1. কন্টেন্টে যান
  2. মূল মেন্যুতে যান
  3. আরো ডয়চে ভেলে সাইটে যান
সাধারণ মানুষ আর্সেনিকের অস্তিত্ব টের পায় নাছবি: AP

আর্সেনিক পরীক্ষায় যুগান্তকারী পরিবর্তনের আশায় বিজ্ঞানীরা

৯ মে ২০১১

বিশুদ্ধ পানির অপর নাম জীবন, যদি তাতে আর্সেনিক না থাকে৷ বাংলাদেশের বহু মানুষ এই বিষে আক্রান্ত৷ জটিল ও ব্যয়বহুল হওয়ায় আর্সেনিক পরীক্ষাও করাতে পারছেন না অনেকে৷ তবে জার্মান বিজ্ঞানীদের নতুন এক পরীক্ষা আশার আলো নিয়ে এনেছে৷

https://p.dw.com/p/11Bt0

নীরব ঘাতক

বাংলাদেশের সবগুলো গ্রামেই সকাল বেলা দেখা যায় এই ধরণের দৃশ্য৷ টিউবওয়েল থেকে পানি নেওয়ার জন্য কলতলায় ভীড় করেছে গ্রামের মেয়েরা এবং শিশুরা৷ শহরাঞ্চলের কথা বাদ দিলে বাংলাদেশের বেশিরভাগ মানুষ এখনও এই টিউবওয়েলের পানির ওপর নির্ভরশীল৷ স্বাধীনতার পর জাতিসংঘের উদ্যোগে গোটা দেশে বিশুদ্ধ পানির জন্য এই টিউবওয়েল বসানোর উদ্যোগ শুরু হয়৷ কিন্তু বিশুদ্ধ পানির সঙ্গে সঙ্গে এক নীরব ঘাতকও চলে এসেছে এই টিউবওয়েলের মধ্য দিয়ে৷ তার নাম আর্সেনিক৷ বিশ্ব স্বাস্থ্য সংস্থার মতে, বর্তমানে বাংলাদেশের প্রায় এক তৃতীয়াংশ মানুষ এই আর্সেনিকের ছোবলে আক্রান্ত৷ কেবল বাংলাদেশ নয় আরও অনেক জায়গাতেও ভূগর্ভস্থ পানির মাধ্যমে আর্সেনিকে আক্রান্ত হচ্ছে মানুষ৷ কিন্তু বাংলাদেশে এই পরিস্থিতি গোটা বিশ্বের মধ্যে ভয়াবহতম৷

পরীক্ষায় জটিলতা

আর্সেনিক খালি চোখে দেখা যায় না, এর কোন রং নেই এমনকি নেই কোন স্বাদ কিংবা গন্ধ৷ তাই সাধারণ মানুষ এর অস্তিত্ব টের পায় না৷ আর শরীরে আর্সেনিকের বিষক্রিয়ার লক্ষণ আসতেও ১০ থেকে ২০ বছর সময় লাগে৷ বিজ্ঞানীদের মতে, বাংলাদেশের ভৌগলিক অবস্থানও ভূগর্ভস্থ পানিতে আর্সেনিক বিষক্রিয়ার অন্যতম কারণ৷ সাধারণ যে রাসায়নিক পরীক্ষার মধ্য দিয়ে টিউবওয়েলের পানিতে আর্সেনিক ধরা যায়, সেটা বেশ ব্যয়বহুল৷ তাই সহজ এবং কম খরচে আর্সেনিক পরীক্ষার উপায় বের করাটা খুবই প্রয়োজনীয়৷

আর এক্ষেত্রে এগিয়ে এসেছে জার্মানির লাইপজিগে অবস্থিত হেল্মহোল্টজ সেন্টার ফর এনভায়রনমেন্টাল রিসার্চ৷ এখানকার বিজ্ঞানী হাউকে হার্মস এক নতুন পরীক্ষা পদ্ধতি বের করেছেন যার মাধ্যমে সহজেই পানিতে আর্সেনিকের উপস্থিতি ধরা পড়া সম্ভব৷ সম্প্রতি তাঁর নেতৃত্বে জার্মান একদল বিজ্ঞানী বাংলাদেশ সফর করেন৷ ঢাকা থেকে অদূরে তারা যান একটি গ্রামে, এবং সেখানকার টিউবওয়েলের পানি পরীক্ষা করে দেখেন৷

Weltwassertag am 22. März
বাংলাদেশের সবগুলো গ্রামেই সকাল বেলা দেখা যায় এই ধরণের দৃশ্যছবি: picture-alliance/ dpa/dpaweb

