ইউক্রেনের সামরিক শক্তির উন্নতির দাবি করলেন জেলেনস্কি
১২ মার্চ ২০২৪মার্কিন সামরিক সহায়তার অভাবে ইউক্রেনের সেনাবাহিনী রাশিয়ার হামলা মোকাবিলা করার ক্ষমতা ধীরে ধীরে হারাচ্ছে বলে যখন জল্পনাকল্পনা চলছে, ঠিক তখনই প্রেসিডেন্ট ভোলোদিমির জেলেনস্কি নিজের দেশের সামরিক শক্তি সম্পর্কে ইতিবাচক বার্তা দিলেন৷ ফ্রান্সের বিএফএম টেলিভিশনকে দেওয়া সাক্ষাৎকারে তিনি উলটে বলেন, গত তিন মাস আগের তুলনায় যুদ্ধক্ষেত্রে ইউক্রেনের অবস্থান অনেক মজবুত হয়েছে৷ ফলে পূবে রাশিয়া আর নতুন করে জমি দখল করতে পারছে না৷ জেলেনস্কি অবশ্য কয়েকটি নির্দিষ্ট সমস্যারও উল্লেখ করেন৷ বিশেষ করে গোলাবারুদের সরবরাহ কমে চলায় সৈন্যরা সমস্যায় পড়ছে৷ সেইসঙ্গে রাশিয়ার দূর পাল্লার অস্ত্র ও বিশাল সংখ্যায় ড্রোন হামলাও পরিস্থিতি কঠিন করে তুলছে বলে ইউক্রেনের প্রেসিডেন্ট স্বীকার করেন৷
জেলেনস্কি ইউক্রেনের সেনাবাহিনীর বর্তমান সাফল্যে সন্তুষ্ট হলেও বিদেশ থেকে যথেষ্ট সহায়তার অভাবে পরিস্থিতির দ্রুত অবনতির আশঙ্কাও উড়িয়ে দিচ্ছেন না৷ অনেক সৈন্য হারিয়ে রাশিয়া যুদ্ধক্ষেত্রে আপাতত আর অগ্রসর হতে পারছেন না৷ ভবিষ্যতেও সেই সম্ভাবনা দূর করার লক্ষ্যে ইউক্রেন মোট প্রায় এক হাজার কিলোমিটার দীর্ঘ তিনটি সুরক্ষার বলয় তৈরি করছে, যা অনেকটা দুর্গের মতো কাজ করবে৷ মজবুত সেই ‘ফর্টিফিকেশন লাইন' রাশিয়ার যে কোনো অস্ত্র দিয়েও ধ্বংস করা যাবে না বলে জেলেনস্কি দাবি করেন৷ ফ্রান্সের প্রেসিডেন্ট এমানুয়েল মাক্রোঁ সম্প্রতি প্রয়োজনে ইউক্রেনে ন্যাটোর স্থলবাহিনী পাঠানোর সম্ভাবনার কথা বলে যে বিতর্ক সৃষ্টি করেছেন, জেলেনস্কি সে বিষয়েও মন্তব্য করেন৷ তাঁর মতে, ইউক্রেনের সেনেবাহিনী যতকাল সংগ্রাম চালিয়ে যেতে পারবে, ফ্রান্সের সেনাবাহিনী ফ্রান্সেই থাকতে পারবে৷
মার্কিন কংগ্রেসে রাজনৈতিক দ্বন্দ্বের কারণে ইউক্রেনের জন্য প্রায় ছয় হাজার কোটি ডলার অংকের সামরিক সহায়তার প্যাকেজ আটকে থাকায় যে সংকটের সৃষ্টি হয়েছে, তা অন্তত আংশিকভাবে দূর করতেও ন্যাটো সহযোগীদের আরো সক্রিয় হওয়ার ডাক দিয়েছেন পোল্যান্ডের প্রেসিডেন্ট আনজেই দুদা৷ সোমবার তিনি প্রতিরক্ষা খাতে ব্যয় আরো বাড়ানোর আহ্বান জানান৷ তাঁর মতে, ন্যাটোর লক্ষ্যমাত্রা অনুযায়ী জিডিপি-র দুই শতাংশ অর্থ বর্তমানে যথেষ্ট নয়৷ কমপক্ষে তিন শতাংশ ব্যয় করলে তবেই বর্তমান পরিস্থিতি সামাল দেওয়া সম্ভব৷ উল্লেখ্য, পোল্যান্ডের সামরিক ব্যয় ইতোমধ্যে জিডিপি-র প্রায় চার শতাংশ ছুঁয়েছে৷
মঙ্গলবার দুদা ও পোল্যান্ডের প্রধানমন্ত্রী ডোনাল্ড টুস্ক হোয়াইট হাউসে মার্কিন প্রেসিডেন্ট জো বাইডেনের সঙ্গে সাক্ষাৎ করছেন৷ দুই প্রতিদ্বন্দ্বীর সঙ্গে একসঙ্গে সাক্ষাৎ করে বাইডেন পশ্চিমা জোটের ঐক্যের বার্তা দিতে চান৷ তবে অভ্যন্তরীণ রাজনীতিতে দুদা ও টুস্কের প্রবল দ্বন্দ্ব সত্ত্বেও ইউক্রেনের প্রতি সহায়তার প্রশ্নে তাঁদের অবস্থানে কোনো পার্থক্য নেই৷ তবে দুদা ইউরোপে আরো মার্কিন সৈন্য পাঠানোর আর্জি জানালেও বাইডেন আপাতত তার কোনো প্রয়োজন দেখছেন না৷
এসবি/কেএম (ডিপিএ, এএফপি)