চীনকে সামনে রেখে বিশ্বের সব চেয়ে বেশি দেশের বাণিজ্য চুক্তি সই করল এশিয়া প্যাসিফিকের ১৫টি দেশ। যা নিয়ে নতুন রাজনৈতিক বিতর্ক শুরু হয়েছে। বিভিন্ন মহলে প্রশ্ন উঠেছে, এই চুক্তি কি আসলে এশিয়া প্যাসিফিকে চীনের শক্তি বৃদ্ধি করল? বস্তুত, কোনো কোনো বিশেষজ্ঞের মতে, এই চুক্তির মাধ্যমে অ্যামেরিকা বিরোধী একটি ব্লক তৈরি করে রাখল চীন। ফলে চুক্তিটি যতটা অর্থনৈতিক, তার চেয়ে অনেক বেশি রাজনৈতিক বলে মনে করছেন বিশেষজ্ঞরা।
প্রথমেই দেখে নেওয়া যাক চুক্তিটি আসলে কী? চুক্তিটির নাম রিজিওনাল কমপ্রিহেনসিভ ইকোনমিক পার্টনারশিপ (আরসিইপি)। চীন-সহ এশিয়া প্যাসিফিকের ১৫টি দেশ এতে সই করেছে। যার মধ্যে দক্ষিণ এশিয়ার থাইল্যান্ড, মালয়েশিয়া, সিঙ্গাপুর, ফিলিপাইন্সের মতো দেশগুলি যেমন আছে, তেমন লাও, কাম্বোডিয়ার মতো অপেক্ষাকৃত গরিব দেশগুলিও আছে। অন্য দিকে ফার ইস্ট বা অতি পূর্বের অস্ট্রেলিয়া, জাপান এবং নিউজিল্যান্ডও এই চুক্তিতে সই করেছে। রয়েছে দক্ষিণ কোরিয়া, ব্রুনেইয়ের মতো দেশ। বলা হচ্ছে, দুই দশমিক দুই বিলিয়ন মানুষের অর্থনীতি নির্ভর করবে এই চুক্তির উপর। লেনদেন হবে প্রায় ছয় দশমিক তিন ট্রিলিয়ন মার্কিন ডলারের। সংখ্যাতত্ত্বের বিচারে চুক্তিটি এক ব্যাপক অর্থনৈতিক চুক্তি, সন্দেহ নেই। কিন্তু বাস্তবে তার প্রভাব কতটা, তা নিয়ে প্রশ্ন থেকে যাচ্ছে।
-
বাণিজ্য যুদ্ধ হলে কী ক্ষতি হবে?
বাণিজ্য যুদ্ধের অর্থ কী?
কোনো দেশ কোনো এক বা একাধিক পণ্য আমদানির উপর কর, শুল্ক বা অন্য কোনো আর্থিক বোঝা চাপালে বাকি দেশগুলিও পালটা পদক্ষেপ নিতে পারে৷ বিশেষ করে অ্যামেরিকা ও চীনের মতো বিশাল দেশের সংঘাতের জের ধরে গোটা বিষয়টি আন্তর্জাতিক স্তরে বাণিজ্য যুদ্ধের আকার নিতে পারে, যা নিয়ন্ত্রণে আনা মোটেই সহজ হবে না৷
-
বাণিজ্য যুদ্ধ হলে কী ক্ষতি হবে?
অতীত দৃষ্টান্ত
১৯৩০-এর দশকে শেষ বাণিজ্য যুদ্ধের জের ধরে ‘গ্রেট ডিপ্রেশন’ বা বিশাল মন্দা আরও মারাত্মক আকার ধারণ করেছিল৷ মার্কিন প্রেসিডেন্ট হার্বার্ট হুবার সে বছর শুল্ক সংক্রান্ত নতুন আইন কার্যকর করার ফলে ২০ হাজারেরও বেশি পণ্যের উপর শুল্ক চাপানো হয়েছিল৷ ট্রাম্প প্রশাসন অবশ্য দাবি করছে যে, এ ক্ষেত্রে শুধু নির্দিষ্ট কিছু পণ্য ও দেশের জন্য শুল্ক চাপানো হচ্ছে৷
-
বাণিজ্য যুদ্ধ হলে কী ক্ষতি হবে?
ট্রাম্প কেন বাণিজ্য যুদ্ধের পথে এগোচ্ছেন?
