1. কন্টেন্টে যান
  2. মূল মেন্যুতে যান
  3. আরো ডয়চে ভেলে সাইটে যান

অ্যামেরিকায় মৃতের সংখ্যা ৭৫ হাজার ছাড়ালো

৮ মে ২০২০

আফ্রিকাতেও মৃতের সংখ্যা লাফিয়ে বাড়বে বলে আশঙ্কা প্রকাশ বিশ্ব স্বাস্থ্য সংস্থার। ভাইরাস ঢুকছে চোখ দিয়েও, দাবি হংকংয়ের বিশ্ববিদ্যালয়ের।

https://p.dw.com/p/3bvE7
ছবি: Getty Images/AFP/L. Sola

করোনা কালে আরও একটা অন্ধকার মাইলস্টোন পার করলো অ্যামেরিকা। বৃহস্পতিবার সেখানে মৃতের সংখ্যা ৭৫ হাজার পার হলো। শুক্রবার সকালের মধ্যে যা প্রায় ৭৭ হাজারে পৌঁছে গিয়েছে। মোট আক্রান্ত প্রায় ১৩ লাখ মানুষ। এরই মধ্যে আরও এক আতঙ্কের কথা জানিয়েছে বিশ্ব স্বাস্থ্য সংস্থা। তাদের বক্তব্য, নিয়ন্ত্রণের ব্যবস্থা করা না গেলে আফ্রিকায় এই মহামারি ভয়াবহতম চেহারা নিতে পারে। আক্রান্ত হতে পারেন তিন থেকে চার কোটি মানুষ। মৃত্যু হতে পারে ৮০ হাজার থেকে দুই লাখ লোকের। শুধু তাই নয়, বিশ্ব স্বাস্থ্য সংস্থা জানিয়েছে, প্রথম আঘাতের পরে ফের নতুন ঢেউ নিয়ে ফিরে আসতে পারে করোনা। ফলে যে সব দেশ দ্রুত লকডাউন তোলার পরিকল্পনা করছে, তাদের আরও সতর্ক হওয়া উচিত।

গত ২৪ ঘণ্টায় প্রায় আড়াই হাজার মানুষের মৃত্যু হয়েছে অ্যামেরিকায়। নিউ ইয়র্কের চেহারা এখনও ভয়াবহ। হাসপাতালে নতুন রোগী নেওয়ার কার্যত কোনও জায়গা নেই। পাওয়া যাচ্ছে না মৃতদেহ কবর দেওয়ার জায়গা। তবে মার্কিন প্রেসিডেন্ট ডনাল্ড ট্রাম্প এখনও লকডাউন তুলে জনজীবন স্বাভাবিক ছন্দে ফেরানোর পক্ষপাতী। তিনি আগেই বলেছিলেন, দিনের পর দিন এ ভাবে সব কিছু বন্ধ করে বসে থাকা সম্ভব নয়। অর্থনীতিকে সচল করতেই হবে। যদিও বিশেষজ্ঞরা বলছেন, দ্রুত জীবনযাত্রা স্বাভাবিক করে দিলে মৃতের সংখ্যা অনেক গুণ বেড়ে যাবে। বাড়বে আক্রান্ত। তখন পরিস্থিতি সামাল দেওয়া আরও কঠিন হয়ে পড়বে।

আফ্রিকা নিয়ে ভয় অবশ্য অন্য। ইউরোপ কিংবা অ্যামেরিকা যে ভাবে করোনার সঙ্গে লড়াই করেছে, আফ্রিকার দেশগুলির পক্ষে স্বাভাবিক ভাবেই সে ভাবে লড়াই করা সম্ভব নয়। অর্থনৈতিক ভাবে আফ্রিকার অধিকাংশ দেশই পিছিয়ে পড়া। করোনার পরীক্ষাও সেখানে ঠিক ভাবে হচ্ছে বলে বিশেষজ্ঞরা মনে করছেন না। পরিস্থিতি এমনই চলতে থাকলে আফ্রিকায় করোনা ভয়াবহ চেহারা নেবে বলে আশঙ্কা। মৃত্যু হবে অসংখ্য লোকের। কিন্তু বিকল্প উপায়ও দেখতে পাচ্ছেন না অধিকাংশ বিশেষজ্ঞ। তাঁদের বক্তব্য, ক্যামেরুন বুঝিয়ে দিয়েছে, এক মাস অর্থনীতি সচল না থাকলে আফ্রিকার অধিকাংশ দেশের কী ধরনের বিপর্যয় ঘটতে পারে। বিপুল পরিমাণ অর্থ সাহায্য করে ক্যামেরুনের অর্থনীতিকে স্থিতিশীল করার চেষ্টা চলছে। অন্য দিকে সেখানে করোনা আক্রান্তের সংখ্যাও বাড়ছে।

বাকি ইউরোপের পরিস্থিতি খানিকটা স্বাভাবিক হলেও রাশিয়ায় নতুন করে করোনা পরিস্থিতি ক্রমশ ভয়াবহ চেহারা নিচ্ছে। জার্মানি এবং ফ্রান্সকে টপকে রাশিয়া এখন পঞ্চম বৃহত্তম করোনা আক্রান্ত রাষ্ট্র। মোট আক্রান্তের পরিমাণ ১ লাখ ৭৭ হাজার। গত চার দিনে রেকর্ড পরিমাণ রোগী বেড়েছে। একেক দিন আক্রান্তের সংখ্যা ১০ হাজার ছাড়িয়ে গিয়েছে।

জনস হপকিন্স বিশ্ববিদ্যালয় এবং বিশ্ব স্বাস্থ্য সংস্থার দেওয়া তথ্য অনুযায়ী শুক্রবার সকাল পর্যন্ত গোটা বিশ্বে মোট করোনা আক্রান্তের সংখ্যা ৩৯ লাখ ১৬ হাজার। মৃত দুই লাখ ৭০ হাজার। সুস্থ হয়েছেন ১৩ লাখ ৪৩ হাজার।

করোনার প্রকোপ যত দীর্ঘস্থায়ী হচ্ছে, পৃথিবী জুড়ে অর্থনীতি ততই সংকটজনক চেহারা নিচ্ছে। অর্থনৈতিক ভাবে পৃথিবীর তৃতীয় শক্তিশালী দেশ জাপানে গভীর মন্দা শুরু হয়েছে। বিশেষজ্ঞরা বলছেন, করোনা পরিস্থিতির উন্নতি না হলে আপাতত এই সংকট কাটার কোনও সম্ভাবনা নেই।

এ দিকে হংকংয়ের একটি বিশ্ববিদ্যালয় সম্প্রতি জানিয়েছে, শুধু মুখ আর নাক নয়, চোখ দিয়েও করোনা ভাইরাস শরীরে প্রবেশ করছে। শুধু তাই নয়, তাদের বক্তব্য সার্স ভাইরাসের চেয়ে করোনা অন্তত ১০০ গুণ বেশি শক্তিশালী।

একগুচ্ছ খারাপ খবরের মধ্যে সামান্য সুসংবাদ অস্ট্রেলিয়ায়। দেশের সরকার ঠিক করেছে আগামী চার সপ্তাহের মধ্যে ধীরে ধীরে লকডাউন পুরোপুরি তুলে নেওয়া হবে। তবে সামাজিক দূরত্বের মতো কিছু বিষয়ে বিধিনিষেধ কার্যকর থাকবে।

এসজি/জিএইচ (রয়টার্স, এপি, এএফপি)