এক বিবৃতিতে জানানো হয়েছে, ‘‘স্বতন্ত্র ওষুধ এবং স্বাস্থ্যসেবা সামগ্রীর নিয়ন্ত্রক সংস্থা (এমএইচআরএ) ফাইজার-বায়োনটেকের কোভিড-১৯ ভ্যাকসিন ব্যবহারের অনুমতির জন্য যে সুপারিশ করেছিল সরকার আজ তা গ্রহণ করেছে৷’’ বিবৃতিতে আরো জানানো হয়, ব্রিটেনে আগামী সপ্তাহ থেকেই এই ভ্যাকসিন পাওয়া যাবে৷
ফাইজার-বায়োনটেকের কোভিড-১৯ ভ্যাকসিনকে অনুমোদন দেয়ার সিদ্ধান্তকে ‘চমৎকার খবর’ হিসেবে উল্লেখ করে ব্রিটেনের স্বাস্থ্যমন্ত্রী ম্যাট হ্যানকক স্কাই নিউজকে বলেন, ‘‘আগামী সপ্তাহের শুরুর দিকে আমরা মানুষকে ভ্যাকসিন দেয়ার কর্মসূচি শুরু করবো৷’’
ফাইজার বায়োনটেক ভ্যাকসিনের আপাতত চার কোটি ডোজ বাজারে ছাড়বে ব্রিটেন সরকার৷ এতে সে দেশের মোট জনসংখ্যার এক তৃতীয়াংশেরও কম মানুষের চাহিদা পূরণ হবে৷
প্রথম ধাপে ভ্যাকসিন পাবেন স্বাস্থ্যকর্মীরা ৷ ব্রিটেনের সংবাদমাধ্যমের খবর অনুযায়ী, স্বাস্থ্যকর্মীদের ভ্যাকসিন দেয়া শুরু করার জন্য ইতিমধ্যে হাসপাতালগুলোকে প্রস্তুতি নিতে বলা হয়েছে৷
এদিকে ফাইজার জানিয়েছে, খুব তাড়াতাড়ি তারা ব্রিটেনে ভ্যাকসিন পাঠানো শুরু করবে৷ ব্রিটেনের পর যুক্তরাষ্ট্রও ফাইজারের ভ্যাকসিনের অনুমোদন দিতে পারে৷ আগামী সপ্তাহে এ ব্যাপারে তাদের সিদ্ধান্ত জানাবে যুক্তরাষ্ট্রের খাদ্য এবং ওষুধ প্রশাসন৷
এসিবি/কেএম (রয়টার্স, এএফপি)
-
জার্মানিতে করোনা ভাইরাসের টিকা আবিষ্কারে মুসলিম দম্পতি
২০০৮ সালে শুরু
জার্মান শহর মাইনৎসে ১২ বছর আগে বায়োনটেকের পথচলা শুরু হয়৷ এই কোম্পানির প্রতিষ্ঠাতা ক্যান্সার বিশেষজ্ঞ উগুর জাহিন এবং তাঁর স্ত্রী ইমিউনোলজিস্ট উজলেম টুরেচি৷
-
জার্মানিতে করোনা ভাইরাসের টিকা আবিষ্কারে মুসলিম দম্পতি
তুরস্ক বংশোদ্ভূত
তারা দুইজনই তুরস্ক বংশোদ্ভূত জার্মান নাগরিক৷ এই দম্পতির তৈরি বায়োনটেকে এখন কাজ করে ১৫শ’ কর্মী৷ ৫৫ বছর বয়সি জাহিনের জন্ম তুরস্কে৷ বাবা-মা’র সঙ্গে একসময় জার্মানিতে চলে আসেন তিনি৷ মেডিসিন এবং গণিত নিয়ে পড়ালেখা করেন কোলোন বিশ্ববিদ্যালয়ে৷
-
জার্মানিতে করোনা ভাইরাসের টিকা আবিষ্কারে মুসলিম দম্পতি
ক্যান্সারের বিরুদ্ধে লড়াই
জাহিন কোলোন এবং হামবুর্গে দীর্ঘদিন চিকিৎসক হিসেবে কাজ করেছেন৷ এরপর জারল্যান্ড বিশ্ববিদ্যালয়ে যোগ দেন৷ ১৯৯২ থেকে ২০০০ সাল পর্যন্ত একজন চিকিৎসক ও গবেষক হিসেবে সেখানে কাজ করেন৷ মলিকিউলার মেডিসিন এবং ইমিউনোলজি নিয়ে গবেষণা শুরু করেন৷ ক্যান্সারের বিরুদ্ধে লড়াইয়ের ব্যাপারে তিনি সবসময় আগ্রহী ছিলেন আর এ কারণেই ২০০৮ সালে বায়োনটেক প্রতিষ্ঠা করেন৷ ক্যান্সারের ওষুধ আবিষ্কারের জন্য এখানে মনোনিবেশ করেন তিনি৷