মার্কিন যুক্তরাষ্ট্রের জন্য প্রতিকূল বাণিজ্য ঘাটতির বিরুদ্ধে শুরু থেকেই তোপ দেগে এসেছেন ডোনাল্ড ট্রাম্প৷ তবে সমালোচকদের মতে, এমন সংকীর্ণ দৃষ্টিভঙ্গির ফলে তিনি অ্যামেরিকার সার্বিক বাণিজ্যিক সম্পর্কের স্বার্থ দেখতে পাচ্ছেন না৷ কারণ, আন্তর্জাতিক বাণিজ্যিক কাঠামো তোলপাড় হয়ে গেলে আখেরে অ্যামেরিকারই ক্ষতি হবে৷ ডলারের বিনিময় মূল্য বেড়ে যাবে, রপ্তানি কমে যাবে এবং প্রবৃদ্ধি ক্ষতিগ্রস্ত হবে৷
-
বাণিজ্য যুদ্ধ হলে কী ক্ষতি হবে?
পালটা পদক্ষেপ
ট্রাম্প প্রশাসন একের পর এক শাস্তিমূলক পদক্ষেপ ঘোষণা করলে বাকি দেশগুলিও হাত গুটিয়ে বসে থাকবে না৷ ক্যানাডা, মেক্সিকো, চীন, জাপান, ব্রাজিল ও ইউরোপীয় ইউনিয়ন অ্যামেরিকার বিরুদ্ধেও পালটা পদক্ষেপের প্রস্তুতি নিচ্ছে৷ এমন বাণিজ্য যুদ্ধ এড়াতে দ্বিপাক্ষিক বোঝাপড়ার চেয়ে বহুপাক্ষিক সমাধানসূত্রের পরামর্শ দিচ্ছেন অর্থনীতি বিশেষজ্ঞরা৷
-
বাণিজ্য যুদ্ধ হলে কী ক্ষতি হবে?
অ্যামেরিকার ক্ষতি
সব সাবধানবাণী উপেক্ষা করে ট্রাম্প যদি সত্যি আমদানির উপর বাড়তি শুল্ক চাপান, তার পরিণতি অ্যামেরিকার জন্যও ইতিবাচক হবে না৷ যেমন, ইস্পাত আমদানির উপর শুল্ক চাপালে অ্যামেরিকার বাজারেও তার মূল্য বেড়ে যাবে৷ তার ফলে মার্কিন ইস্পাত কোম্পানিগুলির লাভ হলেও ক্রেতাদের বাড়তি মূল্য গুনতে হবে৷ যে কোম্পানিগুলি ইস্পাত ব্যবহার করে পণ্য উৎপাদন করে, তাদের উৎপাদন ব্যয় বেড়ে যাবে৷
-
বাণিজ্য যুদ্ধ হলে কী ক্ষতি হবে?
পার্শ্ব প্রতিক্রিয়া
অ্যামেরিকায় ইস্পাত রপ্তানি করতে না পারলে চীন ইউরোপের বাজারে তা আরও সস্তায় বিক্রি করার চেষ্টা করতে পারে৷ স্বাভাবিক বাণিজ্য ব্যাহত হলে এমন আরও দৃষ্টান্ত দেখা যেতে পারে৷ সামগ্রিকভাবে এমন অস্বাভাবিক প্রবণতা নানাভাবে সাধারণ মানুষের জন্য ক্ষতিকর হবে বলে আশঙ্কা করা হচ্ছে৷ সাম্প্রতিক নানা সংকট কাটিয়ে বিশ্ব অর্থনীতি যখন সবে মাথা তুলে দাঁড়াচ্ছে, তখন নতুন করে এমন বিপদ দুশ্চিন্তার কারণ হয়ে উঠছে৷
-
বাণিজ্য যুদ্ধ হলে কী ক্ষতি হবে?
