রাশিয়া ইউক্রেন আক্রমণ করার পর সংবাদ শিরোনামে বার বার উঠে এসেছে পূর্ব ইউক্রেনের বন্দর শহর মারিউপলের কথা। এখনো সেখানে তীব্র লড়াই চলছে। সেই মারিউপল থেকেই প্রাণ বাঁচিয়ে পালাতে পেরেছেন স্থানীয় সাংবাদিক মিকোলা ওসিচেঙ্কো। তার মুখে ভয়াবহতার কাহিনি শুনলে মেরুদণ্ড দিয়ে ঠান্ডা রক্তের স্রোত বয়ে যায়।
মিকোলার কথা
মারিউপলের একটি শিশু ও নারীদের হাসপাতালে বোমা ফেলেছিল রাশিয়া। তাদের দাবি ছিল, ওই ভবনটি সেনা হেডকোয়ার্টার হিসেবে ব্যবহার করা হচ্ছে। মিকোলার বাড়ি ওই ভবনটি থেকে মাত্র ৫০০ মিটার দূরে। ডিডাব্লিউকে তিনি জানিয়েছেন, যেদিন ওই ভবনে বোমা ফেলা হলো, প্রথমে তিনি ভেবেছিলেন তার বাড়িতেই বোমাবর্ষণ হয়েছে। বোমারতীব্রতা এত বেশি ছিল যে তার বাড়িটিও কেঁপে উঠেছিল।
-
পশ্চিমা বিশ্বে রাশিয়ার সাইবার হামলার আতঙ্ক
পশ্চিমা বিশ্বজুড়ে হ্যাকিং
ক্রেমলিনের স্বার্থে সাইবার যুদ্ধকে কেন্দ্রীয় নীতির অন্তর্ভুক্ত করেছিল রাশিয়া৷ এই নীতির বেশিরভাগটাই ছিল গোপনীয়৷ ক্রেমলিনে কম্পিউটার হ্যাকারদের নিয়ে একটি দল গড়ে তোলার খবর নিশ্চিত করেছিল একাধিক আন্তর্জাতিক সংবাদমাধ্যম৷ এরপরই পশ্চিমা বিশ্বে রাশিয়ার সাইবার হামলার ভয়টা আরো বেশি জাঁকিয়ে বসেছে৷
-
পশ্চিমা বিশ্বে রাশিয়ার সাইবার হামলার আতঙ্ক
ইউক্রেনে ব্ল্যাক এনার্জি হামলা
ইউক্রেনকে অনেক সময় রাশিয়ার হ্যাকারদের ‘খেলাঘর’ বলা হয়৷ নতুন নতুন পদ্ধতি প্রয়োগ করে তা যাচাই করতে ইউক্রেনের উপর হামলা চালিয়ে এসেছেন রুশ হ্যাকাররা৷ বিশেষজ্ঞদের আশঙ্কা, এবার ইউক্রেনে ‘সাইবার আগ্রাসন’ চালাতে পারে রাশিয়া৷
-
পশ্চিমা বিশ্বে রাশিয়ার সাইবার হামলার আতঙ্ক
হামলা পশ্চিমের অন্য দেশেও?
২০১৫ সালে সাইবার হামলায় ব্যাহত হয়েছিল ইউক্রেনের বিদ্যুৎ উৎপাদন ও সরবরাহ ব্যবস্থা৷ ওই সাইবার হামলার নামকরণ করা হয় ‘ব্ল্যাকএনার্জি’৷ ওই হামলায় অস্থায়ীভাবে বিদ্যুৎবিচ্ছিন্ন হয়ে সমস্যায় পড়েন পশ্চিম ইউক্রেনের ৮০ হাজার নাগরিক৷ কিয়েভেও হামলা চালানোর অভিযোগ ওঠে এক বছর পরে৷ এবার একইরকম হামলা কি পশ্চিমের অন্য দেশেও চালাতে পারে রাশিয়া? এই প্রশ্নটা ঘুরেফিরে আসছে বারবার৷
-
পশ্চিমা বিশ্বে রাশিয়ার সাইবার হামলার আতঙ্ক
নিশ্চিত সাইবার হামলা?
