1. কন্টেন্টে যান
  2. মূল মেন্যুতে যান
  3. আরো ডয়চে ভেলে সাইটে যান

অভ্র-বিজয় বিতর্কের সুরাহা চায় ব্লগাররা

২০ মে ২০১০

একদিনে বহুদিনের বিজয়, অন্যদিকে নব প্রজন্মের অভ্র৷ কম্পিউটারে তথা ইন্টারনেটে বাংলা লেখালেখির ক্ষেত্রে এদের অবদান অনস্বীকার্য৷ বিরোধ এবার দু’য়ের মাঝে৷ একপক্ষের দাবি, চুরি হয়েছে লে-আউট৷ অন্যপক্ষ বলছে, ভাষা হোক উম্মুক্ত৷

https://p.dw.com/p/NSRC
ছবি: www.omicronlab.com

কম্পিউটারে বাংলা ভাষায় লেখালেখির শুরুটা অনেকের ক্ষেত্রেই বিজয়ের হাত ধরে৷ বিশেষ করে যারা কম করে হলেও এক যুগ ধরে বাংলা লিখছেন, তাদের অধিকাংশই বিজয় কী-বোর্ড লে-আউটে বেশ সাবলিল৷

কিন্তু সেই কম্পিউটারে বাংলা লেখা মানুষগুলো যখন ইন্টারনেটে লিখতে শুরু করলেন, তখন তারা হাতে পেলেন অভ্র৷ যে কিনা নিজেকে যেকোন সাইটে জুড়ে নেয়ার সুযোগ দিচ্ছে, এমনকি সুযোগ দিচ্ছে বিনা খরচায় ব্যবহারের৷ তাই, ইন্টারনেটে লেখালেখির জন্য খুব দ্রুতই জনপ্রিয় হয়ে ওঠে অভ্র৷ বিশেষ করে বর্তমান বাঙালি ইন্টারনেট প্রজন্ম অনেকটাই নির্ভরশীল অভ্র'র উপর৷

Screenshot www.bijoyekushe.net/
অভ্র'র একটি কী-বোর্ড লে-আউটের সঙ্গে অনেকটা মিলে যাচ্ছে বিজয়ের লে-আউটছবি: http://www.bijoyekushe.net/

বিপত্তি লে-আউট নিয়ে

তবে বিপত্তি অন্যত্র৷ অভ্র'র একটি কী-বোর্ড লে-আউটের সঙ্গে অনেকটা মিলে যাচ্ছে বিজয়ের লে-আউট৷ আর তাই, বিজয় কী-বোর্ড লে-আউটের নির্মাতা প্রতিষ্ঠান আনন্দ কম্পিউটার্স এর কর্ণধার মোস্তফা জব্বার দাবি করছেন, ‘‘অভ্র নামক যে সফটওয়্যারটি আছে, তাতে বিজয় কী-বোর্ড লে-আউট ব্যবহার করাটা পাইরেসি৷''

যদিও অভ্র'র লে-আউটে কয়েকটি পরিবর্তন চোখে পড়ার মতো, তারপরও বিজয় আর অভ্র'র এক অংশের লে-আউটের মধ্যে মিল কমপক্ষে ৮০ শতাংশ৷ তবে, এই দুই সফটওয়্যারের নির্মাণ পদ্ধতি এবং ধরণ আলাদা বলে মত অনেকের৷ বিষয়টি নিয়ে অভ্র'র নির্মাতা মেহেদী হাসান খান-এর সঙ্গে কথা বলার জন্য কয়েকবার তাঁর মোবাইলে চেষ্টা করা হলেও, শেষ পর্যন্ত কোন মন্তব্য পাওয়া যায়নি৷ অবশ্য দৈনিক প্রথম আলোতে মেহেদী দিনকয়েক আগেই মন্তব্য করেছেন এভাবে, ‘‘আইনি প্রক্রিয়ার মাধ্যমেই আমরা আমাদের যুক্তি ও অবস্থান তুলে ধরব৷''

সোচ্চার ব্লগাররা

অভ্র-বিজয় নিয়ে এই বিতর্কে সোচ্চার বাঙালি ব্লগাররা৷ কমিউনিটি ব্লগ সাইট কিংবা ব্যক্তিগত ব্লগ – এমনকি ফেসবুক, সর্বত্রই আলোচনার বিষয় অভ্র-বিজয় দ্বন্দ্ব৷ ডয়চে ভেলের সেরা বাংলা ব্লগ প্রতিযোগিতায় বিজয়ী ব্লগার আলী-মাহমেদ এই বিষয়ে বলেন, ‘‘অভ্র চাচ্ছে ভাষা উম্মুক্ত হোক এবং এর জন্য এরা কেউ টাকা চাচ্ছে না৷ এই সফটওয়্যার ব্যবহার করার জন্য আমার নিজেকে কখনো চোর মনে হবেনা৷''

