1. কন্টেন্টে যান
  2. মূল মেন্যুতে যান
  3. আরো ডয়চে ভেলে সাইটে যান

উত্তর ২৪ পরগনায় ধর্ষণের অভিযোগ ঢাকতে খুন?

১৪ অক্টোবর ২০২৪

কলকাতার অদূরে উত্তর ২৪ পরগনায় এক নারীকে ধর্ষণের অভিযোগ উঠেছিল পুলিশ কর্মীর বিরুদ্ধে। নির্যাতিতার দেহ উদ্ধার হয়েছে সোমবার।

https://p.dw.com/p/4lkGM
কলকাতা পুলিশের পেট্রোল ভ্যান
উত্তর ২৪ পরগনায় ধর্ষণের ঘটনায় অভিযুক্ত পুলিশ কর্মীছবি: Debajyoti Chakraborty/NurPhoto/IMAGO

কলকাতা থেকে কয়েক ঘণ্টার দূরত্বে উত্তর ২৪ পরগনা জেলা। সেখানে থেকেই আরও এক মর্মান্তিক ঘটনার খবর মিলেছে। অভিযোগের তির এক পুলিশকর্মীর বিরুদ্ধে।

সোমবার উত্তর ২৪ পরগনার একটি বাড়ি থেকে এক নারীর ঝুলন্ত দেহ উদ্ধার হয়েছে। পুলিশ জানিয়েছে, দেহটি পাখার সঙ্গে ঝোলানো ছিল। তবে পুলিশ পৌঁছানোর আগেই বাড়ির লোক দেহটি নামিয়ে নেয়। মৃতা নারীর ভাইয়ের অভিযোগ, আত্মহত্যা নয়, তার দিদিকে খুন করে ঝুলিয়ে দেওয়া হয়েছিল পরিকল্পিতভাবে। এনিয়ে থানায় অভিযোগ জানানোর পর মৃতার স্বামী, এবং এক পুলিশ কর্মী ও তার স্ত্রীকে গ্রেপ্তার করেছে পুলিশ।

ঘটনার সূত্রপাত কিছুদিন আগে। মৃতা নারীর ভাই জানিয়েছেন, তার দিদিকে শ্বশুরবাড়িতে অত্যাচার করা হতো। স্বামী বাইরে থাকতেন কাজের সূত্রে। ফলে দুই সন্তানকে নিয়ে একটি বাড়িতে ভাড়া থাকতেন ওই নারী। এক পুলিশ কর্মীর বাড়ি সেটি। অভিযোগ, কিছুদিন আগে, মাঝ রাতে ওই পুলিশ কর্মী ভিতরে ঢুকে ওই নারীকে ধর্ষণ করে। নির্যাতিতা নারী বিষয়টি নিয়ে পুলিশে যাওয়ার কথা বললে, সালিশি সভায় বিষয়টি মিটিয়ে নেওয়ার কথা বলা হয়। বস্তুত, ওই পুলিশকর্মীর স্ত্রী তৃণমূলের স্থানীয় নেতা। ওই নারীই বিষয়টি সালিশি সভায় মিটিয়ে নেওয়ার প্রস্তাব দেয়।

তিলোত্তমা ধর্ষণ ও হত্যার রাতের ‘সাক্ষী’ চিকিৎসকের বয়ান

কিন্তু নির্যাতিতা তা মানতে চাননি। তিনি পুলিশের কাছে গিয়ে অভিযোগ দায়ের করেন। পুলিশ জানিয়েছে, যে পুলিশ কর্মীর বিরুদ্ধে অভিযোগ, সে পুলিশের গাড়ি চালায়।

ওই ঘটনার পর নির্যাতিতা শ্বশুরবাড়ি  ফিরে যান। তার ভাইয়ের অভিযোগ, যেহেতু ওই পুলিশ কর্মীর স্ত্রী প্রভাবশালী, তারা নির্যাতিতার স্বামী এবং শ্বশুরবাড়ির উপর প্রভাব খাটায়। তারই জেরে নির্যাতিতাকে খুন করে ঝুলিয়ে দেওয়া হয়েছে বলে অভিযোগ।

এই ঘটনাতেও স্থানীয় তৃণমূলের দিকে আঙুল উঠেছে। কেন সালিশিসভায় যাওয়ার চাপ দেওয়া হয়েছিল, এমন সালিশিসভা কি আরো হয়, এই প্রশ্ন উঠছে। স্থানীয় তৃণমূল নেতৃত্ব অবশ্য সংবাদমাধ্যমকে জানিয়েছেন, তারা কোনোভাবেই অপরাধীকে আড়াল করতে চান না। যাকে গ্রেপ্তার করা হয়েছে, সে তৃণমূলের অংশ হলেও তদন্তে কোনোরকম হস্তক্ষেপ করা হবে না। আইন আইনের পথে চলবে।

কিন্তু প্রশ্ন উঠছে, কেন বার বার একই ধরনের ঘটনা ঘটছে। এবং যে কোনো ঘটনাতেই কেন স্থানীয় রাজনীতি জড়িয়ে পড়ছে? উত্তর ২৪ পরগনার বাসিন্দা গায়ক এবং যন্ত্রশিল্পী চক্রপাণি দেব ডয়চে ভেলেকে জানিয়েছেন, ''আসলে ডাক্তাররা যে থ্রেট কালচারের কথা বলছেন, তা কেবল হাসপাতালে সীমাবদ্ধ নয়, সমাজের সর্বত্র তা ছড়িয়ে পড়েছে।'' চক্রপাণির প্রশ্ন, উত্তর ২৪ পরগনাতেই যদি এমন হয়, ধর্ষিতাকে সালিশিসভায় যেতে চাপ দেওয়া হয়, তাহলে গ্রাম গ্রামে কী ঘটছে, তা সহজেই অনুমেয়।

পুলিশ জানিয়েছে, দেহ ময়নাতদন্তে পাঠানো হয়েছে। ধৃতদের জেরা করা হচ্ছে। ময়নাতদন্তের রিপোর্ট পেলে মৃত্যুর কারণ স্পষ্ট হবে। তদন্ত সে পথ ধরেই এগোবে।

এসজি/জিএইচ (পিটিআই)