1. কন্টেন্টে যান
  2. মূল মেন্যুতে যান
  3. আরো ডয়চে ভেলে সাইটে যান

ইউক্রেনের শরণার্থী নেয়ার প্রস্তুতি নিচ্ছে পোল্যান্ড

২০ ফেব্রুয়ারি ২০২২

ইউক্রেনের সর্বাত্মক যুদ্ধের আশঙ্কা বেড়ে চলেছে৷ এর পরিপ্রেক্ষিতে সব ধরনের প্রস্তুতি নিচ্ছে প্রতিবেশী রাষ্ট্র পোল্যান্ড৷

https://p.dw.com/p/47Je0
ছবি: APTN

এরই মধ্য়ে সীমান্তবর্তী বেশ কিছু শহরে যুদ্ধ থেকে পালিয়ে আসা সম্ভাব্য শরণার্থীদের আশ্রয়ের জন্য আশ্রয়কেন্দ্রও প্রস্তুত করা হচ্ছে৷

সকল শহরের মেয়রদের শরণার্থী কেন্দ্রে রূপ দেয়া যেতে পারে, এমন সম্ভাব্য সব ভবনকে চিহ্নিত করার আহ্বান জানিয়েছে পোলিশ সরকার৷ ইউক্রেন সীমান্ত থেকে মাত্র ১০ কিলোমিটার দূরের শহর প্শেমিশিল শহরের মেয়র ভয়েটশেখ বাকুন জানান, রাষ্ট্র শরণার্থীদের ব্যয়ভার গ্রহণের কথা জানিয়েছে৷ কিন্তু সম্ভাব্য শরণার্থী আশ্রয়কেন্দ্রগুলোকে সংস্কারের জন্য কোনো অর্থ বরাদ্দ করা হয়নি৷

বাকুন অবশ্য ইউক্রেনে সর্বাত্মক যুদ্ধের আশঙ্কা তেমন একটা দেখছেন না৷ ডয়চে ভেলেকে তিনি বলেন, ‘‘আমি আশা করি খারাপ কিছু ঘটবে না৷ আমার মনে হয় সত্যি সত্যি আক্রমণ করার চেয়ে অন্যদের মনে ভয় তৈরি করাই রাশিয়ার আসল উদ্দেশ্য৷''

ইউক্রেনে সম্ভাব্য যুদ্ধ নিয়ে পোলিশ সরকারের কোনো প্রস্তুতি না থাকার সমালোচনা করেছেন দেশটির অনেক নাগরিক৷ তবে দেশটির স্বরাষ্ট্র উপমন্ত্রী মাচেই ভাসিক বলেছেন, ‘‘আমরা নীরবে কাজ করে চলেছি৷ কিন্তু মানুষের মনে কোনো প্রতিক্রিয়া তৈরি করতে চাইনি বলে আমরা কোনো আনুষ্ঠানিক ঘোষণা দিচ্ছি না৷''

পোলিশ প্রধানমন্ত্রী মাটেউশ মোরাভিয়েস্কি সম্ভাব্য শরণার্থীরা যাতে যানবাহন, শিক্ষা, চিকিৎসার মতো মৌলিক সেবা নিতে পারেন, সে ব্যবস্থা গ্রহণ করতে চান৷ পরিবার ও সামাজিক নীতি বিষয়ক মন্ত্রণালয় ইউক্রেনের শরণার্থী শিশুদের সেবা ও মানসিক সহায়তা দেয়ার ঘোষণাও দিয়েছে৷ রাষ্ট্রীয় এক সংবাদমাধ্যমকে দেয়া মন্তব্যে পোল্যান্ডে কয়েক কোটি ইউক্রেনীয় শরণার্থী আসলে পারে বলে আশঙ্কা প্রকাশ করেছেন পোলিশ প্রেসিডেন্ট আন্ডজেই ডুডার স্বরাষ্ট্র সচিব আন্ডজেই ডেরা৷ তিনি বলেন, ‘‘পোল্যান্ড যত বেশি সম্ভব শরণার্থী গ্রহণ করবে, কিন্তু সবাইকে নেয়া হয়তো সম্ভব হবে না৷''

