অশান্ত মণিপুরে অপহরণ, মৃত্যু, আগুন, গুলি, আরো কেন্দ্রীয় বাহিনী
মেইতেই এবং কুকি-জো-দের বিক্ষোভ ও সংঘর্ষে অশান্ত মণিপুর। ২০২৩-এর মে মাস থেকে চলা এই আশান্তি সম্প্রতি আরো বেড়েছে।
অপহরণ ও মৃত্যু
মণিপুরের জিরিবাম শিবির থেকে ছয়জনকে অপহরণ করা হয়। পরে তাদের মৃতদেহ নদীর জলে ভেসে আসে। এরপরই ইম্ফলে প্রবল বিক্ষোভ দেখাতে থাকেন মেইতেই সম্প্রদায়ের মানুষ। সেই বিক্ষোভের হাত থেকে রাজনীতিকরাও রক্ষা পাননি।
ক্ষোভের জের
বিক্ষোভকারীদের রাগ গিয়ে পড়ে রাজনীতিকদের উপর। বিজেপি-র চারজন মন্ত্রী ও বিধায়ক এবং কংগ্রেসের একজন বিধায়কের বাড়ি আক্রমণ করা হয় এবং আগুন ধরিয়ে দেয়া হয়। এরমধ্যে মুখ্যমন্ত্রী এন বীরেন সিংয়ের জামাতা আরকে ইমোর বাড়িও আছে। তখন অবশ্য তারা বা পরিবারের কেউ সেখানে ছিলেন না। এক মন্ত্রী তো ভয়ে বাড়ির সামনে বাঙ্কার পর্যন্ত বানিয়ে ফেলেছেন।
বিক্ষোভ, পুলিশের গুলি, মৃত্যু
জিরিবাম থানার কাছে কংগ্রেস ও বিজেপি অফিসেও আগুন ধরিয়ে দেয় বিক্ষোভকারীরা। জিরিবামের বাবুপাড়ায় প্রবল বিক্ষোভ নিয়ন্ত্রণ করতে গিয়ে পুলিশ গুলি চালায়। তাতে একজনের মৃত্যু হয়েছে।
সিআরপিএফের গুলিতে নিহত ১০
কেন্দ্রীয় বাহিনী সিআরপিএফের গুলিতে ১০ জন কুকি যুবকের মৃত্যু হয়েছে। কেন্দ্রীয় বাহিনীর দাবি, তারা সন্ত্রাসবাদী ছিল। আর কুকিদের দাবি, তারা গ্রামরক্ষী বাহিনীর সদস্য ছিল। মণিপুরে কুকি ও মেইতেই অধ্যুষিত প্রতিটি গ্রামেই রক্ষী বাহিনী প্রহরার কাজ করে। সম্ভাব্য আক্রমণ ঠেকানোর জন্যই এই ব্যবস্থা।
মৃতদের কফিন নিয়ে
কুকি সংগঠনগুলি হুমকি দিয়েছে, মঙ্গলবার তারা চূড়াচাঁদপুরে মৃতদের কফিন নিয়ে মিছিল করবেন। তিনটি ছাত্র সংগঠন জানিয়েছে, দশম থেকে বারো ক্লাসের ছাত্রছাত্রীরা কালো ব্যাজ পরে মিছিলে অংশ নেবে। তারা ১০টি প্রতীকী কফিন বহন করে নিয়ে যাবে। কুকিদের এই মিছিল ঘিরেও প্রবল উত্তেজনা দেখা দিয়েছে। নিরাপত্তা বাহিনীও উপযুক্ত ব্যবস্থা নিয়েছে।
প্রচার ফেলে দিল্লিতে
মণিপুরে সহিংসতা বেড়ে যাওয়ায় ফলে মহারাষ্ট্রে প্রচারের মাঝপথেই দিল্লি ফিরে আসেন কেন্দ্রীয় স্বরাষ্ট্রমন্ত্রী অমিত শাহ। তিনি দিল্লিতে ফিরেই জরুরি বৈঠকে বসেন।
আরো ৫০ কোম্পানি কেন্দ্রীয় বাহিনী
কেন্দ্রীয় স্বরাষ্ট্র মন্ত্রণালয় সিদ্ধান্ত নিয়েছে, মণিপুরে আরো ৫০ কোম্পানি কেন্দ্রীয় বাহিনী পাঠানো হবে। সিআরপিএফের একটি কোম্পানিতে ১৩৫ জন করে জওয়ান থাকেন। মণিপুরের তিনটি মামলার তদন্তভার এনআইএ-র হাতে তুলে দেয়া হয়েছে। মেইতেইরা কেন্দ্রীয় বাহিনীর পক্ষে থাকলেও কুকিদের দাবি, আসাম রাইফেলসকে মোতায়েন করতে হবে।
পরিস্থিতি গুরুতর
কংগ্রেস ইতিমধ্যে রাজ্যের মুখ্যমন্ত্রী এন বীরেন সিং ও কেন্দ্রীয় স্বরাষ্ট্রমন্ত্রী অমিত শাহের পদত্যাগ দাবি করেছে। অন্য বিরোধীরাও সোচ্চার হয়েছে। মঙ্গলবার মুখ্যমন্ত্রীর ডাকা বৈঠকে বিজেপি জোটের ১১জন বিধায়ক ছিলেন না। অন্য বিধায়করা দাবি করেছেন, কুকিদের বিরুদ্ধে কড়া ব্যবস্থা না নিলে এবং সেনার বিশেষ ক্ষমতা তুলে না নিলে তারা মানুষের পরামর্শ মেনে পরবর্তী পদক্ষেপ নেবেন।