1. কন্টেন্টে যান
  2. মূল মেন্যুতে যান
  3. আরো ডয়চে ভেলে সাইটে যান

ইটালিতে লাইফগার্ডের অভাবে সৈকতে দুশ্চিন্তা

১১ অক্টোবর ২০২৪

‘বেওয়াচ' ধারাবাহিকের কল্যাণে সমুদ্র সৈকতে লাইফগার্ডের পেশা সম্পর্কে নানা ধারণা সৃষ্টি হয়েছিল৷ কিন্তু বাস্তবে সেই কাজ যে কতটা কঠিন, ইটালির এক সৈকতের লাইফগার্ডরা তা তুলে ধরছেন৷

https://p.dw.com/p/4lhGi
স্পেনের মায়োর্কার সমুদ্রসৈকত
এমন পেশাকে ঘিরে রোমাঞ্চ সত্ত্বেও ইটালি যথেষ্ট সংখ্যক লাইফগার্ড নিয়োগ করতে হিমসিম খাচ্ছে৷ চলতি বছর প্রশিক্ষণের সময় ৩০ ঘণ্টা থেকে বাড়িয়ে ১০০ ঘণ্টা করার ফলেই মূলত এমন অবস্থা দেখা যাচ্ছেছবি: John-Patrick Morarescu/Zuma/picture alliance

দানিয়েল জার্জায়া লাইফগার্ড হওয়ার স্বপ্ন পূরণ করতে পেরেছেন৷ রিমিনির সমুদ্র সৈকতে তিনি কাজ করেন৷ ২০ বছর বয়সি এই তরুণের জন্য এটাই প্রথম মরসুম৷ তিনি নিজের কাজকে অত্যন্ত গুরুত্ব দেন৷ গত কয়েক মাসে অ্যাড্রিয়াটিক সাগরে প্রশিক্ষণ নিয়ে পেশাগত লাইসেন্স পেয়েছেন৷

এমন পেশাকে ঘিরে রোমাঞ্চ সত্ত্বেও ইটালি যথেষ্ট সংখ্যক লাইফগার্ড নিয়োগ করতে হিমসিম খাচ্ছে৷ চলতি বছর প্রশিক্ষণের সময় ৩০ ঘণ্টা থেকে বাড়িয়ে ১০০ ঘণ্টা করার ফলেই মূলত এমন অবস্থা দেখা যাচ্ছে৷

ইটালির লাইফ সেভিং ফেডারেশন চলতি বছরের গ্রীষ্মে লাইফগার্ডের ঘাটতি সম্পর্কে আগেই সতর্ক করে দিয়েছিল৷ কমপক্ষে দশ শতাংশ ঘাটতির পূ্র্বাভাসও দিয়েছিল৷ দানিয়েলের মতে, সেটা খুবই উদ্বেগের বিষয়৷ তিনি মনে করেন, ‘‘আমাদের কাজের উপর জীবন-মরণ নির্ভর করে৷ সমুদ্রের ধারে কাজ করতে হলে অনেক দায়িত্ব পালন করতে হয়, ঝুঁকিও নিতে হয়৷ দূরত্ব আন্দাজ করতে হয়, সব বয়সের মানুষের উপর নজর রাখতে হয়৷ খুবই কঠিন কাজ৷ অনেক তরুণ-তরুণীর মনে হয়তো ভয় দেখা দিচ্ছে৷ কারণ ডুবন্ত মানুষকে বাঁচানো সহজ কাজ নয়৷ প্রত্যেকটি পদক্ষেপ সঠিক হতে হবে৷''

তৃতীয় প্রজন্মের লাইফগার্ড হিসেবে আলব্যার্তো বাজিনিও সে বিষয়ে অবগত৷ তিনি প্রায় ২৯ বছর ধরে রিমিনি সৈকতে কাজ করছেন৷ তাঁর মতে, লাইফগার্ডদের উপর চাপ বাড়ছে৷ ফলে পরের প্রজন্ম আর সেই কাজে আগ্রহ দেখাচ্ছে না৷ আলব্যার্তো বলেন, ‘‘রেসকিউয়ার হিসেবে আপনি যে সহায়তা দেন, আইনত সেটা আপনার দায়িত্ব৷ সমুদ্রের ধারে সেটা দ্রুত জীবন-মরণের বিষয় হয়ে উঠতে পারে৷ তরুণ লাইফগার্ডরা পরীক্ষা পাশ করার পর তাই সৈকতের বদলে সুইমিং পুলে কাজ করতে পছন্দ করেন৷''

আলব্যার্তো নিজের অভিজ্ঞতা কাজে লাগিয়ে নিজের সহকর্মীদের যেভাবে সম্ভব সাহায্য করেন৷ তাঁর মতে, ‘‘লাইফগার্ড হওয়া একটা মিশন৷ মানুষ সব সময় ভাবে, এরা তো শুধু সমুদ্রের ধারে শুয়ে রোদ পোয়ায়, অনেক সুন্দরী নারী দেখে৷ কিন্তু সেটা মোটেই সত্য নয়৷ এই পেশা বেছে নিলে অনেক দায়িত্ব গ্রহণ করতে হয়৷ কাঁধের উপর বিশাল বোঝা আসে৷''

গত বছরের গ্রীষ্মে রিমিনির লাইফগার্ডরা ৭৫ জন মানুষকে সমুদ্রে ডুবে যাওয়া থেকে বাঁচিয়েছেন৷ বিচ অপারেটর মাউরো ভানি বলেন, ‘‘নতুন লোক পাওয়া কঠিন হয়ে উঠেছে৷ ছাত্ররা আগে গ্রীষ্মকালে সৈকতে কিছু কাজ করে নিজেদের উচ্চশিক্ষার খরচ জোগাড় করতো৷ কিন্তু আজকাল জুলাই মাসের শেষ পর্যন্ত তাদের পরীক্ষা থাকে, সেপ্টেম্বরের শুরুতেও থাকে৷ তাই তাদের পড়াশোনা করতে হয়, কাজ করতে পারে না৷''

দানিয়েল ফুল টাইম কাজ করেন৷ সেই সিদ্ধান্ত নিয়ে তিনি খুশি বলেই মনে হয়৷ তিনি বলেন, ‘‘যারা এই কাজ করে, তারা জানে জমি ও পানিতে কী করতে হয়৷ আমি শুধু এই পেশা বেছে নেওয়ার পরামর্শ দিতে পারি৷''

গুস্তাভ হোফার/এসবি