আবাসন সংকটে পর্তুগালে অভিবাসীদের ‘শ্বাসরুদ্ধকর’ পরিস্থিতি
উন্নত, নিরাপদ জীবনের আশায় অনেকেই ইউরোপের দেশ পর্তুগালে পাড়ি জমান৷ কিন্তু দেশটির রাজধানীতে আবাসন সংকট অনেক অভিবাসীকে চরম বিপাকে ফেলেছে৷
শুরুতেই স্বপ্নভঙ্গ
আন্দ্রেয়া কস্তার বয়স ৫০ বছর৷ ২০২২ সালে অপেক্ষাকৃত সন্তোষজনক জীবনের আশায় ব্রাজিল থেকে পর্তুগালে চলে আসেন এই ছুতার৷ এখন দেশটির রাজধানী লিসবনের কাছে তাঁবুতে বসবাসে বাধ্য হচ্ছেন তিনি৷
তিনি একা নন
২০১৫ সালের তুলনায় এখন অবধি লিসবনে বাড়ি ভাড়া বেড়েছে ৯৪% এবং বাড়ির দাম বেড়েছে ১৮৬%৷ এরকম পরিস্থিতিতে কস্তার মতো আরো অনেকে তাঁবুর জীবন বেছে নিতে বাধ্য হয়েছেন৷
ধনীদের কারণে এই দশা?
সাম্প্রতিক বছরগুলোতে অনেক ধনী বিদেশি বসবাসের অধিকার পাওয়ার আশায় পর্তুগালের আবাসন খাতে বিনোয়োগ করেছেন৷ তারা এভাবে রাষ্ট্রের কর মওকুফের সুবিধাও নিচ্ছেন৷ ফলে অপেক্ষাকৃত নিম্নআয়ের মানুষদের মধ্যে নিজেদের সাধ্যের মধ্যে বাড়ি পাওয়া কঠিন হয়ে পড়েছে৷
পর্যটকদের ভিড়
পশ্চিম ইউরোপের অন্যতম দরিদ্র দেশ হিসেবে পরিচিত পর্তুগাল৷ এ অঞ্চলে সবচেয়ে কম গড় বেতন দেশটিতে৷ অবশ্য প্রচুর পর্যটক দেশটি ভ্রমণ করেন৷ আর সেটাও আবাসন সংকটের একটি কারণ৷
৭৬০ ইউরোর চাকুরি
কস্তা বৈধভাবেই মাত্র ৬০০ ইউরো হাতে নিয়ে পর্তুগাল পৌঁছান৷ এরপর শুধুমাত্র পরিষ্কার-পরিচ্ছন্নতার একটি কাজ পেয়েছেন তিনি৷ দেশটির ন্যূনতম বেতনের আওতায় মাসে তার উপার্জন ৭৬০ ইউরোর মতো৷ এই বেতন দিয়ে চারশ’ ইউরোর ছোট্ট একটা কামরাও ভাড়া নেয়া সম্ভব হয়নি তারপক্ষে৷
লিসবনের উপকণ্ঠে তাঁবু খাটানো
পরিস্থিতি সামাল দিতে লিসবনের উপকণ্ঠে প্রায় খালি একটি স্থানে তাঁবু খাটিয়ে বসবাস করতে শুরু করেন কস্তা৷ কয়েকমাসের মধ্যেই তার দেখাদেখি আরো অনেকে সেখানে বসবাস শুরু করেন৷ এক পর্যায়ে তাদেরকে সেখান থেকে সরিয়ে দিলে তারা একইরকম অন্য একটি স্থানে চলে যান৷
কঠিন জীবন
এরকম অনিশ্চিত স্থানে থাকতে গিয়ে প্রতিদিনই সংগ্রাম করতে হয় কস্তাদেরকে৷ সেখানে গোসলের পানি সংগ্রহ করতে হয় সাগর তীর থেকে৷ রান্নার জন্য স্থায়ী কোনো আয়োজন নেই৷ আর রাতের বেলা অন্ধকারে চলাচল করতে হয় তাঁবুবাসীদের৷ পাশাপাশি উচ্ছেদের শঙ্কাতো আছেই৷ এমন পরিস্থিতির আশু পরিবর্তন দেখছেন না এই অভিবাসীরা৷