1. কন্টেন্টে যান
  2. মূল মেন্যুতে যান
  3. আরো ডয়চে ভেলে সাইটে যান

এবার ইলেকট্রিক গাড়ির ব্যাটারির রিসাইক্লিং

৩০ জুলাই ২০২৪

শিল্পোন্নত বিশ্বে ইলেকট্রিক যানের ব্যবহার বাড়ছে৷ কিন্তু এমন গাড়ির জন্য প্রয়োজনীয় ব্যাটারির কাঁচামালের চাহিদা পূরণ করা সহজ নয়৷ ফলে জার্মানিতে ব্যাটারি রিসাইক্লিংয়ের বিশাল উদ্যোগ শুরু হয়েছে৷

https://p.dw.com/p/4ivQS
E-Fahrzeugen
ছবি: Torsten Sukrow/SULUPRESS.DE/picture alliance

জরুরি অবস্থায় বিদ্যুৎচালিত যানের ব্যাটারি যত দ্রুত সম্ভব পানিতে ফেলে দেওয়া উচিত৷ সেই ব্যাটারি রিসাইকেল করতে গেলে নিরাপত্তা সংক্রান্ত বিশাল বিধি মেনে চলতে হয়৷ এমন গুদাম কয়েক মিনিটের মধ্যে ফেনায় ডুবিয়ে দিতে হবে৷ ইলেকট্রিক ভেহিকেল ব্যাটারি অত্যন্ত দাহ্য এবং বিস্ফোরক৷

রিসাইকেলের প্রথম কোম্পানি বিশাল মুনাফা করেছে৷ কারণ, ব্যাটারির মধ্যে কোবাল্ট ও নিকেলের মতো মূল্যবান ধাতু রয়েছে৷ ইএমআর কোম্পানির প্রতিনিধি মুরাত বায়রামের মতে, ‘‘২০৩০ সালের মধ্যে জার্মানির রাজপথে দেড় কোটি ইলেকট্রিক যান নামবে বলে আমরা মনে করি৷ অর্থনৈতিক দৃষ্টিভঙ্গি থেকে দেখলে ২০৩০ সাল আগামী পরশুর মতো৷''

কয়েক মাস আগে ইউরোপে ইলেকট্রিক যানের সবচেয়ে বড় রিসাইক্লিং কারখানা খোলা হয়েছে৷ মুরাত বলেন, ‘‘আমরা জার্মানির সবচেয়ে দামী ফ্যাক্টরি ফ্লোরের একটির উপর দাঁড়িয়ে রয়েছি৷ নিরাপত্তাকে সর্বোচ্চ গুরুত্ব দিলেই অর্থ সাশ্রয় হয় না৷ এই ফ্লোর সম্পূর্ণ পানি-নিরোধক, কয়েক মিটার পুরু এবং সেখানে এমন সেন্সর রয়েছে, যে কোনো পদার্থ মাটিতে প্রবেশ করলেই যা অবিলম্বে আমাদের জানিয়ে দেবে৷''

এই সব ব্যাটারিতে সমস্যা দেখা দেওয়ায় গাড়ির কারখানা থেকে সরিয়ে ফেলা হয়েছিল৷ কিন্তু খুব কম ব্যাটারিই এখানে আসে৷ রিসাইক্লিং প্লান্টের প্রসেস ইঞ্জিনিয়ার লার্স মুন্ডিন বলেন, ‘‘আমরা মূলত নতুন প্রযুক্তি পরীক্ষা ও কার্যকর করি এবং নিজেরাই ব্যবহার করি৷ আমরা শিক্ষাকে যতটা সম্ভব গুরুত্ব দেই৷ পুরানো ব্যাটারি বেরিয়ে এলে এবং আচমকা বেশি পরিমাণে এসে পড়লে প্রস্তুত থাকতে চাই৷''

