ক্ষমতা গ্রহণের পর ফের গুরুত্বপূর্ণ সিদ্ধান্তের কথা জানালেন মার্কিন প্রেসিডেন্ জো বাইডেন। বৃহস্পতিবার তিনি জানিয়ে দিলেন, গত ছয় বছর ধরে ইয়েমেনে সৌদি আরব যে লড়াই চালাচ্ছে, অ্যামেরিকা সেই লড়াইয়ে সৌদিকে আর সাহায্য করবে না। বরং শান্তিপূর্ণ পদ্ধতিতে কী ভাবে মীমাংসাসূত্র তৈরি করা যায়, অ্যামেরিকা সেই চেষ্টাই চালাবে।
-
জার্মানির অস্ত্র যাচ্ছে মধ্যপ্রাচ্যের যেসব দেশে
শতকোটি ইউরো
২০২০ সালে মধ্যপ্রাচ্যের বিভিন্ন দেশে ১১৬ কোটি ইউরো বা ১৪১ কোটি ডলারের অস্ত্র রপ্তানির অনুমোদন দিয়েছে জার্মান সরকার৷ এই দেশগুলো ইয়েমেন আর লিবিয়ায় প্রাণঘাতী যুদ্ধে জড়িত ছিল৷ জার্মানির অর্থ মন্ত্রণালয় দেশটির গ্রিন পার্টির এক সদস্যের আবেদনের প্রেক্ষিতে সংসদের নিম্নকক্ষে এই তথ্য জানিয়েছে৷
-
জার্মানির অস্ত্র যাচ্ছে মধ্যপ্রাচ্যের যেসব দেশে
সবচেয়ে বেশি মিসরে
মিসরে গেল বছর ৭৫ কোটি ইউরো বা ৯১ কোটি ডলারের অস্ত্র ও সামরিক সরঞ্জাম বিক্রির অনুমোদন দিয়েছে জার্মান সরকার৷
-
জার্মানির অস্ত্র যাচ্ছে মধ্যপ্রাচ্যের যেসব দেশে
কাতার দ্বিতীয়
তালিকায় থাকা দেশগুলোর মধ্যে দ্বিতীয় সর্বোচ্চ অস্ত্র বিক্রির ছাড় দেয়া হয়েছে তেল সমৃদ্ধ দেশ কাতারে৷ যার পরিমান সাড়ে ৩০ কোটি ইউরো বা প্রায় ৩৭ কোটি ডলার৷
-
জার্মানির অস্ত্র যাচ্ছে মধ্যপ্রাচ্যের যেসব দেশে
আমিরাতের সঙ্গে নতুন সম্পর্ক
২০১৯ সালে জার্মানি-সংযুক্ত আরব আমিরাতের মধ্যে কয়েকশো কোটি ইউরোর অংশীদারিত্ব চুক্তি হয়েছে৷ আবুধাবির ক্রাউন প্রিন্স আল নাহিয়ান ১২ জুন বার্লিন সফরে আসলে নতুন এই সম্পর্কের সূচনা হয়৷ ইয়েমেন, লিবিয়া যুদ্ধে বির্তকিত ভূমিকার কারণে জার্মানির গ্রিন পার্টি এসব চুক্তির বিরোধিতা করে আসলেও গেল বছর পাঁচ কোটি ইউরোর বেশি বা ছয় কোটি ডলারের উপরে অস্ত্র রপ্তানির অনুমোদন দেয়া হয়েছে৷
-
জার্মানির অস্ত্র যাচ্ছে মধ্যপ্রাচ্যের যেসব দেশে
কুয়েতেও কম না
কুয়েতের কাছেও দুই কোটি ৩৪ লাখ ইউরো বা দুই কোটি ৮৪ লাখ ডলারের অস্ত্র বিক্রি করেছে জার্মানি৷ ২০২০ সালেই এই রপ্তানির অনুমোদন দেয়া হয়েছে৷
-
জার্মানির অস্ত্র যাচ্ছে মধ্যপ্রাচ্যের যেসব দেশে
তুরস্কে অস্ত্র বাণিজ্য
কূটনৈতিক নানা ইস্যুতে টানাপোড়েন থাকলেও জার্মানির কাছ থেকে ঠিকই অস্ত্র আমদানি করছে তুরস্ক৷ বিদায়ী বছরে দেশটিতে প্রায় দুই কোটি ৩০ লাখ ইউরোর অস্ত্র রপ্তানির অনুমোদন দিয়েছে জার্মান সরকার৷
-
জার্মানির অস্ত্র যাচ্ছে মধ্যপ্রাচ্যের যেসব দেশে
আরো যারা
