1. কন্টেন্টে যান
  2. মূল মেন্যুতে যান
  3. আরো ডয়চে ভেলে সাইটে যান

করোনার প্রস্তুতি: থার্মাল স্ক্যানার মাত্র একটি

হারুন উর রশীদ স্বপন ঢাকা
৬ মার্চ ২০২০

করোনা ভাইরাসের প্রস্তুতি নিয়ে অনেক আলোচনা হলেও বাংলাদেশে স্ক্রিনিং-এর জন্য কর্মক্ষম থার্মাল স্ক্যানার আছে মাত্র একটি৷ সেটি আছে শাহজালাল আন্তর্জাতিক বিমানবন্দরে৷ তাদের তিনটি স্ক্যানার থাকলেও এখন দুটি নষ্ট৷

https://p.dw.com/p/3Yxve
ছবি: picture-alliance/ZUMAPRESS/A. I. Damanik

শাহজালাল ছাড়া বাংলাদেশের আর কোনো বিমানবন্দর বা স্থলবন্দরে থার্মাল স্ক্যানার নেই বলে জানা গেছে৷ কোনো কোনো স্থলবন্দরে স্ক্যানার বলতেই কিছু নেই৷

চীনা রাষ্ট্রদূত লি জিমিং গত বুধবার ঢাকার কেরানীগঞ্জে এক অনুষ্ঠানে বাংলাদেশের সব ধরনের বন্দরে থার্মাল স্ক্যানার বসানোর তাগিদ দিয়েছেন৷ এদিকে, যুক্তরাষ্ট্র বলছে বাংলাদেশ উচ্চ করোনা ঝুঁকিতে রয়েছে৷

গত ২১ জানুয়ারি থেকে শাহজালাল আন্তর্জাতিক বিমানবন্দরে যাত্রীদের স্ক্রিনিং শুরু হয়৷ প্রথম দিকে শুধু চীন খেকে আসা যাত্রীদেরই স্ক্রিনিং-এর আওতায় আনা হলেও ৭ ফেব্রুয়ারি থেকে সব যাত্রীকেই স্ক্রিনিং করা হচ্ছে বলে দাবি করা হয়েছে৷ কিন্তু সেটা কি আদৌ সম্ভব হচ্ছে?

 বিমানবন্দরের স্বাস্থ্য কর্মকর্তা ডা. শাহরিয়ার সাজ্জাদ জানান, ‘‘মোট তিনটি থার্মাল স্ক্যানার ছিলো৷ ভিআইপি টার্মিনালের স্ক্যানার আগে থেকেই নষ্ট৷ আর সাধারণ টার্মিনালের দু'টি সচল ছিলো৷ কিন্তু তার একটি এক সপ্তাহ আগে নষ্ট হয়ে যায়৷''

থার্মাল স্ক্যানারের মধ্য দিয়ে কোনো যাত্রী পার হলে সহজেই তার শরীরের তাপমাত্রা বোঝা যায়৷ যদি সবুজ আলো জ্বলে তাহলে স্বাভাবিক৷ লাল আলো জ্বললে তাপমাত্রা অস্বাভাবিক৷
এই চিকিৎসক জানান, এখন তারা অনেকটাই ম্যানুয়ালি স্ক্রিনিং করছেন৷ হ্যান্ড হেল্ড থার্মোমিটার দিয়ে শরীরের তাপমাত্রা দেখছেন - যা অনেক সময়সাপেক্ষ৷

ডা. সাজ্জাদ জানান, ‘‘নতুন করে থার্মাল স্ক্যানার আনা অনেক সময়সাপেক্ষ৷ এর জন্য টেন্ডার আহ্বান করতে হয়৷'' তার প্রক্রিয়া শুরু হয়েছে বলে তিনি জানান৷ এদিকে যে থার্মাল স্ক্যানার দিয়ে কাজ চলছে তাও মেয়াদোত্তীর্ণ৷ যে-কোনো সময় অকেজো হয়ে যেতে পারে৷ আর অভ্যন্তরীণ টার্মিনালে কখনোই থার্মাল স্ক্যানার ছিলোনা৷