কয়েক বছরের মধ্যে প্রথম প্রজন্মের ইলেকট্রিক যানগুলির ব্যটারি বাতিল হওয়ার পরই বিশাল পরিমাণে রিসাইক্লিং শুরু হবে৷ তখন বড় ব্যবসায়িক প্রতিষ্ঠানগুলি তথাকথিত ‘ব্ল্যাক মাস' ও সেগুলির মধ্যেকার ধাতু উদ্ধার করার উদ্যোগ নেবে৷ লার্স মুন্ডিন বলেন, ‘‘সবচেয়ে দামী ধাতু হিসেবে ৯৫ শতাংশ নিকেল, সেইসঙ্গে অবশ্যই অ্যালুমুনিয়াম ও তামা উদ্ধার করাই আমাদের লক্ষ্য৷''

‘ফিরে আসে’ ইলেকট্রিক গাড়ির ব্যাটারি

গোটা বিশ্ব ইলেকট্রিক যানের দিকে ঝুঁকছে এবং ব্যাটারির জন্য এই ধাতুগুলির চাহিদা উল্লেখযোগ্য মাত্রায় বেড়ে যাবে৷ রিসাইক্লিং করতে পারলে প্রস্তুতকারকদের এমন খনির উপর নির্ভরতা কমবে, যেখানে কাজের পরিবেশ খুবই খারাপ৷ মুরাত বায়রাম মনে করেন, কোম্পানিগুলি এখনো কাচামালের ক্ষেত্রে অন্য দেশের উপর অতিরিক্ত মাত্রায় নির্ভরশীল৷

জার্মানির রিসাইক্লিং প্লান্টে উদ্ধার হওয়া উপাদান ইউরোপের উত্তরে এক পাইলট প্লান্টে জমা হয়৷ ব্যাটারি শ্রেডিং করে এক রাসায়নিক প্রক্রিয়ার মাধ্যমে ‘ব্ল্যাক মাস' নামে পরিচিত অবস্থায় রূপান্তরিত করা হয়৷ একেই রিসাইক্লিং শিল্পের কালো সোনা বলা হয়৷ সেই মিশ্রণ থেকে নিকেল, ম্যাংগানিজ ও কোবল্টের সবুজ এক তাল বার করা যায়, যা সেভাবেই নতুন ব্যাটারিতে কাজে লাগানো যায়৷ কিন্তু সেটির মূল্য কি ন্যায্য? লার্স মুন্ডিন বলেন, ‘‘এই মুহূর্তে সঠিক মূল্য বলা কঠিন, কারণ এই ব্যবসা এখনো গড়ে তোলা হচ্ছে৷ তাছাড়া বিশ্ব বাজারে মূল্য অনেক ওঠানামা করে৷ ফলে হিসেব করা কঠিন৷''

কাজ একবার শুরু হলে প্রক্রিয়ার একটা বড় অংশ স্বয়ংক্রিয় করে তোলা হবে৷ কিন্তু রিসাইক্লিং-এর হার বাড়াতে ব্যাটারাগুলি আরো উন্নত করা প্রয়োজন৷ মুরাত বায়রাম বলেন, ‘‘গাড়ির ব্যাটারির প্রসঙ্গে বলতে হয়, আমরা স্পষ্ট দেখছি যে জার্মান গাড়ি কোম্পানিগুলি আরো বেশি করে রিসাইক্লিং-এর কথা ভেবে পণ্য ডিজাইন করছে৷ তারা আমাদের সঙ্গে কাজ করতে চাইছে, কারণ তারাও আমাদের মতোই কাচামাল পেতে আগ্রহী৷ তারাও চক্র পূর্ণ করতে চায়৷''

অ্যালুমুনিয়ামের মতো উচ্চ রিসাইক্লিং হার নিশ্চিত করতে পারলে আরেকটি সুবিধাও পাওয়া যাবে৷ শেষ পর্যন্ত জলবায়ুর জন্যও এই উদ্যোগ ইতিবাচক হবে৷

এই রিসাইক্লিং প্ল্যান্টের পরিচালনকারীরা কোটি কোটি ইউরো বিনিয়োগ করেছেন৷ এই উদ্যোগ নিরাপদ হবে বলেই তাঁরা আশা করছেন৷

আন্দ্রেয়াস নয়হাউস/এসবি