নতুন আসা শরণার্থীদের অনেকে স্থায়ী বসবাসের জন্যও পোল্যান্ডকে বেছে নিতে পারেন৷ বর্তমানে দেশটিতে ১০ লাখেরও বেশি ইউক্রেনিয়ান বাস করেন৷ ২০১৪ সালে রাশিয়ার ক্রাইমিয়া দখল এবং পরবর্তীতে ডোনবাস এলাকায় যুদ্ধ শুরুর পর তারা পোল্যান্ডে পালিয়ে আসেন৷

যৌথ মহড়া চলবে: বেলারুশ

এদিকে ইউক্রেন সীমান্তে রাশিয়ার সঙ্গে যৌথ সামরিক মহড়া চালিয়ে যাওয়ার ঘোষণা দিয়েছে বেলারুশ৷ রোববার এই মহড়া শেষ হওয়ার কথা থাকলেও রুশপন্থি বিচ্ছিন্নতাবাদীদের দখলে থাকা পূর্ব ইউক্রেনের ডোনবাস অঞ্চলে সংঘাত ছড়িয়ে পড়ার পর বেলারুশে মহড়ার সময়ও বাড়ানোর ঘোষণা এলো৷

বেলারুশের প্রতিরক্ষামন্ত্রী ভিক্টর খ্রেনিন এক বিবৃতিতে জানিয়েছেন, ‘‘ইউনিয়ন স্টেটের (বেলারুশ ও রাশিয়া) সৈন্যদের প্রস্তুতি পর্যবেক্ষণের সিদ্ধান্ত নিয়েছেন বেলারুশ ও রাশিয়ার দুই প্রেসিডেন্ট৷

ন্যাটোর দেয়া তথ্যমতে, রাশিয়ার ইউক্রেন সীমান্তে দেড় লাখের বেশি রুশ সৈন্যের উপস্থিতি ছাড়াও বেলারুশে ইউক্রেন সীমান্তেও আরো ৩০ হাজার রুশ সৈন্য মোতায়েন রয়েছে৷

বড় ধরনের সংঘাত এড়ানোর আহ্বান

আগ্রাসন ঠেকানোর চেষ্টা করতে ইউক্রেন ও রাশিয়ার প্রেসিডেন্টের সঙ্গে ফোনে কথা বলেছেন ফরাসি প্রেসিডেন্ট এমানুয়েল ম্যাক্রোঁ৷ রোববার রুশ প্রেসিডেন্ট ভ্লাদিমির পুটিনের সঙ্গে প্রায় দুই ঘণ্টা ফোনে কথা বলেন ম্যাক্রোঁ৷ এই আলোচনায় দুই নেতা সংঘাতের বদলে শান্তিপূর্ণ সমাধানের পথ খোঁজার ব্যাপের সম্মত হয়েছেন বলে জানানো হয়েছে ফরাসি প্রেসিডেন্টের দপ্তর থেকে৷ শিগগিরই রুশ-ফরাসি পররাষ্ট্রমন্ত্রীরা বৈঠক করার ব্যাপারেও সিদ্ধান্ত হয়েছে৷

তবে এই ফোনালাপের বিষয় সম্পর্কে ক্রেমলিনের তরফ থেকে জানানো বক্তব্য়ে পূর্ব ইউক্রেনে সামরিক উত্তেজনার জন্য কিয়েভকে দায়ী করা হয়েছে৷ নরম্যান্ডি ফরম্যাটে আলোচনার ব্যাপারে সম্মত হওয়ার কথাও জানিয়েছে মস্কো৷ এই আলোচনায় জার্মান-ফরাসি মধ্যস্থতায় ইউক্রেন ও রাশিয়ার মধ্যে কূটনৈতিক সমাধানের পথ বের করার চেষ্টা করা হবে

ম্যাক্রোঁর সঙ্গে ফোনালাপে রাশিয়ার ‘উসকানির ফাঁদে' পা না দেয়ার কথা জানিয়েছেন ইউক্রেনের প্রেসিডেন্ট ভোলোদিমির জেলেনস্কি৷ আলোচনার মাধ্যমে এর সমাধানের ব্যাপারে তার আগ্রহও প্রকাশ করেছেন তিনি৷

এর আগে সরাসরি বৈঠকের জন্য রুশ প্রেসিডেন্ট পুটিনতকে আহ্বান জানান ইউক্রেনের প্রেসিডেন্ট জেলেনস্কি৷

এডিকে/এআই (এপি, এএফপি, ইন্টারফ্যাক্স, রয়টার্স)