাথরির৷ ‘ওকলাহোমা কাউবয়’ নামে পরিচিত উডির গিটার ও মধুর কন্ঠ শ্রোতাদের প্রিয় হয়ে ওঠে সহজেই৷ উডি গাথরির জনপ্রিয় গানগুলি ‘দিস ল্যান্ড ইজ ইওর ল্যান্ড’, ‘প্রিটি বয় ফ্লয়েড’ ইত্যাদি৷
জনি ক্যাশ
সহজ কথা, গিটার বা ব্যাঞ্জো ও মনকাড়া সুর– এই তিন ছাড়া কান্ট্রি মিউজিক অসম্পূর্ণ৷ এই ঘরানার গানের পীঠস্থান যে অঞ্চল, সেই ন্যাশভিলের টেনেসি শহরেই জন্ম ও বেড়ে ওঠা সর্বকালের অন্যতম সেরা কান্ট্রি গায়ক জনি ক্যাশ৷ তাঁর দরাজ গলা ও অনবদ্য গিটারবাদন আজও সংগীতপ্রেমীদের কানে বাজে৷ তাঁর উল্লেখযোগ্য কয়েকটি গান হলো ‘আই ওয়াক দ্য লাইন’, ‘ফলসম প্রিজন ব্লুজ’, ‘রিঙ অফ ফায়ার’৷
জন ডেনভার
বাঙালি শ্রোতার সাথে কান্ট্রি মিউজিকের পরিচয় ঘটে জন ডেনভারের হাত ধরেই৷ ‘লিভিং অন আ জেটপ্লেন’, ‘অ্যানিস সং’, ‘সানশাইন অন মাই শোল্ডারস’-এর মতো গানকে মার্কিন যুক্তরাষ্ট্রের সীমানার বাইরে পরিচিত করার পেছনে ডেনভারের ভূমিকা অবিস্মরণীয়৷ শুধু তাই নয়, গানকে হাতিয়ার করে একাধিকবার শিল্পীর স্বাধীনতা নিয়ে লড়াই করেছেন তিনি৷
উইলি নেলসন
কান্ট্রি মিউজিকের মধ্যেও রকমফের রয়েছে৷ আরেক মার্কিন গায়ক উইলি নেলসন মূলত ‘আউটল কান্ট্রি’-তেই বেশি স্বাচ্ছন্দ্য বোধ করেন৷ প্রতিবাদী কথায় ভরা এই বিশেষ ধরনের কান্ট্রি গানগুলি জনপ্রিয় হতে শুরু করে সত্তরের দশকে, তৎকালীন ভিয়েতনাম যুদ্ধের পটভূমিতে৷ উইলির কন্ঠে পরিচিত গানগুলির কয়েকটি: ‘জর্জিয়া অন মাই মাইন্ড’, ‘অন দ্য রোড এগেইন’, ‘হুইস্কি রিভার’ ইত্যাদি৷
ডলি পার্টন
কান্ট্রি মিউজিকের ভক্ত আর ডলি পার্টনের নাম জানেন না, এ বোধহয় অসম্ভব৷ ষাটের দশকে প্রথম অ্যালবামেই ঝড় তোলা গায়িকা ডলি পার্টনকে মানুষ চেনেন তাঁর ব্যতিক্রমী কন্ঠের কারণে৷ শুধু গানেই নয়, একাধারে সংগীত পরিচালনা, টেলিভিশন শো সঞ্চালনা ও অভিনয়েও প্রশংসা কুড়িয়েছেন তিনি৷ তাঁর জনপ্রিয় গানগুলোর মধ্যে ‘জোলিন’, ‘ট্র্যাভেলিং ম্যান’, ‘নাইন টু ফাইভ’ আজও মুখে মুখে ঘোরে৷
জর্জ স্ট্রেট
‘কিং অফ কান্ট্রি’ নামে খ্যাত এই গায়কের ঝুলিতে রয়েছে গ্র্যামি, সিএমএ ও এসিএম-এর মতো পুরস্কার৷ আশির দশকে জনপ্রিয় এই কন্ঠশিল্পী অ্যামেরিকার রাজ্য টেক্সাসের মানুষের বিশেষ পছন্দের৷ বলা হয়, তাঁর এই জনপ্রিয়তার কারণেই জর্জের বেশিরভাগ গানের কথায় ঘুরেফিরে আসে টেক্সাসের কথা৷ তাঁর উল্লেখযোগ্য কয়েকটি গান হলো ‘অল মাই এক্সেস লিভ ইন টেক্সাস’, ‘দ্য চেয়ার’, ‘দ্য কাউবয় রাইডস অ্যাওয়ে’ ইত্যাদি৷
রেবা ম্যাকেন্টায়ার
ডলি পার্টনের পর যদি কোনো নারী ‘কান্ট্রি সং’ শিল্পীর নাম এক নিঃশ্বাসে উচ্চারণ করা হয়, তিনি রেবা ম্যাকেন্টায়ার৷ ডলির মতো তিনিও একাধারে গান, অভিনয় ও তাঁর টেলিভিশন ক্যারিয়ার চালিয়ে গেছেন দাপটের সাথে৷ ওকলাহোমার বাসিন্দা এই শিল্পীর পরিচিত গানগুলির অন্যতম হলো ‘ইউ লাই’, ‘ফ্যান্সি’৷
নিল ডায়মন্ড
একশ’ মিলিয়ন রেকর্ড বিক্রির সম্মান সহজে কোনো শিল্পীর কপালে জোটে না৷ কিন্তু এই অসাধ্য সাধন করেছেন ষাটের দশক থেকে এখনো শ্রোতাদের মাতিয়ে তোলা কন্ঠশিল্পী নিল ডায়মন্ড৷ কান্ট্রি ছাড়াও তিনি পপ, রক ও সফট রক ঘরানার গান গেয়েছেন৷ কিন্তু শ্রোতাদের মনে গেঁথে আছে ‘সং সাং ব্লু’, ‘হার্টলাইট’ ও ‘ইউ ডোন্ট ব্রিং মি ফ্লাওয়ার্স’-এর মতো কান্ট্রি গানগুলিই৷
লরেটা লিন
ষাট বছরেরও বেশি সময় ধরে কান্ট্রি সংগীতের জগৎ মাতিয়ে রাখা শিল্পী লরেটা লিন৷ অমায়িক স্বভাবের জন্য পরিচিত এই কন্ঠশিল্পীর সাফল্যের মূল চাবিকাঠি গানের সহজ, অথচ অর্থবহ কথা৷ তাঁর খুব সফল গানের মধ্যে ‘ফিস্ট সিটি’ ও ‘শিজ গট ইউ’ উল্লেখযোগ্য৷
উঠতি যাঁরা...
কান্ট্রি মিউজিকের নাম শুনলেই অনেকে মনে করেন অতীতের কথা৷ কিন্তু ২০১৯ সালেও যে রমরমিয়ে চলছে ‘কান্ট্রি’র বাজার, তা জানেন কি? ব্র্যাড পেজলি, ক্যারি আন্ডারউড, ব্লেক শেল্টন বা কেসি মাসগ্রেভস-এর মতো জনপ্রিয় তরুণ শিল্পীরা সময়ের সাথে তাল মিলিয়ে কান্ট্রি মিউজিকের সাউন্ডস্কেপে বদল আনলেও, এখনই হারিয়ে যেতে দিচ্ছেন না একসময়ের দুনিয়া কাঁপানো এই গানের ধারাকে৷