বাংলাদেশের কোনো স্থলবন্দরেও থার্মাল স্ক্যানার নেই৷ আবার কোনো বন্দরে করোনা স্ক্রিনিং শুরু হয়েছে মাত্র কয়েকদিন আগে৷ লালমনিরহাটের বুড়িমারি স্থলবন্দর সেরকমই একটি স্থলবন্দর৷ এই স্থলবন্দরে কোনো ধরনের স্ক্যানিং সিস্টেম ছিলনা৷ কয়েকদিন আগে দুটি থার্মাল মিটার (থার্মোমিটার) দেয়া হয়েছে৷ এই দুটি দিয়ে যাত্রীদের শরীরের তাপমাত্রা পরীক্ষা করা হয়৷

এই বন্দরের স্বাস্থ্য কর্মকর্তা ডা. আইয়ুব আলি জানান, একটি দিয়ে তারা ট্রাক ড্রাইভারদের শরীরের তাপমাত্রা পরীক্ষা করেন, আরেকটি দিয়ে যাত্রীদের৷ তিনি বলেন, ‘‘থার্মাল স্ক্যানার থাকলে আমরা কম্পিউটারেই সব কিছু চেক করতে পারতাম৷ এখন দুই ইঞ্চি দূরে থেকে তাপমাত্রা দেখতে পারি৷ তাপমাত্রা বেশি (১০০ ডিগ্রির বেশি) হলে আমরা কোয়ারেন্টাইনে নিয়ে যাই৷''

রোগতত্ত্ব, রোগনিয়ন্ত্রণ ও গবেষণা ইনস্টিটিউটের (আইইডিসিআর) তথ্য মতে, গত ২১ জানুয়ারি থেকে এপর্যন্ত বিদেশ থেকে আসা মোট চার লাখ ৬৩ হাজার ৭১২ জন যাত্রীকে স্ক্যান করা হয়েছে৷ তাতে এখন পর্যন্ত কেউ করোনা ভাইরাসে আক্রান্ত বলে নিশ্চিত হওয়া যায়নি৷

মেডিসিন বিশেষজ্ঞ ও প্রধানমন্ত্রীর ব্যক্তিগত চিকিৎসক ডা. এম আব্দুল্লাহ বলেন, ‘‘একটি মাত্র থার্মাল স্ক্যানার দিয়ে বিমানবন্দরে আসলে কাজ চলেনা৷ ওই একটিওতো নষ্ট হয়ে যেতে পারে৷ তাই দ্রুত এ ব্যাপারে প্রয়োজনীয় উদ্যোগ নেয়া দরকার৷'' তিনি বলেন, ‘‘তবে স্থল ও বিমানবন্দরে এখন হ্যান্ড স্ক্যানার দিয়ে কাজ হচ্ছে৷ এই পদ্ধতিও স্বীকৃত৷ কিন্তু বিমানবন্দরে থার্মাল স্ক্যানার জরুরি৷''

বাংলাদেশে এখনো কোনো করোনা আক্রান্ত রোগী শনাক্ত হয়নি৷ এটা যেমন আশার কথা, তেমনি এই প্রশ্নও উঠছে যে করোনা ভাইরাস সত্যিই যদি বাংলাদেশ ঢুকে পড়ে তাহলে সামাল দেয়া যাবো তো? প্রশ্ন উঠেছে বাংলাদেশের হাসপাতালের আইসোলেশন ওয়ার্ড, বিদেশ থেকে আসা ব্যক্তিদের স্ক্রিনিং সক্ষমতা এবং সার্বিক সচেতনতা নিয়ে৷

ডা. এম আব্দুল্লাহ বলেন, ‘‘সার্বিক প্রস্তুতি যে খারাপ, তা বলা যাবেনা৷ সচেতনতার কাজও চলছে৷ তবে আমাদের আরো সতর্ক এবং সচেতন হতে হবে৷''

স্কিপ নেক্সট সেকশন এই বিষয়ে আরো তথ্য

এই বিষয়ে আরো তথ্য