হ্যাকিংয়ের মাধ্যমে বিদ্যুৎবিচ্ছিন্ন করার উভয় ঘটনার তদন্তের সঙ্গে জড়িত ছিলেন ইউক্রেনের সাইবার নিরাপত্তা কর্মী মারিনা ক্রোৎফিল৷ তিনি জানিয়েছিলেন, ‘‘রাশিয়া চাইলে এমন সক্ষমতার দৃষ্টান্ত তৈরি করতে পারে৷’’ তবে এই ব্যবস্থা অত্যন্ত জটিল৷ দীর্ঘস্থায়ী ক্ষতিসাধন বিল্ট ইন নিরাপত্তার কারণে সম্ভব নয় বলেও জানিয়েছিলেন মারিনা৷ কিন্তু তবুও শঙ্কাটা রয়ে গিয়েছে৷
-
পশ্চিমা বিশ্বে রাশিয়ার সাইবার হামলার আতঙ্ক
নটপেটইয়া ম্যালওয়্যার
নটপেটইয়া ম্যালওয়্যারের মাধ্যমে সাইবার হামলার জন্য রাশিয়াকে দায়ী করেছিল অ্যামেরিকা, যুক্তরাজ্য এবং ইউরোপীয় ইউনিয়ন৷ এটি সবচেয়ে ব্যয়বহুল সাইবার হামলা হিসেবে পরিচিত৷ সেই সময় কয়েক হাজার প্রতিষ্ঠানের সিস্টেমে প্রভাব পড়ায় এক হাজার কোটি ডলারের আর্থিক ক্ষতি হয়েছিল৷ গোটা পৃথিবী যেখানে মুঠোফোনে বন্দি, সেখানে এ জাতীয় হামলার ভয়ও এড়াতে পারছে না পশ্চিমা বিশ্ব৷
-
পশ্চিমা বিশ্বে রাশিয়ার সাইবার হামলার আতঙ্ক
হ্যাকারদের নিয়োগ ও পশ্চিমের সতর্কতা
২০১৭ সাল থেকেই কলেজের ছাত্র ও পেশাদার প্রোগ্রামারদের চাকরির প্রস্তাব দিয়ে সামাজিক যোগাযোগমাধ্যমে বিজ্ঞাপন দিয়েছে রাশিয়া৷ সাইবার অপরাধ জগতের সম্ভাব্য প্রতিভার খোঁজেও প্রকাশ্যে তৎপরতা দেখা গিয়েছিল দেশজুড়ে৷ সামরিক ঘাঁটিতে স্থাপন করা সায়েন্স স্কোয়াড্রনস নামের ইউনিটে একাধিক প্রতিভাবানকে নিয়োগ করা হয়েছিল৷ তাই সাইবার অপরাধ থেকে সতর্ক থাকতে বদ্ধপরিকর পশ্চিমা শক্তিগুলি৷
-
পশ্চিমা বিশ্বে রাশিয়ার সাইবার হামলার আতঙ্ক
কলোনিয়ান পাইপলাইনে অ্যামেরিকায় হামলা
২০২১ সালের মে মাসে হ্যাকাররা মার্কিন জ্বালানি তেলের পূর্বাঞ্চলীয় নেটওয়ার্কের গুরুত্বপূর্ণ পাইপলাইন বন্ধ করে দেয়৷ এর ফলে বেশ কয়েকটি অঙ্গরাজ্যে জরুরি অবস্থা জারি করতে বাধ্য হয়েছিল অ্যামেরিকা৷ হামলাটি চালিয়েছিল ‘ডার্কসাইড’ নামের হ্যাকারদের একটি দল৷ অনুমান, দলটি রাশিয়াকেন্দ্রিক৷ প্রতিষ্ঠানটি কম্পিউটার সিস্টেমে নিয়ন্ত্রণ পেতে মুক্তিপণ হিসেবে হ্যাকারদের ৪৪ লাখ ডলারের বিটকয়েন দিতে বাধ্য হয়৷
-
পশ্চিমা বিশ্বে রাশিয়ার সাইবার হামলার আতঙ্ক
র্যানসমওয়্যার হামলার আশঙ্কা
