করোনায় মৃত্যু বেড়ে ৬৩৬
৭ ফেব্রুয়ারি ২০২০নিয়ন্ত্রণ দূরস্থান, প্রতিদিনই করোনায় আক্রান্ত ও মৃতের সংখ্যা বাড়ছে৷ চীন তো বটেই জার্মানি সহ ইউরোপের দেশগুলিতেও নতুন করে আক্রান্তের খবর আসছে৷ বৃহস্পতিবার চীনে ৭৩ জনের মৃত্যু হয়েছে৷ সবমিলিয়ে করোনা ছিনিয়ে নিল ৬৩৬ প্রাণ৷ আক্রান্তের সংখ্যা ৩১ হাজার৷ গত ২৪ ঘন্টায় আক্রান্ত হয়েছেন ৩ হাজার ১৪৩ জন৷ চীনে ৩৬ ঘন্টার নবজাতক শিশুর শরীরে করোনা ভাইরাস পাওয়া গিয়েছে৷ এই শিশুই হল সবচেয়ে কম বয়সী, যার শরীরে করোনার ভাইরাস পাওয়া গেল৷
এর মধ্যে যে চিকিৎসক চীনে করোনা ভাইরাসকে চিহ্নিত করেছিলেন, তাঁর মৃত্যুনিয়ে বিভ্রান্তি দেখা দিয়েছিল। ৩৪ বছর বয়সী ওই চিকিৎসকের নাম লি ওয়েনলিয়াং। তিনি এবং আরও সাতজন চিকিৎসক করোনা ভাইরাসের কথা প্রথম বলেছিলেন৷ উহানে তিনি মারা গিয়েছেন বলে বিবিসি জানায়৷ চীনের সরকারি সংবাদমাধ্যোমও প্রথমে একই কথা বলে৷ পরে তারা জানায়, ওই চিকিৎসক বেঁচে আছেন৷ ঘন্টা কয়েক পরে তারাই আবার জানায়, লি মারা গিয়েছেন৷ কিন্তু চীনের গ্লোবাল টাইমস টুইট করে বলেছে, ন্যাশনাল হেলথ কমিশনের মুখপাত্র লি-র মৃত্যুতে গভীর শোক প্রকাশ করেছেন৷
এই পরিস্থিতিতে চীনের প্রেসিডেন্ট শি জিনপিং ফোন করেন অ্য়ামেরিকার প্রেডিডেন্ট ডনাল্ড ট্রাম্পকে৷ চীনের প্রেসিডেন্ট করোনাকে নিয়ন্ত্রণে আনার ব্যাপারে খুবই আত্মবিশ্বাসী৷ ট্রাম্পের কাছে তিনি দাবি করেছেন, করোনার বিরুদ্ধে লড়াইয়ে চীন জয়ী হবেই৷ ট্রাম্পও জানিয়েছেন, তাঁরও বিশ্বাস চীন এই কাজ করতে পারবে৷
চীনের প্রেসিডেন্ট করোনাকে আয়ত্ত্বে আনার দাবি করলেও এখনও পর্যন্ত তা সম্ভব হয়নি। জার্মানি সহ ইউরোপের দেশগুলিতেও করোনায় আক্রান্তের সংখ্যা বাড়ছে। জার্মানির বাভারিয়াতে আরও একজন আক্রান্ত হয়েছেন৷ তিনি হলেন আগে এক আক্রান্তের স্ত্রী৷ যুক্তরাজ্যেও আরেকজনের শরীরে করোনা ভাইরাস পাওয়া গিয়েছে। সবমিলিয়ে লন্ডনে তিনজন করোনায় আক্রান্ত হলেন৷ ইউরোপে মোট ৩১ জন করোনায় আক্রান্ত৷ জাপানে প্রমোদতরিতে থাকা আরও ৪১ জনের শরীরে করোনা ভাইরাস পাওয়া গিয়েছে৷ ওই প্রমোদতরিতে থাকা মোট ৬১ জন করোনায় আক্রান্ত হলেন৷
করোনার ধাক্কা চীনের অর্থনীতিতে ভালোভাবেই পড়েছে৷ চীন থেকে জিনিস রফতানি কার্যত বন্ধ৷ জাপানি গাড়ি উৎপাদক টয়োটা চীনে তাঁদের সব কারখানা ১৬ ফেব্রুয়ারি পর্যন্ত বন্ধ রেখেছে৷ চীনের কোনও শিল্প ও বানিজ্য প্রতিনিধিদলকে বিশ্বের কোনও সম্মেলন, মেলা বা দ্বিপাক্ষিক আলোচনায় যোগ নিতে দিচ্ছে না কোনও দেশ৷ চীনের সেন্ট্রাল ব্যাঙ্ক দাবি করেছে, এই ধাক্কাটা সাময়িক৷ পরে তা কাটিয়ে ওঠা যাবে৷ শি জিনপিং-ও মার্কিন প্রেসিডেন্টকে বলেছেন, করোনার থাবা চীনের অর্থনীতির প্রবৃদ্ধিকে দীর্ঘকালীন ভিত্তিতে ঠেকাতে পারবে না৷ চীনের সঙ্গে অধিকাংশ দেশের বিমান চলাচলও বন্ধ৷ তাই বালিতে আটকে পড়েছেন কয়েক হাজার চীনা পর্যটক৷
তবে করোনার ফলে ভারতের চাল রফতানিকারীদের সুবিধা হয়েছে৷ কারণ, করোনা আতঙ্কের জন্য আফ্রিকার দেশগুলি এখন থাইল্যান্ড ও ভিয়েতনাম থেকে চাল নিচ্ছে না৷ তারা চাল কিনছে ভারত থেকে৷ তাই ভারতের রফতানি করা চালের দাম কিছুটা বেড়েছে। গত চার মাসের মধ্যে আন্তর্জাতিক বাজারে ভারতের চালের দাম সবথেকে বেশি হয়েছে৷
জিএইচ/এসজি (এএফপি, রয়টার্স, নিউজ ১৮)