1. কন্টেন্টে যান
  2. মূল মেন্যুতে যান
  3. আরো ডয়চে ভেলে সাইটে যান

৮০ বছরে পা দিলেন হেলমুট কোল

৩ এপ্রিল ২০১০

আধুনিক জার্মানির ইতিহাসের অন্যতম প্রধান রাজনৈতিক ব্যক্তিত্ব ও প্রাক্তন চ্যান্সেলর হেলমুট কোল শনিবার তাঁর ৮০তম জন্মদিন পালন করছেন৷ বিতর্কিত এই নেতার রাজনৈতিক জীবনের নতুন করে মূল্যায়ন শুরু হয়ে গেছে৷

https://p.dw.com/p/MmdA
জার্মানি ও ইউরোপীয় ঐক্যের ক্ষেত্রে হেলমুট কোল’এর অবদান অনস্বীকার্যছবি: AP/DW

প্রাক্তন জার্মান চ্যান্সেলর হেলমুট কোল ৮০ বছরের জন্মদিন পালন করছেন৷ দুই জার্মানির পুনরেকত্রিকরণ এবং ইউরোপীয় ইউনিয়নের সাফল্যের পেছনে বিশাল অবদানের কারণে জার্মান ইতিহাসে তাঁর নাম অমর হয়ে থাকবে, এবিষয়ে কোন সন্দেহ নেই৷ কিন্তু অন্যদিকে খ্রীস্টীয় গণতন্ত্রী দলের চাঁদা কেলেঙ্কারির কারণে সক্রিয় রাজনীতি থেকে তাঁর প্রস্থান সেই গৌরবের উপর কিছুটা কালো ছায়া ফেলেছে৷ আজ ইউরোপ তথা জার্মানির রাজনীতিতে যেসব মৌলিক বিষয় নিয়ে বিতর্ক দেখা যাচ্ছে, তার প্রেক্ষাপটে কোল'এর মত দূরদৃষ্টিসম্পন্ন ও বিশাল মাপের নেতার অভাব বোধ করছেন অনেকেই৷ জার্মানির এই প্রভাবশালী নেতার জন্মদিনে তাই নতুন করে তাঁর মূল্যায়ন করা হচ্ছে৷

Helmut Kohl in einer Menschemenge
১৯৯০ সালে পুনরেকত্রিত জার্মানির প্রথম নির্বাচনের প্রচারের সময় পূবের জনতা কোল’কে ঘিরে উচ্চ্বাসে ভেঙে পড়েছবি: picture-alliance / dpa

‘‘প্রিয় বন্ধুরা, আমরা যদি সুযোগের সদ্ব্যবহার না করি, জার্মানি ও ইউরোপের ঐক্য হতে না দিই, জার্মান ইউরোপীয় এবং ইউরোপীয় জার্মান হওয়ার পথে না এগোই – তাহলে তা হবে এই ঐতিহাসিক সন্ধিক্ষণে আমাদের চরম ব্যর্থতা৷'' বলেন কোল৷

শীতল যুদ্ধের অবসান থেকে শুরু করে জার্মানি তথা ইউরোপীয় ঐক্যের ইতিহাস আজ আমাদের সবার জানা৷ কিন্তু প্রায় ২ দশক আগের সেই যুগান্তকারী ঘটনা এত দ্রুত ঘটেছিল, যে সেদিনের নেতাদের প্রতিটি সিদ্ধান্তের উপর এই যুগান্তকারী প্রক্রিয়ার সাফল্য বা ব্যর্থতা নির্ভর করছিল৷ দলীয় রাজনীতি, ভোট ব্যাঙ্ক, নিজস্ব রাজনৈতিক ভবিষ্যৎ – এসবের ঊর্ধ্বে উঠে সঠিক ঐতিহাসিক প্রেক্ষাপট বুঝে ওঠাই ছিল প্রধান চ্যালেঞ্জ৷ হেলমুট কোল সেদিন সেই অসাধ্য সাধন করতে পেরেছিলেন৷ অথচ তাঁর মত মানুষের কাছে এমন প্রত্যাশা কিন্তু কেউ করে নি৷ নিজস্ব ক্ষমতার বিষয়ে তিনি এতটাই সচেতন ছিলেন, যে দীর্ঘ রাজনৈতিক জীবনে তিনি সেই ক্ষমতাকেন্দ্রকে অটুট রাখতে যে কোন মূল্য চোকাতে প্রস্তুত ছিলেন৷ কিন্তু জার্মান ও ইউরোপীয় ঐক্যের প্রতি তাঁর অগাধ বিশ্বাস ছিল৷ ফ্রান্স ও জার্মানির মধ্যে বিশেষ সম্পর্ক আরও জোরদার করা থেকে শুরু করে অভিন্ন মুদ্রা ‘ইউরো' চালু করার প্রক্রিয়া – প্রতিটি ক্ষেত্রে তিনি সর্বশক্তি প্রয়োগ করে স্থায়ী শান্তি ও স্থিতিশীলতার স্বার্থে সাহসী পদক্ষেপ নিয়েছেন৷

Merkel Galerie Bild5
দলের চাঁদা কেলেঙ্কারির জের ধরে সক্রিয় রাজনীতি থেকে বিদায় নিতে বাধ্য হন কোলছবি: dpa/Bildfunk

মানুষ হিসেবেও তাঁর এই দৃঢ় চিত্ত নানা ভাবে সবার নজর কেড়েছে৷ শেষ পর্যন্ত সেই অনড় অবস্থানের কারণেই তাঁকে সক্রিয় রাজনীতি থেকে বিদায় নিতে হল৷ দলের বে-আইনী গোপন তহবিলে কারা চাঁদা দিয়েছে, সেই প্রশ্নের জবাব দিতে তিনি অস্বীকার করেন৷ তাঁদের পরিচয় গোপন রাখার প্রতিশ্রুতি তাঁর কাছে সেদিন অনেক বেশী জরুরি ছিল৷ আজ ৮০তম জন্মদিন উপলক্ষে বহুদিন পর তাঁকে ঘিরে আবার উচ্ছ্বাসের জোয়ার নেমেছে৷ ক্ষমতায় থাকলে ইউরোপীয় ইউনিয়নে তুরস্কের যোগদান থেকে শুরু করে ইউরোপীয় স্তরে বর্তমান অর্থনৈতিক চ্যালেঞ্জের মত গুরুত্বপূর্ণ ঐতিহাসিক প্রশ্নের মুখে তিনি কী অবস্থান নিতেন, বর্তমান নেতৃত্বের দুর্বলতার পরিপ্রেক্ষিতে সেই প্রশ্নও অনেকের মনে জেগে উঠছে৷

প্রতিবেদন: সঞ্জীব বর্মন, সম্পাদনা: জাহিদুল হক