আইনি লড়াই
আন্তর্জাতিক বাণিজ্য সংগঠন ডাব্লিইউটিও সাম্প্রতিক কালে বিশ্ব বাণিজ্যের বিধিনিয়ম স্থির করে এসেছে এবং বিবাদ মেটানোর চেষ্টা করেছে৷ বাণিজ্য যুদ্ধ শুরু হলে মামলার সংখ্যা আরও বেড়ে যাবে৷ সব পক্ষ ডাব্লিইউটিও-র রায় না মানলে এই সংগঠন অত্যন্ত দুর্বল হয়ে পড়তে পারে৷ এমন কাঠামো তার কার্যকারিতা হারালে ভবিষ্যতে সেই ক্ষতি পূরণ করা সহজ হবে না৷
ইতিহাস এবং বাণিজ্য
তাকানো যাক ইতিহাসের দিকে। দক্ষিণ এশিয়ায় 'টিমপস'এর ভূমিকা অনেকেই জানেন। থাইল্যান্ড, ইন্দোনেশিয়া, মালয়েশিয়া, ফিলিপাইন্স এবং সিঙ্গাপুরকে নিয়ে তৈরি টিমপস এই অঞ্চলের অপেক্ষাকৃত ধনী রাষ্ট্র। পরবর্তীকালে ব্রুনেইয়ের রাজাও তাতে যোগ দেন, ফলে তখন তাতে বলা হতো বিটিমপস। এই দেশগুলি বাণিজ্যের জন্য দক্ষিণ চীন সাগর ব্যবহার করতো। যেখানে চীনের একাধিপত্য রয়েছে। ফলে বরাবরই তারা চীনের সঙ্গে এক ধরনের সুসম্পর্ক বজায় রেখে চলেছে। যদিও এই প্রতিটি দেশের সঙ্গেই চীনের বিতর্কও আছে বিভিন্ন বিষয়ে। অন্য দিকে অস্ট্রেলিয়া এবং জাপানের সঙ্গে চীনের বিতর্ক রয়েছে দক্ষিণ চীন সাগরের আধিপত্য নিয়ে। কিন্তু বাণিজ্যিক প্রয়োজনে তাদেরও দক্ষিণ চীন সাগর ব্যবহার করতে হয়। সাম্প্রতিক চুক্তিতে সেই বিষয়টিকেই মাথায় রাখা হয়েছে বলে প্রতিটি দেশেরই দাবি। অস্ট্রেলিয়া, নিউজিল্যান্ড এবং জাপান এই কারণেই চুক্তিটিকে নেহাতই একটি অর্থনৈতিক বিষয় হি,সেবে উল্লেখ করছে।
চীনের রাজনীতি
দক্ষিণ চীন এবং এশিয়া প্যাসিফিকে চীনের এখন চূড়ান্ত আধিপত্য রয়েছে। বিশেষ করে দক্ষিণ চীন সমুদ্রে চীন কার্যত একাই রাজা। এই পরিস্থিতিতে অ্যামেরিকা চীনের আধিপত্য কমানোর মরিয়া চেষ্টা চালিয়েছে গত কয়েক মাস। ট্রাম্পের সরকার এশিয়া প্যাসিফিকে ভারসাম্য তৈরির লক্ষ্যে ভারত, অস্ট্রেলিয়া এবং জাপানের সঙ্গে আলাদা ব্লক তৈরির চেষ্টা চালিয়েছে। স্বাভাবিক ভাবেই চীন তা ভালো চোখে দেখেনি। চার দেশের বৈঠককে অনৈতিক বলে দাবি করেছে বেজিং। তারই মধ্যে ঘটে গিয়েছে মার্কিন নির্বাচন। রিপাবলিকান ট্রাম্প পরাজিত হয়েছেন। পরবর্তী প্রেসিডেন্ট হতে চলেছেন ডেমোক্র্যাট প্রার্থী জো বাইডেন। ট্রাম্প এখনো হার স্বীকার করেননি। এই পরিস্থিতিতে মার্কিন প্রশাসনে একপ্রকার অচলাবস্থা তৈরি হয়েছে। বিশেষজ্ঞদের একাংশ মনে করছে, এই সময়টাকেই কাজে লাগানোর চেষ্টা করেছে চীন। অর্থনৈতিক এবং বাণিজ্যিক চুক্তির আড়ালে এশিয়া প্যাসিফিকে আরো একবার প্রমাণের লক্ষ্যেই এই বিশাল আয়োজন করা হলো। এবং সেখানে তথাকথিত মার্কিন বন্ধু অস্ট্রেলিয়া, জাপান এবং নিউজিল্যান্ডকেও আসতে বাধ্য করা হলো। নিজেদের বাণিজ্যিক স্বার্থেই এই দেশগুলি এই চুক্তিতে সই করেছে। অর্থাৎ, এত দিন ধরে অ্যামেরিকা এশিয়া প্যাসিফিকে যে ব্লক তৈরির চেষ্টা চালাচ্ছিল, তার পাল্টা একটি ব্লক তৈরি করে দেখালো চীন।
-
অ্যামেরিকার বড় শত্রু কারা?
