ইসলামি রাষ্ট্র প্রতিষ্ঠায় ঐক্য চায় সব ইসলামি দল
২৫ আগস্ট ২০২৪২০ আগস্ট তারাকওমী ঘরানার ইসলামি নেতাদের সঙ্গে বৈঠক করেছে। রোববার বিকালে তারা বৈঠক করেছেন ফরায়েজি আন্দোলনের নেতাদের সঙ্গে। কয়েকজন জামায়াত নেতা জানান, তাদের এই বৈঠক অব্যাহত থাকবে। তাদের মূল উদ্দেশ্য হলো ইসলামি দলগুলোকে একটি ছাতার নিচে নিয়ে আসা। আর সেই ঐক্যের মধ্য দিয়ে ইসলামি রাষ্ট্র গড়ার দিকে এগিয়ে যাওয়া।
জামায়াত এক সংবাদ বিজ্ঞপ্তিতে জানিয়েছে, ২০ আগস্টের মতবিনিময়ে অংশগ্রহণ করেন, মাওলানা মুফতি মহিউদ্দীন কাসেমী, মুফতি খুরশিদ আলম কাসেমী, মাওলানা আজিজুল হক ইসলামাবাদী, মুফতি রেজাউল করীম আবরার, মাওলানা আব্দুল মজিদ আতহাবী, মুফতি আজহারুল ইসলাম, মুফতি ফখরুল ইসলাম, মুফতি রাদেশ বিন নূর, মাওলানা মুনির হোসাইন কাসেমী, মাওলানা আবু জাফর কাসেমী, মাওলানা মুফতি আবুল কালাম, মাওলানা শাহ আরিফ বিল্লাহ সিদ্দিকী, মাওলানা আব্দুল মোমেন নাসেরী, মাওলানা আবুল কাশেম কাসেমী, ইসলামি বক্তা মাওলানা আলী হাসান উসামা প্রমুখ।
তাদের উদ্দেশে জামায়াতের আমির ডা. শফিকুর রহমান বলেন, "এখন থেকে আমরা সবাই একে অপরের জন্য। সবাই সিসাঢালা প্রাচীরের ন্যায় ঐক্যবদ্ধ থাকব, ইনশাআল্লাহ। অতীতের কোনো আচরণের জন্য আপনারা যদি সামান্য কষ্ট পেয়ে থাকেন, আল্লাহর ওয়াস্তে আপনাদের কাছে ক্ষমা চাই। আশা করি, আপনারা আমাদেরকে ক্ষমা করে দেবেন।''
ওই বৈঠকে উপস্থিত যারা ছিলেন তাদের মধ্যে হেফাজতে ইসলামের যুগ্ম-মহাসচিব মাওলানা আজিজুল হক ইসলামাবাদী ডয়চে ভেলেকে বলেন, "আমরা মনে করি বাংলাদেশের মানুষ চাইলে এখানে ইসলামি রাষ্ট্র কায়েম হবে। আমরা সেই লক্ষ্যে কাজ করছি। বৈঠকে আমাদের ইসলামি দল ও সংগঠনগনগুলোর ঐক্যবদ্ধভাবে কাজ করারা ব্যাপারে কথা হয়েছে।”
তার কথায়," বাংলাদেশের মানুষ ইসলামি রাষ্ট্র চায়।এখানে ইসলামি বিপ্লব হবে। সেই লক্ষ্যে আমরা কাজ করতে চাই। এজন্য আমাদের ঐক্যবদ্ধ হওয়া প্রয়োজন। তার জন্য এখানো প্রক্রিয়া শুরু হয়নি, তবে হবে।”
তার কথায়, "জামায়াতের আমির জেলে ছিলেন। আমরাও জেলে ছিলাম। তিনি আমাদের চায়ের দাওয়াত দিয়েছিলেন। সেখানেই আমরা যার যার কথা বলেছি। এটা নিয়ে আরো আলোচনা হবে।''
খেলাফত মজলিসের নেতা মুনতাসীর আলী জানান, "আমরা মনে করি ইসলামি দলগুলোর,শক্তিগুলোর সবাই সবার কাছাকাছি থাকা দরকার। এখন আলাপ আলোচনা হচ্ছে। তারপরে আমরা রাজনৈতিক ঐক্যের দিকে যাবো। তবে তার নেতৃত্ব কেমন হবে কারা দেবে সেটা নিয়ে আলোচনা হয়নি।”
ইসলামী বক্তা আলী হাসান ওসামার বক্তব্য দিয়ে ওই বৈঠক শুরু হয়। তিনি জানান, "জামায়াতের আমন্ত্রণে আমরা সেখানে গিয়েছিলাম। সেখানে নানা জন নানা মত দিয়েছে। কেউ ইসলামি রাষ্ট্র প্রতিষ্ঠার কথা বলেছেন। কেউ বলেছেন জামায়াতের নেতৃত্বেই ইসলামি রাষ্ট্র প্রতিষ্ঠা সম্ভব। মূল যে কথা হয়েছে তা হলো আমাদের ঐক্যবদ্ধ থাকতে হবে। আমাদের ওপর দমন পীড়ন নেমে এলে আমরা যেন এক সাথে তার বিরুদ্ধে দাঁড়াতে পারি।”
আরো যারা ইসলামি দল রয়েছে তারাও মনে করে ইসলামি দলগুলোর ঐক্য প্রয়োজন। এরইমধ্যে ঐক্যের ডাক দেয়া হয়েছে। আগামী নির্বাচনে ইসলামি দলগুলো একজোট হয়ে নির্বাচন করতে পারে কি না সেই চিন্তাও আছে। এজন্য বিভিন্ন ইসলামি রাজনৈতিক দলের মধ্যে অনানুষ্ঠানিক যোগাযোগও শুরু হয়েছে।
ইসলামি আন্দোলন বাংলাদেশের সিনিয়র যুগ্ম মহাসচিব মাওলানা গাজী আতাউর রহমান বলেন," ইসলামি দলগুলো তো বাংলাদেশে ইসলামি রাষ্ট্র প্রতিষ্ঠা করতে চায়। এদেশের মানুষের মনোভাবও তাই। এখন একটি পরিবেশ তৈরি হয়েছে সেই লক্ষ্যে ইসলামি দলগুলোর এক সঙ্গে কাজ করার। এটা নিয়ে অনানুষ্ঠানিকভাবে কথা হচ্ছে। আশা করছি নির্বাচনকে সামনে রেখে আমরা আনুষ্ঠানিক আলোচনা শুরু করব। আর প্রথম এটা নির্বাচনের জন্য বৃহত্তর ইসলামি জোট হতে পারে।”
এক প্রশ্নের জবাবে তিনি বলেন," জামায়াতের সঙ্গে আমাদের আনুষ্ঠানিক আলোচনা এখনো হয়নি। তবে হবে।”