এক 'ময়লা মানুষে'র গল্প
সারা জীবন গায়ে জল লাগাননি অসুস্থ হওয়ার ভয়ে। সভ্য জীবন পছন্দ ছিল না তার। আমু হাজি ছিলেন ইরানের এক আজব মানুষ।
ময়লা মানুষ
দক্ষিণ ইরানের দেজগা গ্রামের বাসিন্দা ছিলেন আমু হাজি। সম্প্রতি ৯৪ বছর বয়সে মৃত্যু হয়েছে তার। বিশ্বের সবচেয়ে ময়লা মানুষ হিসেবে পরিচিত ছিলেন তিনি।
স্নান নৈব নৈব চ
স্নান করায় প্রবল আপত্তি ছিল আমু হাজির। মনে করতেন, স্নান করলেই অসুস্থ হয়ে পড়বেন। জীবনের প্রায় অর্ধশতাব্দী স্নান না করেই কাটিয়েছেন তিনি। সম্প্রতি তাকে জোর করেই স্নান করানো হয়, আর তার পরেই ৯৪ বছর বয়সে মৃত্যু হয় তার।
সকলের চেয়ে আলাদা
সভ্যতার ছোঁয়ায় বাঁচতেন না আমু। থাকতেন সকলের থেকে দূরে। স্থানীয় মানুষ পাথর দিয়ে একটি ঘর বানিয়ে দিয়েছিল, সেখানেই রাত কাটাতেন আমু। কখনো বা খোলা আকাশের নীচে।
খাওয়াদাওয়াও তেমন
স্থানীয় সংবাদপত্র লিখেছে, আমু রান্না করা খাবারও খেতেন না বিশেষ। ফল, গাছের পাতা খেতেন। কাঁচা মাংসও খেতেন। আবার পথচলতি মানুষ কোনো খাবার দিলে খেয়ে নিতেন। খানিক ভবঘুরের মতোই থাকতেন তিনি।
আজব ধুমপান
একটি সিগারেট খেতেন না আমু। একসঙ্গে অনেকগুলি সিগারেট ধরাতেন। পাইপও খেতেন। তাতে তামাক নয়, পশুপাখির বিষ্ঠা ভরে দিতেন।
আমুকে নিয়ে ছবি
২০১৩ সালে তাকে নিয়ে তৈরি হয় 'দ্য স্ট্রেঞ্জ লাইফ অফ আমু হাজি' শীর্ষক তথ্যচিত্র। আন্তর্জাতিক চলচ্চিত্র মঞ্চে ছবিটি বেশ সমাদৃত হয়েছিল।
এক অন্য দর্শন?
আমুকে অনেকেই পৃথিবীর সবচেয়ে ময়লা মানুষ বলে মনে করেন। ভবঘুরে বলেন। কোনো কোনো পণ্ডিত আবার তাকে দার্শনিক বলেও ব্যাখ্যাও করেছেন। তাকে নিয়ে তৈরি তথ্যচিত্রেও সে ইঙ্গিত আছে। যেখানে বলা হয়েছে, চলতি সভ্যতাকে অস্বীকার করেছিলেন আমু। তার জীবন আসলে সভ্যতার বিরুদ্ধে এক বিদ্রোহ।
স্নান করেই মৃত্যু
প্রায় ষাট বছর স্নান করেননি তিনি। কেউ স্নান করানোর চেষ্টা করলে আপত্তি জানিয়েছেন। মাসখানেক আগে তাকে খানিক জোর করেই স্থানীয় মানুষ স্নান করিয়ে দেন। তারপরেই গত রোববার মৃত্যু হয় তার। চিকিৎসকেরা অবশ্য বলছেন, স্নানের সঙ্গে মৃত্যুর সেই অর্থে কোনো সংযোগ নেই। বয়সজনিত কারণেই তার মৃত্যু হয়েছে।