বিশ্বের বৃহত্তম গো-মাংস প্রক্রিয়াজাতকারী প্রতিষ্ঠান জেবিএসে র্যানসমওয়্যার হামলা চালায় হ্যাকারদের দল ‘আরইভিল’৷ সাইবার নিরাপত্তা গবেষকরা এটা ভেবে শঙ্কিত যে ক্রেমলিন হয়ত হ্যাকারদের যুক্তরাষ্ট্রের লক্ষ্যগুলোর উপর একসঙ্গে হামলা করার নির্দেশ দেবে যাতে গুরুত্বপূর্ণ অবকাঠামোতে বড় আকারের প্রতিবন্ধকতা তৈরি হয়৷
-
পশ্চিমা বিশ্বে রাশিয়ার সাইবার হামলার আতঙ্ক
সাইবার হামলায় আর্থিক ক্ষতি
র্যানসমওয়্যারের মাধ্যমে হামলার ফলে চরম বিশৃঙ্খলা তৈরি হতে পারে পশ্চিমা বিশ্বে৷ এর ফলে আর্থিক সংকটের মুখে পড়তে পারে তারা৷ সেই পরিস্থিতির সুযোগ নিতে পারে রাশিয়া৷
-
পশ্চিমা বিশ্বে রাশিয়ার সাইবার হামলার আতঙ্ক
পাল্টা জবাব
সংবাদসংস্থা এএফপি জানাচ্ছে, ইউক্রেনকে রক্ষা করার জন্য স্বেচ্ছাসেবক হ্যাকারদের একটি বাহিনী সাইবারস্পেসে গড়ে উঠছে৷ প্রায় ২৬ হাজার স্বেচ্ছাসেবী হ্যাকার যোগ দিয়েছেন ‘তথ্য প্রযুক্তি বাহিনী’-তে৷ রাশিয়াকে পাল্টা জবাব দিতে প্রস্তুত তারা, উল্লেখ করা হয়েছে এ কথা৷ রয়েছে টেলিগ্রাম গ্রুপও৷ তবে এ হামলায় কী ধরনের জবাব দেয়া যেতে পারে, তা নিয়ে ধন্দ রয়েছে৷ সাইবার যুদ্ধ থেকে দূরে থাকার পরামর্শ দিয়েছেন বিশেষজ্ঞরা৷
মিকোলার এখনো মনে আছে, বোমা ফেলার আগের দিন তার ৬০ বছরের আহত প্রতিবেশীকে ওই হাসপাতালেই ভর্তি করতে হয়েছিল। কারণ, দূরের হাসপাতালে নিয়ে যাওয়া সম্ভব হয়নি। তবে তাকে ছেড়েও দেওয়া হয়েছিল। আহত প্রতিবেশীকে ভর্তি করার সময় মিকোলা দেখেছিলেন ওই হাসপাতালের তৃতীয় তলে অসংখ্য নারী এবং শিশু ভর্তি ছিল। বোমাবর্ষণের পর আর তাদের দেখা যায়নি। ওই ঘটনার পর তারাও বেসমেন্টে নেমে যান। বাড়ির হিটিং বন্ধ হয়ে যায়। হিমাঙ্কের নীচে তাপমাত্রা। তারমধ্যেই দিনের পর দিন কাটাতে হয়েছে তাদের। যে কয়েকটি ম্যাট্রেস ছিল তা শিশু এবং বয়স্কদের দেওয়া হয়েছিল। তারা সিঁড়িতে বসেই ঘুমিয়ে নিতেন। বরফ পড়লে জলের ব্যবস্থা হতো। কেউ কেউ হিটিং মেশিনের জল বার করে ফুটিয়ে খাওয়ার চেষ্টা করেছে। খাবারও প্রায় শেষ বলে জানিয়েছেন তিনি। পরিবার এবং প্রতিবেশীদের নিয়ে পালানোর আগে যারা থেকে গেছেন, তাদের সামান্য খাবার আর জল দিয়ে এসেছেন তিনি।
নাতালিয়ার কথা
নাতালিয়া কোরিয়াগিনা একজন স্বাস্থ্যকর্মী। ডিডাব্লিউকে তিনি জানিয়েছেন, তার হৃদয় এখন তিন টুকরো হয়ে আছে। মা আটকে গ্রামের বাড়িতে, স্বামী যুদ্ধ করছেন আর ছেলে খারকিভে।
-
রাশিয়ার বিরুদ্ধে যুদ্ধে বিশ্বময় জেলেনস্কি
আহত যোদ্ধার পাশে