এছাড়াও গত বছর জর্ডানে ১৬ লাখ ইউরো আর বাহরাইনে ১৫ লাখ ইউরো মূল্যের অস্ত্র বিক্রির লাইসেন্স দিয়েছিল জার্মান সরকার৷
-
জার্মানির অস্ত্র যাচ্ছে মধ্যপ্রাচ্যের যেসব দেশে
যে কারণে বিতর্ক
এই দেশগুলো ইয়েমেন ও লিবিয়ার একটিতে অথবা দুইটিতেই রক্তক্ষয়ী যুদ্ধে জড়িত৷ ইয়েমেনে সৌদি নেতৃত্বাধীন জোট ২০১৪ সাল থেকে হুথি বিদ্রোহীদের দমনে হামলা চালিয়েছে৷ জোটে আছে আরব আমিরাত, মিসর, কুয়েত, জর্ডান ও বাহরাইন৷ ছয় বছরের যুদ্ধে দুই লাখ ৩৩ হাজার মানুষ প্রাণ হারিয়েছেন৷ অন্যদিকে লিবিয়ার গৃহযুদ্ধে দুইটি বিবদমান পক্ষকে মদত দিয়ে আসছিল কাতার, তুরস্ক এবং আরব আমিরাত ও মিসর৷ যদিও বর্তমানে সেখানে অস্ত্র বিরতি চলছে৷
-
জার্মানির অস্ত্র যাচ্ছে মধ্যপ্রাচ্যের যেসব দেশে
জার্মানি পঞ্চম
বিশ্বে অস্ত্র বাণিজ্যে জার্মানির অবস্থান পঞ্চম৷ স্টকহম ইন্টারন্যাশনাল পিস রিসার্চ ইনস্টিটিউট (সিপ্রি) এর তথ্য অনুযায়ী, এই তালিকার প্রথম চারে আছে যুক্তরাষ্ট্র, রাশিয়া, ফ্রান্স ও চীন৷ ২০১৫ থেকে ২০১৯ সাল পর্যন্ত এই দেশগুলো অস্ত্র রপ্তানির ৭৬ ভাগ সরবরাহ করেছে৷
বৃহস্পতিবার প্রথমে এ বিষয়ে প্রথম বিবৃতি দেন মার্কিন নিরাপত্তা উপদেষ্টা জেক সুলিভান। পরে বাইডেন নিজেই এ বিষয়ে বিস্তারিত জানান। প্রেসিডেন্ট স্পষ্ট জানিয়ে দেন, কোনো ভাবেই আর সৌদি আরবকে যুদ্ধে মদত দেওয়া হবে না। বরং ইয়েমেনে প্রতিনিধি দল পাঠিয়ে এই সমস্যার শান্তিপূর্ণ সমাধানের রাস্তা খোঁজা হবে। তবে এর ফলে সৌদি আরবের সঙ্গে অ্যামেরিকার সম্পর্কের কোনো পরিবর্তন হবে না। অ্যামেরিকা কেবল যুদ্ধ থেকে নিজেকে সরিয়ে নেবে।
২০১৪ সালে ইয়েমেনে ইরান সমর্থিত হুতি বিদ্রোহীরা আক্রমণ শুরু করে। ক্রমশ তারা ইয়েমেনের দখল নিতে শুরু করে। সে সময় সৌদি সহ একাধিক মুসলিম দেশ তার বিরুদ্ধে কার্যত যুদ্ধ ঘোষণা করে। তাদের সাহায্য করে অ্যামেরিকা, যুক্তরাজ্য, জার্মানি এবং ফ্রান্সের মতো পশ্চিমা বিশ্ব। মানবাধিকার সংস্থাগুলির বক্তব্য, দীর্ঘ ছয় বছরে ইয়েমেনে এক লাখেরও বেশি মানুষের মৃত্যু হয়েছে। যুদ্ধের ফলে দেশে তীব্র অনাহার শুরু হয়েছে। সব মিলিয়ে এক ভয়াবহ পরিস্থিতির মুখোমুখি হয়েছে ইয়েমেন। এই অবস্থায় শান্তিপূর্ণ আলোচনাই একমাত্র পথ বলে মনে করছেন বাইডেন।
এদিন রাশিয়াকেও এক হাত নিয়েছেন বাইডেন। বলেছেন, যে ভাবে মার্কিন নির্বাচনে রাশিয়া নাক গলিয়েছে, যে ভাবে নিজের দেশের নাগরিককে বিষ দিয়ে মারার চেষ্টা করেছেন পুটিন, অ্যামেরিকা তা ভালো চোখে দেখছে না। সব কিছুর দিকেই অ্যামেরিকা কড়া নজর রাখছে।
এসজি/জিএইচ (এপি, এএফপি, রয়টার্স)