উত্তর কোরিয়া
জরিপের মাধ্যমে অ্যামেরিকার শত্রুদের তালিকা প্রকাশ করে থাকে গ্যালাপ৷ প্রতিষ্ঠানের ২০১৮ সালের জরিপে দেখা যায়, গত কয়েক বছরের মতো এবারও অ্যামেরিকার শত্রু তালিকার শীর্ষ দেশ হিসেবে উত্তর কোরিয়ার নাম আছে৷ ২০১৬ সালে ১৬ ভাগ মানুষ উত্তর কোরিয়ার পারমাণবিক শক্তিকে হুমকি হিসাবে বিবেচনায় নিয়েছিলেন৷ ২০১৮ সালে এসে হুমকি বিশ্বাসকারীদের সংখ্যা ৫১ শতাংশে দাঁড়িয়েছে৷
-
অ্যামেরিকার বড় শত্রু কারা?
রাশিয়া
অ্যামেরিকার সঙ্গে রাশিয়ার শত্রুতার সম্পর্ক দীর্ঘদিনের৷ এর মধ্যে উত্থান-পতনও দেখা গেছে বিভিন্ন সময়ে৷ ২০১৬ সালে ১৫ শতাংশ অ্যামেরিকান বলেছেন, রাশিয়া তাঁদের সবচেয়ে বড় শত্রু৷ ২০১৮ সালে গিয়ে এ সংখ্যা দাঁড়িয়েছে ১৯ শতাংশে৷
-
অ্যামেরিকার বড় শত্রু কারা?
চীন
চীনের সঙ্গে অ্যামেরিকার বাণিজ্য যুদ্ধ ক্ষতিগ্রস্ত করতে পারে বিশ্বের অন্যান্য দেশের অর্থনীতিকেও৷ যুক্তরাষ্ট্রের সঙ্গে পাল্লা দিয়ে অর্থনৈতিক পরাশক্তি হওয়ার লক্ষ্যে কাজ করছে চীন৷ দুই দেশের সাম্প্রতিক কিছু সিদ্ধান্ত উভয়ের অর্থনীতিকে প্রভাবিত করছে৷ ২০১৬ সালে অ্যামেরিকার ১২ শতাংশ মানুষের বিবেচনায় চীন ছিল দেশটির সবচেয়ে বড় শত্রু৷ তবে, ২০১৮ সালে দেশটিকে বড় শত্রু হিসাবে চিহ্নিত করেছেন ১১ শতাংশ অ্যামেরিকান৷
-
অ্যামেরিকার বড় শত্রু কারা?
ইরান
২০০৬ থেকে ২০১২ সাল পর্যন্ত অ্যামেরিকানদের কাছে তাঁদের শত্রু তালিকায় শীর্ষে ছিল ইরান৷ পরের কয়েক বছর পরিস্থিতি ভালো হয় কিছুটা৷ তবে, ২০১৫ সালে ইরানকে নিজেদের সবচেয়ে বড় শত্রু হিসাবে চিহ্নিত করেছেন ৯ শতাংশ অ্যামেরিকান৷ ২০১৮ সালে এমন চিন্তার মানুষের সংখ্যা দাঁড়ায় ৭ শতাংশে৷
-
অ্যামেরিকার বড় শত্রু কারা?
সিরিয়া
গ্যালাপের পাশাপাশি অ্যামেরিকার শত্রুদের তালিকা প্রকাশ করে থাকে ক্যানাডাভিত্তিক গবেষণা প্রতিষ্ঠান সেন্টার ফর রিসার্চ অন গ্লোবালাইজেশন বা সিআরজি৷ তাদের বিবেচনায় ইরান, রাশিয়া ও ফিলিস্তিনের সঙ্গে সিরিয়ায় ক্ষমতাসীনদের সখ্যের কারণে সিরিয়ার সঙ্গে অ্যামেরিকার বিরোধ হয়েছে৷ আবার অ্যামেরিকা-ইসরায়েল মৈত্রীর ক্ষেত্রে বিপরীত অবস্থানে আছে সিরিয়া৷ ভূ-রাজনৈতিক কারণে সিরিয়ার উপর আধিপত্য রাখতে চায় যুক্তরাষ্ট্র৷
-
অ্যামেরিকার বড় শত্রু কারা?
