1. কন্টেন্টে যান
  2. মূল মেন্যুতে যান
  3. আরো ডয়চে ভেলে সাইটে যান

করোনা মৃত্যু ছাড়াল ২১ হাজার

২৬ মার্চ ২০২০

করোনার জেরে মৃত্যুর সংখ্যা বেড়েই চলেছে। বিশেষজ্ঞরা বলছেন, আপাতত পরিস্থিতি উন্নতির কোনও সম্ভাবনা নেই। দিল্লির জার্মান দূতাবাস দেশে ফেরালো বহু নাগরিককে।

https://p.dw.com/p/3a2uk
ছবি: picture-alliance/dpa/C. Soeder

করোনা ভাইরাসে গোটা বিশ্বে মোট মৃতের সংখ্যা ২১ হাজার ছাড়িয়ে গেল। আক্রান্ত চার লক্ষ ৬৬ হাজার। মৃতের সংখ্যার নিরিখে ইটালির পর স্পেনও এ বার অতিক্রম করল চীনকে। এ দিকে করোনা মোকাবিলায় ঐতিহাসিক বিল পাশ করতে চলেছে অ্যামেরিকা। বুধবার সেনেটে দুই ট্রিলিয়ন মার্কিন ডলারের বিল পেশ করা হয়েছে। পৃথিবীর ইতিহাস এত বড় আর্থিক বিল এর আগে কখনও দেখেনি। অন্য দিকে বিশ্ব স্বাস্থ্য সংস্থা বিত্তশালী দেশগুলির কাছে আর্জি জানিয়েছে, গরিব দেশগুলিকে সাহায্য করার জন্য একটি দুই বিলিয়ন মার্কিন ডলারের তহবিল তৈরি করার জন্য।

করোনার চিকিৎসায় সামরিক হাসপাতাল

পৃথিবীর এক-তৃতীয়াংশ আপাতত কার্যত গৃহবন্দি। দিকে দিকে লকডাউন। কিন্তু এখনও পর্যন্ত করোনার প্রভাব কমার কোনও ইঙ্গিত মিলছে না। ইটালি এবং স্পেনের পরিস্থিতি প্রতিদিন আরও ভয়াবহ হয়ে উঠছে। বুধবার ইটালিতে মৃত্যু হয়েছে আরও ৬৮৩ জনের। যার ফলে ইটালিতে মোট মৃত্যুর সংখ্যা দাঁড়াল সাত হাজার ৫০৩। স্পেনেও গত ২৪ ঘণ্টায় মৃত্যু হয়েছে ৭০০ জনের। মৃত্যুর নিরিখে ইটালির পরে স্পেনই এখন দুই নম্বরে। ইটালির পরেই এখন তার অবস্থান। এরই মধ্যে করোনা মোকাবিলায় ন্যাটোর সাহায্য চেয়েছে স্পেন। সংক্রমণ ছড়িয়ে পড়ছে চিকিৎসকদের মধ্যেও। ফলে চিকিৎসা ব্যবস্থায় বড়সড় সমস্যা হতে পারে বলে মনে করছেন বিশেষজ্ঞরা। জার্মানি, ফ্রান্সেও ছড়াচ্ছে করোনার সংক্রমণ। আগামী তিন সপ্তাহে পরিস্থিতি আরও উদ্বেগজনক হওয়ার সম্ভাবনা আছে বলেই মনে করছেন বিশেষজ্ঞরা। লকডাউন হওয়ার পরে বুধবার ভারত থেকে অসংখ্য জার্মান এবং ইউরোপীয় ইউনিয়নের নাগরিককে দেশে ফেরানোর ব্যবস্থা শুরু করেছে ভারতের জার্মান দূতাবাস। বুধবার রাতেই দিল্লি থেকে প্রথম বিমান রওনা হয়েছে ফ্রাঙ্কফুর্টের উদ্দেশে। বৃহস্পতিবারও একটি বিমান ছাড়বে বলে দূতাবাসের তরফে জানানো হয়েছে। এর মধ্যে যুক্তরাজ্যে আরও ২৮ জনের মৃত্যু হয়েছে। সেখানে মৃতের সংখ্যা বেড়ে দাঁড়িয়েছে ৪১৪। করোনা ছাড়েনি দেশের রাজ পরিবারকেও। আক্রান্ত যুবরাজ চার্লস।