যুদ্ধ চলছে৷ এ অবস্থায় প্রেসিডেন্টের কার্যালয়ে বসে থাকেন কী করে? জেলেনস্কি দেশের জনগণকে উজ্জীবিত করতে বার্তা দিচ্ছেন, যুদ্ধ বন্ধে কিংবা রাশিয়ার বিরুদ্ধে কঠোর ব্যবস্থা নেয়ার আহ্বান জানাচ্ছেন আন্তর্জাতিক সম্প্রদায়ের প্রতি, হাসপাতালে ছুটে যাচ্ছেন যুদ্ধাহতদের দেখতে৷ওপরের ছবিতে কিয়েভের সামরিক হাসপাতালে আহত এক সৈনিকের পাশে প্রেসিডেন্ট জেলেনস্কি৷
-
রাশিয়ার বিরুদ্ধে যুদ্ধে বিশ্বময় জেলেনস্কি
ভিডিও কনফারেন্সে
গত ১৬ মার্চ যুক্তরাষ্ট্রের প্রতিনিধি পরিষদের সদস্যদের সঙ্গে ভিডিও কনফারেন্সে অংশ নেন জেলেনস্কি৷ ওপরের ছবিতে তারই একটি মুহূর্ত৷
-
রাশিয়ার বিরুদ্ধে যুদ্ধে বিশ্বময় জেলেনস্কি
সাক্ষাৎকার শেষে স্বস্তি
বিভিন্ন সংবাদমাধ্যমকে আগেও অনেক সাক্ষাৎকার দিয়েছেন জেলেনস্কি৷ তবে যুদ্ধ শুরুর পর তার বক্তব্য শোনার আগ্রহ সারা বিশ্বেই অনেক বেড়েছে৷ এক সাক্ষাৎকার শেষে ছবির জন্য পোজ দিচ্ছেন কৌতুক অভিনেতা থেকে প্রেসিডেন্ট হওয়া জেলেনস্কি৷
-
রাশিয়ার বিরুদ্ধে যুদ্ধে বিশ্বময় জেলেনস্কি
কাতেরিয়ানাকে সমবেদনা
রুশ হামলা থেকে বাঁচতে পরিবারের অন্যদের সঙ্গে ভোরজেল শহর থেকে পালাচ্ছিল কাতেরিয়ানা ভ্লাসেঙ্কো৷ কিন্তু শেষ রক্ষা হয়নি৷ আহত হয়ে কাতেরিয়ানা এখন কিয়েভের হাসপাতালে৷ ১৭ মার্চ ফুল নিয়ে তাকে দেখতে গিয়েছিলেন জেলেনস্কি৷ প্রেসিডেন্টকে পাশে পেয়ে মনে বেশ জোর পেয়েছে ১৬ বছর বয়সি কিশোরী৷
-
রাশিয়ার বিরুদ্ধে যুদ্ধে বিশ্বময় জেলেনস্কি
ফোনে জেলেনস্কি
ইউক্রেনে যারা আছেন, তারা প্রতিটি মুহূর্ত কাটাচ্ছেন মৃত্যুর আতঙ্ক নিয়ে৷ যারা দেশ ছেড়েছেন, তারা প্রতিবেশী দেশে অস্তিত্ব রক্ষার লড়াইয়ের মাঝেও নিচ্ছেন দেশের খবর৷ সুযোগ পেলে জেলেনস্কির ভাষণ শোনেন না এমন ইউক্রেনীয় খুঁজে পাওয়া কঠিন৷ ছবিতে মোবাইল ফোনে জেলেনস্কির ভাষণ শুনছেন হাঙ্গেরিতে আশ্রয় নেয়া এক ইউক্রেনীয় নারী৷
-
রাশিয়ার বিরুদ্ধে যুদ্ধে বিশ্বময় জেলেনস্কি
ট্রুডোর সম্মান
গত ১৫ মার্চ ভিডিও কলের মাধ্যমে ক্যানাডার সংসদে ভাষণ দেন জেলেনস্কি৷ ইউক্রেনের প্রেসিডেন্টের বক্তব্য শুরু হতেই আসন ছেড়ে উঠে দাঁড়ান ক্যানাডার প্রধানমন্ত্রী জাস্টিন ট্রুডো৷
-
রাশিয়ার বিরুদ্ধে যুদ্ধে বিশ্বময় জেলেনস্কি
বালিশে জেলেনস্কি
বিশ্বের বিভিন্ন দেশের নানা পণ্যে দেখা যাচ্ছে জেলেনস্কির ছবি৷ চেক প্রজাতন্ত্রের চেসকা লিপা শহরে তার ছবি সম্বলিত বালিশের কাভার গুছিয়ে রাখছেন এক নারী৷