ভেনেজুয়েলা
সিআরজি বলছে, ভেনেজুয়েলার তেলের মজুদ ও সামাজিক-রাজনৈতিক কারণে অ্যামেরিকার সঙ্গে তাঁদের বিরোধ দীর্ঘদিনের৷ যদিও বর্তমানে মূল্যস্ফীতি ও অর্থনৈতিক সংকটের মধ্য দিয়ে যাচ্ছে ভেনেজুয়েলা, তবুও সেই বিরোধ কমেনি মোটেও৷ দেশটির ক্ষমতাসীন মাদুরো সরকারকে হটাতে তৎপর অ্যামেরিকা৷ সম্প্রতি অ্যামেরিকার সঙ্গে সব ধরনের কূটনৈতিক সম্পর্ক ছিন্ন করেছে দক্ষিণ অ্যামেরিকার দেশটি৷
বিশেষজ্ঞদের মতামত
ভারতীয় সেনার সাবেক লেফটন্যান্ট জেনারেল উৎপল ভট্টাচার্যের বক্তব্য, ''এই চুক্তি যতটা না অর্থনৈতিক তার চেয়ে অনেক বেশি রাজনৈতিক। মার্কিন নির্বাচনের সুযোগটা কাজে লাগিয়েছে চীন। এশিয়া প্যাসিফিকে নিজেদের আধিপত্য আরো একবার প্রমাণ করার চেষ্টা করেছে।'' উৎপলবাবুর বক্তব্য, এই চুক্তিতে যে বিষয়গুলির কথা বলা হয়েছে, তার বাস্তবায়নের এখনই কোনো সুযোগ নেই। ফলে বোঝাই যাচ্ছে, চুক্তিটি করে আসলে একটি রাজনৈতিক বার্তা দেওয়ার চেষ্টা হয়েছে।
আউটলুক পত্রিকার কূটনৈতিক সম্পাদক প্রণয় শর্মা ডয়চে ভেলেকে জানিয়েছেন, ভারতের এই চুক্তিতে না থাকা একটি গুরুত্বপূর্ণ বিষয়। এক সময় এই ডিল নিয়ে আলোচনায় ভারতও ছিল। কিন্তু পরবর্তীকালে বেরিয়ে যায়। এ বারের চুক্তির সময়েও ঠিক হয়েছে, ভারত পরবর্তীকালে এই চুক্তিতে যোগ দিতে চাইলে, তার সুযোগ থাকবে। যদিও চীন ভারতকে এই চুক্তির মধ্যে রাখতে প্রথমে বিশেষ আগ্রহী ছিল না। কিন্তু জাপান এবং অস্ট্রেলিয়া ভারতকে রাখতে আগ্রহী। প্রণয়বাবুর বক্তব্য, ''যে কোনো চুক্তিরই একটি রাজনৈতিক দিক থাকে। এই চুক্তির ক্ষেত্রেও সেই ভূরাজনৈতিক দিকটি আছে। একসময় অ্যামেরিকা এশিয়া প্যাসিফিকে ট্রান্স প্যাসিফিক পার্টনারশিপ তৈরি করে চীনকে বার্তা দিয়েছিল। গত কয়েক বছরে তা আর তত গুরুত্ব পায়নি। নতুন এই চুক্তির পর বাইডেনের অ্যামেরিকা সেই টিপিপি মডেলকে গুরুত্ব দিতে পারে।''
ভারত সেই মডেলে গুরুত্বপূর্ণ জায়গা পেতে পারে বলেও মনে করছেন বিশেষজ্ঞদের একাংশ। কারণ, একদিকে ভারত এবং অন্যদিকে জাপান এবং অস্ট্রেলিয়াকে রেখে অ্যামেরিকা সে ক্ষেত্রেএশিয়া প্যাসিফিকে চীনের সঙ্গে ক্ষমতার ভারসাম্য তৈরির চেষ্টা করতে পারে। অতীতেও তারা এমনই করেছে।