বিশ্বের সবচেয়ে বড় লকডাউনে ভারত

মঙ্গলবারই বিশ্ব স্বাস্থ্য সংস্থা জানিয়েছিল, ইটালি এবং স্পেনের পরে করোনার ভরকেন্দ্র হবে অ্যামেরিকা। যদিও এখনই অ্যামেরিকায় কার্যত মহামারির চেহারা নিয়েছে এই ভাইরাস। দেশের প্রায় প্রতিটি রাজ্যে করোনার সংক্রমণ ঘটেছে। সব চেয়ে ভয়াবহ অবস্থা নিউইয়র্ক এবং ক্যালিফোর্নিয়ায়। সংক্রমণ প্রতিদিন বাড়ছে। তারই মধ্যে পেন্টাগন নির্দেশ দিয়েছে আপাতত দেশের বাইরে থাকা মার্কিন সেনারা যেন নিজেদের বেসেই থাকেন। সেনাবাহিনীর ভিতর সংক্রমণ ছড়ানোর আশঙ্কা করছে দেশের প্রশাসন। সরকার জানিয়েছে, করোনা মোকাবিলায় সমস্তরকম ব্যবস্থা গ্রহণ করা হচ্ছে। একটি ঐতিহাসিক ২ ট্রিলিয়ন মার্কিন ডলারের বিল বুধবার সেনেটে পেশ করা হয়েছে। সেনেটররা জানিয়েছেন, করোনার সঙ্গে মোকাবিলা, অর্থনৈতিক সমস্যা এই সমস্ত কিছুর সঙ্গে লড়াই করার জন্যই এই বিল পেশ হয়েছে। যদিও বুধবার বিকেলে ডেমোক্র্যাট এবং রিপাবলিকান সেনেটরদের মধ্যে বিলটি নিয়ে বিতর্ক শুরু হয়েছে। বিশেষজ্ঞদের ধারণা, বিতর্কের জেরে আপাতত বিলটি পাশ নাও হতে পারে।

করোনা ছড়িয়ে পড়েছে গাজা ভূখণ্ডেও। বিশ্বের অন্যতম জনঘনত্বপূর্ণ এই ভূখণ্ডে এখনও পর্যন্ত দুই জনের শরীরে ভাইরাসের সংক্রমণ মিলেছে। বিশেষজ্ঞদের আশঙ্কা, গাজায় একবার করোনা ছড়িয়ে পড়লে গোটা অঞ্চলটি নিশ্চিহ্ন হয়ে যাবে। কিন্তু ভাইরাসের সঙ্গে মোকাবিলা করার মতো পরিকাঠামো সেখানে নেই। এমন অবস্থায় বিশ্ব স্বাস্থ্য সংস্থার কাছে অনেকেই অনুরোধ করেছেন গাজা ভূখণ্ডের জন্য বিশেষ ব্যবস্থা নেওয়ার।

ভারত, বাংলাদেশ এবং পাকিস্তানে করোনা পরিস্থিতির কোনও উন্নতি হয়নি। বুধবারই জাতির উদ্দেশে ভাষণ দিয়েছেন বাংলাদেশের প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনা। আর্থিক সাহায্যের কথা ঘোষণা করেছেন তিনি। ভারত ২১ দিনের লকডাউনে। এখনও পর্যন্ত আক্রান্ত ৬১০। মৃত্যু হয়েছে ১২ জনের। পাকিস্তানে মৃতের সংখ্যা সাত। আক্রান্ত হাজার ছাড়িয়ে গিয়েছে। তুলনায় বাংলাদেশে আক্রান্তের সংখ্যা এখনও পর্যন্ত কম। একশ ছাড়ায়নি। তবে ইতিমধ্যে মৃত্যু হয়েছে তিন জনের।

এসজি/জিএইচ (রয়টার্স, এপি, এএফপি)