ইরান থেকে শত শত ড্রোন পেয়েছে রাশিয়া: হোয়াইট হাউস
হোয়াইট হাউসের দাবি, রাশিয়া ইরান থেকে শত শত একমুখী আক্রমণকারী ড্রোন পেয়েছে যা দিয়ে তারা ইউক্রেনে হামলা চালাচ্ছে৷
প্রকাশিত নয়া তথ্যের উদ্ধৃতি দিয়ে হোয়াইট হাউস জানায়, আনক্রুড এরিয়াল ভেহিকেল (ইউএভি) নামে পরিচিত এই ড্রোন ইরানে তৈরি করা হয়৷ কাস্পিয়ান সাগর পেরিয়ে পাঠানো এই ড্রোনগুলো ইউক্রেনের বিরুদ্ধে রুশ বাহিনী ব্যবহার করেছে৷
হোয়াইট হাউসের মুখপাত্র জন কিরবি এক বিবৃতিতে বলেছেন, ‘‘রাশিয়া সাম্প্রতিক সপ্তাহগুলোতে কিয়েভে হামলা চালাচ্ছে৷ ইউক্রেনের জনগণকে আতঙ্কিত করতে ইরানি ইউএভি ব্যবহার করছে এবং রাশিয়া-ইরান সামরিক অংশীদারিত্ব আরও গভীর হচ্ছে বলে মনে হচ্ছে৷ আমরা উদ্বিগ্ন ইরানি ইউএভি তৈরি করতে ইরানের সঙ্গে কাজ করছে রাশিয়া৷ তারা এগুলো রাশিয়ায় বসেই বানাচ্ছে৷ রাশিয়াকে সাহায্য করছে ইরান।''
কিরবি বলেন, যুক্তরাষ্ট্রের কাছে তথ্য রয়েছে, রাশিয়া ইরানের কাছ থেকে একটি ড্রোন তৈরির কারখানা বানাতে প্রয়োজনীয় উপকরণ পাচ্ছে যা পরের বছরের শুরুতে সম্পূর্ণরূপে চালু হতে পারে৷
তার দাবি, ‘‘রাশিয়ার আলাবুগা নামে বিশেষ অর্থনৈতিক অঞ্চলে এই ইউএভি উৎপাদনকেন্দ্রের পরিকল্পিত অবস্থানের স্যাটেলাইট চিত্র আমরা প্রকাশ করছি৷''
মার্কিন যুক্তরাষ্ট্র এর আগে রাশিয়াকে ড্রোন সরবরাহের জন্য একটি প্রতিরক্ষা প্রস্তুতকারকের ইরানি কর্মকর্তাদের নিষেধাজ্ঞা দিয়েছে৷ ইরান রাশিয়ায় ড্রোন পাঠানোর কথা স্বীকার করেছে৷ তবে তারা বলেছে যে, সেগুলি ফেব্রুয়ারির আগে পাঠানো হয়েছিল৷
এদিকে ইউক্রেনে ইরানি ড্রোন ব্যবহার করার কথা অস্বীকার করেছে মস্কো৷ হোয়াইট হাউসের এক কর্মকর্তা জানান, আগস্ট থেকে ইরান কয়েকশ ড্রোন রাশিয়াকে হস্তান্তর করেছে৷
কিরবি বলেন, ইরান রাশিয়ার কাছ থেকে হেলিকপ্টার এবং রাডারসহ বিলিয়ন ডলার মূল্যের সামরিক সরঞ্জাম চেয়েছে৷
তিনি বলেন, ‘‘রাশিয়া ইরানকে ক্ষেপণাস্ত্র, ইলেক্ট্রনিক্স এবং বিমান প্রতিরক্ষা সহ অভূতপূর্ব প্রতিরক্ষা সহযোগিতার প্রস্তাব দিয়ে আসছে৷''
তার কথায়, ‘‘এটি একটি পূর্ণ-স্কেল প্রতিরক্ষা অংশীদারিত্ব যা ইউক্রেনের জন্য, ইরানের প্রতিবেশীদের জন্য এবং আন্তর্জাতিক সম্প্রদায়ের জন্য ক্ষতিকারক৷ আমরা জনগণের সঙ্গে এ সব তথ্য ভাগ করে নেবো৷ তাদের এই ধরনের কাজে আমরা ব্যাঘাত ঘটাবো৷''
কিরবি বলেন, ড্রোন স্থানান্তর জাতিসংঘের নিয়ম লঙ্ঘন করে এবং যুক্তরাষ্ট্র দুই দেশকে এর জন্য জবাবদিহি করতে বলবে৷
ব্রিটেন, ফ্রান্স, জার্মানি, মার্কিন যুক্তরাষ্ট্র এবং ইউক্রেন বলেছে যে, রাশিয়াকে ইরানের তৈরি ড্রোন সরবরাহ করা ইরানের পরমাণু চুক্তিকে সমেত ২০১৫ সালের জাতিসংঘের নিরাপত্তা পরিষদের প্রস্তাব লঙ্ঘন করেছে।
২০১৫ সালের জাতিসংঘের প্রস্তাবের অধীনে ইরানের উপর অস্ত্র নিষেধাজ্ঞা ২০২০ সালের অক্টোবর পর্যন্ত চালু ছিল৷
ইউক্রেন এবং পশ্চিমা শক্তিগুলির যুক্তি, রেজোলিউশনে ২০২৩ সালের অক্টোবর পর্যন্ত ক্ষেপণাস্ত্র এবং সম্পর্কিত প্রযুক্তির উপর বিধিনিষেধ অন্তর্ভুক্ত রয়েছে এবং ড্রোনের মতো উন্নত সামরিক ব্যবস্থা রপ্তানি এবং ক্রয়ও তার অন্তর্ভুক্ত হতে পারে৷
জাতিসংঘে ইরানি এবং রুশ মিশনগুলি মার্কিন অভিযোগের বিষয়ে মন্তব্য করার অনুরোধের পর কোনো সাড়া দেয়নি৷
কিরবি বলেন, ‘‘আমরা ইউক্রেনে ব্যবহারের জন্য রাশিয়ার কাছে ইরানের সামরিক সরঞ্জাম হস্তান্তরের জড়িত কাজে নিষেধাজ্ঞা আরোপ অব্যাহত রাখব৷ ''
তিনি বলেন, শুক্রবার জারি করা একটি নতুন মার্কিন পরামর্শের লক্ষ্য ‘‘ইরানের ইউএভি প্রোগ্রাম দ্বারা সৃষ্ট ঝুঁকি খতিয়ে দেখা৷ ইরান যে অবৈধ পদ্ধতি ব্যবহার করে তা আরো ভালভাবে বোঝা৷ ব্যবসা এবং অন্যান্য সরকারকে এ বিষয়ে সহায়তা করা৷''
প্রসেসর এবং কন্ট্রোলারের মতো ইলেক্ট্রনিক্সসহ ড্রোনের উন্নতির জন্য ইরান যা চায়. সেগুলিকে যুক্তরাষ্ট্রের পরামর্শে হাইলাইট করা হয়েছে৷
আরকেসি/আরআর (রয়টার্স)