আফগান যুদ্ধে তালেবানরা মনুষ্য বর্ম ব্যবহার করছে
১৮ ফেব্রুয়ারি ২০১০কমান্ডাররা বলছেন, তালেবান জঙ্গিরা মনুষ্য বর্ম ব্যবহার শুরু করেছে বলে সাফল্যের অগ্রগতি ধীর হয়ে গেছে৷
দক্ষিণ আফগানিস্তানের মারজাহ এলাকা যেখানে ন্যাটো বাহিনী হামলা চালাচ্ছে সেটি তালেবানের শক্ত ঘাঁটি বলে জানা গেছে৷ আফগানিস্তানে আট বছরের যুদ্ধ শেষ করার ক্ষেত্রে মার্কিন প্রেসিডেন্ট বারাক ওবামার চেষ্টার প্রথম পরীক্ষা হিসেবে বিবেচনা করা হচ্ছে এই আক্রমণকে৷
প্রায় ১৫ হাজার আফগান, মার্কিন ও ন্যাটো সৈন্য যুদ্ধ করছে ৪০০ থেকে এক হাজার তালেবান জঙ্গির বিরুদ্ধে৷ ২০০১ সালের পর আফগানিস্তানে এটাই সবচেয়ে বড় আক্রমণ বলে বিবেচনা করা হচ্ছে৷
আফগান বাহিনীর কমান্ডার জেনারেল মোহাইদিন ঘোড়ি বলছেন, জঙ্গিরা সাধারণ জনগণকে বর্ম হিসেবে ব্যবহার করছে৷ তারা বিভিন্ন বাসা বাড়ির ছাদে নারী ও শিশুদের তুলে দিয়ে তাদের পিছন থেকে গুলিবর্ষণ করছে৷
একটি ঘটনার উল্লেখ করে তিনি বলছেন, একটি বাসার জানালা থেকে একজন জঙ্গিকে তিনি গুলি করতে দেখেছেন৷ অথচ তার পেছনেই কয়েকজন অস্ত্রহীন নিরীহ মানুষকে দেখা গেছে৷ এছাড়া ঐ বাড়ির সামনে ক্রন্দনরত একটি শিশুকেও দাঁড় করিয়ে রাখা হয়েছিল৷
তবে তালেবান মুখপাত্র মনুষ্য বর্ম ব্যবহারের বিষয়টি অস্বীকার করেছেন৷
এছাড়া তালেবান জঙ্গিরা বিভিন্ন জায়গায় মাইন পুঁতে রেখেছে, যে বিষয়টিও সাফল্যের গতিকে কমিয়ে দিচ্ছে বলে কমান্ডাররা মনে করছেন৷
আফগান সেনাবাহিনীর দক্ষিণাংশের কমান্ডার জেনারেল শের মোহাম্মদ জাজাই বলেছেন, তাঁরা মারজাহ অঞ্চলটি প্রায় দখল করে ফেলেছেন৷ তবে তিনি বলছেন, জঙ্গিরা বিভিন্ন জায়গায় মাইন পুঁতে রেখেছে, যা তাঁদের অগ্রগতিকে ব্যাহত করছে৷
এদিকে হামলার কারণে হাজার হাজার মানুষ এলাকা ছেড়ে প্রাদেশিক রাজধানী লস্কর ঘা ও প্রতিবেশী প্রদেশ নিমরোজের দিকে পালিয়ে গেছে, যেখানে জাতিসংঘের বিশ্ব খাদ্য সংস্থা ক্ষুধার্ত পরিবারের মধ্যে খাবার বিতরণ করছে৷
ঘোড়ি বলছেন, সাধারণ জনগণের মধ্যে অনেক তালেবান জঙ্গিও রয়েছে৷ তবে তিনি বলছেন, পুলিশ ইতিমধ্যে মারজাহর বাজার এলাকায় প্রবেশ করেছে এবং তারা মাইনগুলো সরিয়ে দিয়ে শীঘ্রই পুরো অঞ্চলটির নিয়ন্ত্রণ হাতে নিতে পারবে৷
এদিকে পাকিস্তান সরকার বলছে মারজাহ এলাকার জনগণ যেভাবে পালিয়ে যাচ্ছে তাতে তারা পাকিস্তান সীমান্তে পুনরায় জঙ্গিদের আস্তানা গড়ে ওঠার সম্ভাবনা দেখছেন, যেমনটি হয়েছিল ২০০১ সালের যুদ্ধের সময়৷
পাকিস্তানের প্রধানমন্ত্রী ইউসুফ রাজা গিলানী ইতিমধ্যে বিষয়টি ইসলামাবাদে আফগানিস্তান ও পাকিস্তান বিষয়ক মার্কিন দূত রিচার্ড হলব্রুকের কাছে উত্থাপন করেছেন৷
এই ছয়দিনে এখন পর্যন্ত ৪০ তালেবান জঙ্গি, পাঁচজন ন্যাটো সৈন্য ও ১২ জন সাধারণ মানুষ নিহত হয়েছে বলে জানা গেছে৷
প্রতিবেদন : জাহিদুল হক
সম্পাদনা : আবদুস সাত্তার