নতুন পদ্ধতি

সাধারণত পানিতে ব্যাকটেরিয়ার উপস্থিতি ধরার জন্য কেমিকেল টেস্ট বা রাসায়নিক পরীক্ষা চালানো হয়৷ কিন্তু অনুজীব বিজ্ঞানী হাইকে হার্মস তার পরিবর্তে বায়োসেন্সর পদ্ধতি ব্যবহার করছেন ব্যাকটেরিয়ার উপস্থিতি ধরার জন্য৷ তিনি মনে করছেন বায়োডিটেকটিভ পদ্ধতি ব্যবহার করে কেমিকেল টেস্টের চেয়ে দ্রুত এবং সহজে আর্সেনিক ব্যাকটেরিয়ার উপস্থিতি ধরা সম্ভব৷ নতুন এই পরীক্ষা পদ্ধতি নিয়ে হাইকে হার্মস বললেন, ‘‘যখন আমরা ল্যাবরেটরিতে ব্যাকটেরিয়াগুলো নিয়ে পরীক্ষা নিরীক্ষা করি, তখন সেগুলো বেশ সতেজ থাকে৷ সেগুলোকে শুকানো হয়না এবং বরফে জমিয়েও রাখা হয় না৷ এগুলোর একটি প্রতিক্রিয়া রয়েছে৷ আমার কাজ হচ্ছে ব্যাকটেরিয়ার এই প্রতিক্রিয়াগুলোকে পর্যবেক্ষণ করা এবং দ্রুত সমস্যার সমাধান বের করা৷ এবং এই সমাধান হতে হবে গবেষণাগারে পরীক্ষা থেকে প্রাপ্ত সমাধানের কাছাকাছি৷''

18.07.2006 projekt zukunft fragezeichen
এই ছবিটিকেই খুঁজছেন আপনি৷ ছবিটির তারিখ 09.05.2011 এবং কোড: 8024 পাঠিয়ে দিন bengali@dw-world.de ঠিকানায় অথবা এসএমএস করুন 0088 0173 030 2205, ভারত: 0091 98309 97232 নম্বরে৷ এই প্রতিযোগিতায় অংশ নিয়ে জিততে পারেন আকর্ষণীয় সারপ্রাইজ গিফট…ছবি: DW-TV

ব্যাকটেরিয়ার ব্যবহার

আর্সেনিক পরীক্ষার বেলায় জার্মান বিজ্ঞানীরা এক ধরণের বিশেষ ব্যাকটেরিয়া ব্যবহার করেন যা আর্সেনিকের সংস্পর্শে আসা মাত্র জ্বলে ওঠে৷ এই সব ব্যাকটেরিয়ার মধ্যে রয়েছে লুমিনাস রিপোর্টার প্রোটিন যা আর্সেনিকের বেলায় খুবই সংবেদনশীল৷ বিজ্ঞানী হাইকে হার্মসের মতে, পরিবেশের মধ্যে যে কোন ধরণের পরিবর্তন হলে ব্যাকটেরিয়ার মধ্যেও তার প্রভাব পড়ে৷ ব্যাকটেরিয়াগুলো তাদের নড়াচড়ার মধ্য দিয়ে সেই পরিবর্তনের খবর জানিয়ে দেয়৷ তাই ব্যাকটেরিয়াকে যদি আরো সুক্ষ্মভাবে পর্যবেক্ষণ করা যায় এবং তাদের এই প্রতিক্রিয়ার পরিবর্তনগুলোকে চিহ্নিত করা যায় তাহলে সেটি অন্যান্য সাধারণ রাসায়নিক পরীক্ষার চেয়ে অনেক বেশি কার্যকর হবে৷ পানিতে আর্সেনিক পরীক্ষার বেলাতে তিনি তার এই ধারণা প্রমাণ করার চেষ্টা করছেন৷ বিজ্ঞানী হার্মসের আশা, অদূর ভবিষ্যতে এই বায়োটেকনিক হবে সবচেয়ে আধুনিক এবং কার্যকর পরীক্ষা পদ্ধতি৷

এই মুহূর্তে এই পদ্ধতিটি নিয়ে আরও গবেষণা করে যাচ্ছেন হাইকে হার্মস৷ তবে অদূর ভবিষ্যতে এটি প্রেগনেন্সি টেস্টের মতই অত্যন্ত সহজ এবং ব্যয়সাশ্রয়ী হয়ে উঠবে৷ ফলে গ্রামের মানুষকে আর আর্সেনিক পরীক্ষার জন্য অন্য কারো ওপর নির্ভর করতে হবে না৷

প্রতিবেদন: রিয়াজুল ইসলাম

সম্পাদনা: আবদুল্লাহ আল-ফারূক

স্কিপ নেক্সট সেকশন ডয়চে ভেলের শীর্ষ সংবাদ

ডয়চে ভেলের শীর্ষ সংবাদ

প্রতীকী ফাইল ফটো

জেসমিনের পরিবারের কোনো দাবি নেই, মামলাও করবে না

স্কিপ নেক্সট সেকশন ডয়চে ভেলে থেকে আরো সংবাদ
প্রথম পাতায় যান