1. কন্টেন্টে যান
  2. মূল মেন্যুতে যান
  3. আরো ডয়চে ভেলে সাইটে যান

'আনসিভিল ওয়ার' বন্ধের শপথ বাইডেনের

২১ জানুয়ারি ২০২১

দেশ জুড়ে 'আনসিভিল যুদ্ধে'র অবসান ঘটানোর ডাক দিলেন ৪৬তম মার্কিন প্রেসিডেন্ট, ৭৮ বছরের জো বাইডেন। 

https://p.dw.com/p/3oDVf
জো বাইডেন শপথ
ছবি: Alex Wong/Getty Images

দুইবারের ভাইস প্রেসিডেন্ট, তিন দশকের সেনেটর জো বাইডেন ৪৬তন মার্কিন প্রেসিডেন্ট হিসেবে শপথ গ্রহণ করলেন। শপথবাক্য পাঠ করলেন প্রথম অ্যাফ্রো-অ্যামেরিকান এবং ভারতীয় বংশোদ্ভূত নারী ভাইস প্রেসিডেন্ট কমলা হ্যারিস। এমন এক সময় তাঁরা অ্যামেরিকার শাসনভার গ্রহণ করলেন, দেশের ভিতরে এবং বাইরে যখন একাধিক সমস্যা। একদিকে করোনার প্রকোপ। অন্য দিকে দেশ জুড়ে বিভেদের সুর। সাদা-কালো, রিপাবলিকান-ডেমোক্র্যাটদের মধ্যে জায়গায় জায়গায় খণ্ডযুদ্ধ চলছে। মাথা চড়া দিচ্ছে হোয়াইট সুপ্রিমেসি। এমনই এক সময়ে শপথবাক্য পাঠ করে মিস্টার প্রেসিডেন্ট ক্য়াপিটলের সিড়িতে দাঁড়িয়ে বললেন, 'এই আনসিভিল যুদ্ধ শেষ করার শপথ নিতে হবে সকলকে। অ্যামেরিকাকে আবার ঐক্যবদ্ধ করতে হবে।'

সাবেক প্রেসিডেন্ট ডনাল্ড ট্রাম্পের আমলে অ্যামেরিকায় বিভেদের সুর ক্রমশ চড়া হয়েছে। ট্রাম্পের একাধিক নীতি মুসলিমদের আহত করেছে। কৃষ্ণাঙ্গরা বিচার পাচ্ছেন না বলে রাস্তায় নেমেছেন। লিবারালদের একের পর এক কটাক্ষ শুনতে হয়েছে। ট্রাম্পের একাধিক বক্তৃতা সেই আগুনে আরো ঘি ছড়িয়েছে। নভেম্বরে নির্বাচন শেষ হওয়ার পরেও ট্রাম্প ভোটে কারচুপির অভিযোগ তুলে সমর্থকদের তাতিয়েছেন। অ্যামেরিকা দেখেছে ঐতিহাসিক ক্যাপিটল আক্রমণের ঘটনা। কলঙ্কিত হয়েছে মার্কিন অহংকার।

প্রেসিডেন্ট জো বাইডেনের প্রথম দিনের ভাষণ গত চার বছরে তৈরি হওয়া বিভেদের এই মার্কিন ছবিটি বদলে দেওয়ার শপথ। বাইডেন বলেছেন, 'গণতন্ত্র ভীষণ মূল্যবান। গণতন্ত্র ভঙ্গুর। তাকে রক্ষা করতে হয়। এই মুহূর্তে দাঁড়িয়ে গণতন্ত্র রক্ষা করাই আমার দায়িত্ব। দেশ জুড়ে যে আনসিভিল যুদ্ধ শুরু হয়েছে, তা আমাদের শেষ করতে হবে।' এরপরেই উদাহরণ দিতে শুরু করেন বাইডেন। বলেন, 'নীলের সঙ্গে লালের যুদ্ধ চলছে। গ্রামের সঙ্গে শহরের। সংরক্ষণবাদীর সঙ্গে লিবারালের। এই যুদ্দ থামানো সম্ভব। আমাদের মন থেকে রাগ সরিয়ে ফেলতে হবে। দুঃখ সরিয়ে ফেলতে হবে। সামান্য সহনশীল হতে পারলেই আমরা একে অপরের অনেকটা কাছাকাঠি পৌঁছে যেতে পারব।' শেষ বাক্যে বাইডেন নতুন এক রূপকথার অ্যামেরিকা তৈরির শপথ নেন। ঐক্যবদ্ধ অ্যামেরিকা।

এ দিনের শপথগ্রহণ অনুষ্ঠানে উপস্থিত ছিলেন সাবেক প্রেসিডেন্ট বারাক ওবামা, জর্জ বুশ, বিল ক্লিন্টনরা। কিন্তু ১৫২ বছরের মার্কিন ঐতিহ্য ভেঙে অনুষ্ঠানে উপস্থিত ছিলেন না ডনাল্ড ট্রাম্প। বুধবার সকালে তিনি হোয়াইট হাউস ছেড়ে ফ্লোরিডায় চলে যান। অনুষ্ঠানে উপস্থিত থাকার প্রথা ভাঙলেও, বাইডেনের জন্য প্রথামাফিক একটি চিঠি রেখে গেছেন ট্রাম্প। বাইডেন জানিয়েছেন, সেখানে শুভেচ্ছাবার্তা দিয়েছেন ট্রাম্প।

একদিকে প্যানডেমিক, অন্য দিকে ঠিক দুই সপ্তাহ আগে ক্যাপিটলে হামলা--৪৬তম মার্কিন প্রেসিডেন্টের শপথ অনুষ্ঠান প্রতিবারের মতো হয়নি। ক্যাপিটলের সামনে ভিড় জমাননি হাজার হাজার মানুষ। নিরাপত্তার বজ্র আঁটুনিতে কার্যত দূর্গে পরিণত হয়েছিল ওয়াশিংন। ২৫ হাজার ন্যাশনাল গার্ড শহর জুড়ে নিরাপত্তা সুনিশ্চিত করেছে। সাধারণ মানুষকে বাড়িতে থাকার নির্দেশ দেওয়া হয়েছে। হাতেগোনা কিছু দর্শক ছাড়া বিশেষ কেউ ছিলেন না অনুষ্ঠানে। সাধারণ মানুষের বসায় জায়গায় লাগানো হয়েছিল লাখ লাখ মার্কিন পতাকা। প্রতীক হিসেবে। তবে তারকা সমাোরহ ছিল। জাতীয় সংগীত গেয়েছেন লেডি গাগা। জেনিফার লোপজ গেয়েছেন 'দিস ল্যান্ড ইস ইওর ল্যান্ড'। আর সব শেষে বাইডেন বলেছেন, তিনি সকলের প্রেসিডেন্ট। কোনো বিশেষ গোষ্ঠী, ধর্ম বা দলের নন।

এসজি/জিএইচ (রয়টার্স, এপি, এএফপি)