-
রাশিয়ার বিরুদ্ধে যুদ্ধে বিশ্বময় জেলেনস্কি
যুক্তরাষ্ট্রের রাস্তায়
ওয়াশিংটনে রুশ অ্যাম্বাসির পাশের রাস্তার পথ-নির্দেশিকাতেও দেখা যাচ্ছে জেলেনস্কির নাম৷
-
রাশিয়ার বিরুদ্ধে যুদ্ধে বিশ্বময় জেলেনস্কি
পোল্যান্ডের রাস্তায়
পোল্যান্ডের রাস্তায়ও জেলেনস্কির দেখা মিলছে৷ এক শিল্পী হ্যারি পটারের আদলে ম্যুরাল এঁকে জেলেনস্কির নামের প্রথম অক্ষর ‘জেড’ লিখে দিয়েছেন কপালে৷
-
রাশিয়ার বিরুদ্ধে যুদ্ধে বিশ্বময় জেলেনস্কি
জরুরি সেবাকর্মীদের সঙ্গে
ইউক্রেনে যারা যেভাবেই দেশ ও জনগণের জীবন রক্ষায় কাজ করছেন, তাদের সবার পাশেই থাকার চেষ্টা করছেন জেলেনস্কি৷ ওপরের ছবিতে কিয়েভের এক হাসপাতালের জরুরি বিভাগের কর্মীদের সঙ্গে দেখা যাচ্ছে তাকে৷
মায়ের সঙ্গেই ছিলেন নাতালিয়া। কিন্তু আক্রমণ তীব্র হওয়ার পরে তিনি ঠিক করেন নদীর ধার ধরে শহরের দিকে চলে আসবেন। কিন্তু মা রাজি হননি। তিনি বাড়ি ছাড়ার একঘণ্টার মধ্যে তার বাড়ির সামনে বোমাবর্ষণ হয়। একটি স্কুল, দুই প্রতিবেশীর বাড়ি সম্পূর্ণ ধ্বংস হয়ে যায়। তবে তাদের বাড়িটি তখনো বাসযোগ্য ছিল। ফের মাকে নাতালিয়া অনুরোধ করেন তার সঙ্গে চলে আসার জন্য। মা রাজি হন। নাতালিয়া ততক্ষণে শহরে পৌঁছে গেছেন। ১৬ জন মিলে একটি বাড়ির বেসমেন্টে থাকার ব্যবস্থা হয়। নাতালিয়া একের পর এক ট্যাক্সিকে ফোন করতে থাকেন মাকে নিয়ে আসার জন্য। কিন্তু একটি গাড়িও পাননি। সকলেই জানিয়েছেন, গ্যাস নেই। কোথাও গ্যাস পাওয়াও যাচ্ছে না।
শেষপর্যন্ত মাকে তিনি জানাতে বাধ্য হন, ফিরতে পারছেন না। সেটাই মায়ের সঙ্গে তার শেষ কথা। স্বামীর সঙ্গেও আর যোগাযোগ করতে পারছেন না তিনি। জানেন না খারকিভে ছেলের কী অবস্থা। এদিকে তারা যে বাড়িতে আশ্রয় নিয়েছিলেন সেখানেও একের পর এক আক্রমণ চলে। বোমাবর্ষণ হয়। গুলিতে ঝাঁজরা হয়ে গেছে বাড়ির প্রতিটি জানলা। তবে বেসমেন্টে কিছু হয়নি। দুইটি বাথটাবে বরফ জমিয়ে রেখেছিলেন তারা। ওটাই খাওয়ার জল। ১৪ মার্চ মাঝরাতে বাড়ির পিছনে গিয়ে একটি গাড়ি নিয়ে পালান নাতালিয়া এবং তার বন্ধুরা। পালানোর সময় দেখেছেন, গোটা শহর ধ্বংস হয়ে গেছে। একটি বাড়িও আর আস্ত নেই। জায়গায় জায়গায় মৃতদেহ ছড়িয়ে। বারুদের গন্ধ চারিদিকে।
ইগর বুরদিহা/কাটজা থেইস/এসজি