-
জার্মানিতে করোনা ভাইরাসের টিকা আবিষ্কারে মুসলিম দম্পতি
উজলেম টুরেচি
৫৩ বছর বয়সি টুরেচির জন্ম জার্মানিতে৷ কিন্তু তাঁর বাবা-মা তুর্কি৷ হামবুর্গে পড়ালেখা করে, সেখানেই চিকিৎসক হিসেবে কাজ করেছিলেন তিনি৷ ইমিউনোলজিস্ট টুরেচি ক্যান্সার রোগীদের থেরাপি দিয়ে থাকেন৷
-
জার্মানিতে করোনা ভাইরাসের টিকা আবিষ্কারে মুসলিম দম্পতি
ভ্যাকসিন তৈরির সিদ্ধান্ত
২০০০ সালের জানুয়ারিতে জাহিন করোনা ভাইরাস সম্পর্কে প্রথম জানতে পারেন৷ তখনই তাঁর আশঙ্কা হয় এটি মহামারি রূপ নেবে৷ সেসময়ই ভ্যাকসিন প্রস্তুতের সিদ্ধান্ত নেন তিনি৷
-
জার্মানিতে করোনা ভাইরাসের টিকা আবিষ্কারে মুসলিম দম্পতি
করোনা প্রতিরোধে ভূমিকা
বায়োনটেকের প্রধান নির্বাহী উগুর জাহিন জানিয়েছেন, এই টিকার প্রতিরোধ ক্ষমতা অন্তত এক বছর স্থায়ী হবে৷ যৌথ বিবৃতিতে ফাইজারের চেয়ারম্যান ও তিনি জানিয়েছেন, ‘‘টিকার তৃতীয় পর্যায়ের পরীক্ষার প্রাথমিক ফলে আমরা প্রমাণ পেয়েছি যে এটি কোভিড-১৯ প্রতিরোধ করতে পারে৷’’
-
জার্মানিতে করোনা ভাইরাসের টিকা আবিষ্কারে মুসলিম দম্পতি
ভ্যাকসিন ট্রায়াল
যাদের আগে কখনও করোনা সংক্রমণ হয়নি, এমন মানুষের ওপর চালানো পরীক্ষায় দেখা গেছে যে টিকা দেয়ার পর শরীরে করোনা ভাইরাস প্রবেশ করলেও তাদের কোভিড-১৯ হয়নি৷ জুলাইয়ের শেষ থেকে শুরু হওয়া তৃতীয় পর্যায়ের এ ট্রায়ালে ৪৩ হাজার ৫০০ জনেরও বেশি মানুষ অংশ নিয়েছেন৷ মার্কিন খাদ্য ও ওষুধ নিয়ন্ত্রণ সংস্থা এফডিএর অনুমতির জন্য আবেদন করা হবে বলে জানিয়েছে প্রতিষ্ঠান দু’টি৷
-
জার্মানিতে করোনা ভাইরাসের টিকা আবিষ্কারে মুসলিম দম্পতি
১৬ হাজার কোটি টাকার চুক্তি
ফাইজার ও বায়োনটেক মার্কিন যুক্তরাষ্ট্রে টিকা সরবরাহে এরই মধ্যে ১৬ হাজার কোটি টাকারও বেশি অর্থের চুক্তি সই করেছে৷ চুক্তি সই হয়েছে ইউরোপীয় ইউনিয়ন, যুক্তরাজ্য, ক্যানাডা, জাপানের সঙ্গেও৷ ২০২০ সালেই প্রতিষ্ঠান দু’টি পাঁচ কোটি ডোজ টিকা উৎপাদন করবে। ২০২১ সালে আরো ১৩০ কোটি ভ্যাকসিন উৎপাদনের প্রস্তুতি নিচ্ছে ফিজার৷
-
জার্মানিতে করোনা ভাইরাসের টিকা আবিষ্কারে মুসলিম দম্পতি
বিশ্বজুড়ে করোনা সংক্রমণ
জন্স হপকিন্স বিশ্ববিদ্যালয়ের হিসাবে বিশ্বজুড়ে করোনা আক্রান্তের সংখ্যা ছাড়িয়েছে পাঁচ কোটি, প্রাণ হারিয়েছেন সাড়ে ১২ লাখেরও বেশি মানুষ৷ ইউরোপসহ বিশ্বের নানা প্রান্তে কয়েক মাস সংক্রমণে ধীরগতি থাকার পর আবার দ্রুত হারে বাড়ছে আক্রান্তের সংখ্যা৷
লেখক: অমৃতা পারভেজ (কেএম)