BOB Gewinner Ali Mahmed
ব্লগার আলী মাহমেদছবি: DW

তিনি বলেন, ‘‘বাংলা ভাষা, বাংলা ভাষার জন্য, বাংলা ভাষা উম্মুক্ত করার জন্য যে টাকা চাইবে, তাকেই আমি অপছন্দ করবো৷ কারণ অর্থের লালসার কাছে আর যাই হোক, দেশপ্রেম হয়না৷''

একই বিষয়ে কিছুটা ভিন্নমত পোষণ করেছেন উপস্থাপক, মিডিয়া ব্যক্তিত্ব আব্দুন নুর তুষার৷ এই বিষয়ে ‘সাপ্তাহিক' পত্রিকায় লেখা তাঁর প্রতিক্রিয়া নিয়ে বিতর্কও চলছে বেশ৷ ডয়চে ভেলেকে তুষার বলেন, ‘‘একটি সফটওয়্যার ফ্রি অথবা ফ্রি নয়, এটি আসলে তর্কের জায়গাটি নয়৷ আর আমার সহজ যুক্তিটি হচ্ছে, সফটওয়্যার হচ্ছে কলমের মতো, ভাষার পরাধীনতার সঙ্গে সফটওয়্যারের ফ্রি হওয়া না হওয়ার কোন সম্পর্ক নাই৷''

তিনি বলেন, ‘‘যদি সফটওয়্যার দিয়ে বাংলা লিখতে গেলে সেই সফটওয়্যারটি ফ্রি হতেই হবে, এটি আমরা বলি, তাহলে কলম দিয়ে বাংলা লিখতে গেলে, সকল কলম ফ্রি করে দেয়া উচিত৷''

সমাধান চায় ব্লগাররা

এদিকে আলোচনা সমালোচনা যাই থাক, অভ্র-বিজয়ের এই বিবাদ দিনকে দিন জটিল আকার ধারণ করছে৷ তাই, বিষয়টির সমাধানের দিকেই নজর ব্লগার আরিফ জেবতিকের৷ তিনি বলেন, ‘‘অভ্র এবং বিজয় নিয়ে যে তর্কটি শুরু হয়েছে, এটি আসলে আমাদের সকলের জন্যই বিব্রতকর৷ বিশেষ করে ইন্টারনেটে বাংলা লেখালেখির যে ব্যাপক প্রসার হচ্ছে, এই সময়টাতে সেই বিব্রতকর পরিস্থিতি আমাদের জন্য কাম্য নয়৷''

Screenshot www.amarblog.com/
অভ্র-বিজয় নিয়ে এই বিতর্কে সোচ্চার বাঙালি ব্লগাররাছবি: http://www.amarblog.com/

তিনি বলেন, ‘‘জিনিসটা যেহেতু সরকারের কাছে আছে এবং কপিরাইট অফিস ইতিমধ্যেই মেহেদীকে একটি নোটিশ জারি করেছে, সেক্ষেত্রে আমার মনে হয় এটি সরকারি পর্যায়েই সমাধান করে ফেলা উচিত৷''

কপিরাইট কার্যালয়

বর্তমানে অভ্র-বিজয়ের এই দ্বন্দ্বের অবস্থান কপিরাইট কার্যালয়ে৷ সংস্থাটি থেকে অভ্র'র নির্মাতাকে পাঠানো নোটিশের জবাব দেয়ার সময় শেষ হচ্ছে ২২শে মে৷ মোস্তফা জব্বার অবশ্য জানিয়েছেন, ‘‘অভ্র বিরুদ্ধে তিনটি আইনে ব্যবস্থা নেয়ার সুযোগ রয়েছে৷ আর তাই কপিরাইট রেজিস্ট্রারের সিদ্ধান্ত না মানলে অভ্র'র বিরুদ্ধে আইনানুগ ব্যবস্থা নিতে চান তিনি৷''

উল্লেখ্য, বাংলাদেশে কম্পিউটার কিংবা ইন্টারনেট-এর ব্যবহার বৃদ্ধির সঙ্গে সঙ্গে বাড়ছে এই খাতে তরুণ প্রোগ্রামারদের সংখ্যাও৷ তাদের তৈরি বিভিন্ন ছোট ছোট সফটওয়্যারের ব্যবহারও বাড়ছে৷ আর তাই, এদেরকে উৎসাহ প্রদান যেমন জরুরি, তেমনি প্রয়োজন সঠিক দিন নির্দেশনাও৷ কিন্তু অভ্র-বিজয় দ্বন্দ্ব কি তরুণদের এই আগমনকে ক্ষতিগ্রস্ত করবে না ?

প্রতিবেদন: আরাফাতুল ইসলাম

সম্পাদনা: দেবারতি গুহ

স্কিপ নেক্সট সেকশন ডয়চে ভেলের শীর্ষ সংবাদ

ডয়চে ভেলের শীর্ষ সংবাদ

Bangladesh Zeitungen
স্কিপ নেক্সট সেকশন ডয়চে ভেলে থেকে আরো সংবাদ

ডয়চে ভেলে থেকে আরো সংবাদ

প্রথম পাতায় যান