1. কন্টেন্টে যান
  2. মূল মেন্যুতে যান
  3. আরো ডয়চে ভেলে সাইটে যান

২১ আগস্ট মামলার রায়ের অপেক্ষা

হারুন উর রশীদ স্বপন ঢাকা
২১ আগস্ট ২০১৮

১৪ বছর আগে বঙ্গবন্ধু অ্যাভিনিউতে গ্রেনেড হামলা চালিয়ে ২৪ জনকে হত্যা করা হয়৷ উদ্দেশ্য ছিল শেখ হাসিনাকে হত্যা করা৷ বঙ্গবন্ধু হত্যা এবং যুদ্ধাপরাধীদের বিচারের পর সেই ২১ অগাস্ট গ্রেনেড মামলার রায়ও হতে চলেছে৷

https://p.dw.com/p/33U1F
Unruhe in Bangladesch
ছবি: AP

২০১৪ সালের ২১ অগাস্ট এই হামলার ঘটনায় দায়ের করা হয় দু'টি মামলা৷ একটি হত্যা এবং আরেকটি অস্ত্র এবং বিস্ফোরক আইনে৷ দু'টি মামলার আসামি একই৷দুটি মামলারই বিচার চলছে ঢাকার নাজিমউদ্দিন রোডের সাবেক কেন্দ্রীয় কারাগারের সামনে দ্রুত বিচার আদালতে৷ মামলাটি এখন শেষ পর্যায়ে রয়েছে৷ সাবেক স্বারাষ্ট্র প্রতিমন্ত্রী লুৎফুজ্জামান বাবরকে জেরার মধ্য দিয়ে এই মামলার বিচার কার্যক্রম শেষ হবে৷ তারপরই রায়৷ রাষ্ট্রপক্ষের প্রধান আইনজীবী (পিপি) সৈয়দ রেজাউর রহমান ডয়চে ভেলেকে বলেন, ‘‘আমরা রাষ্ট্রপক্ষ ৫১১ জন সাক্ষীর মধ্যে ২২৫ সাক্ষী আদারতৈ উপস্থাপন করেছি৷ আসামি পক্ষ থেকে সাফাই স্বাক্ষ্য দিয়েছে ১৯ জন৷ সাক্ষ্য এবং জেরা শেষে এখন যুক্তিতর্ক চলছে৷ এখন বাবর সাহেবের (লুৎফুজ্জামান বাবর) যুক্তি-তর্ক চলছে৷ পাঁচ দিন হয়েছে৷ আগামী ২৭, ২৮ এবং ২৯ অগাস্ট পরবর্তী যুক্তি তর্কের তারিখ৷ এর মধ্য দিয়ে মামলার যুক্তিতর্ক শেষ হবে৷ এরপরই মামলার রায় এবং আদেশের দিন ধার্য হবে৷ আশা করি, আমরা ন্যায় বিচার পাবো৷''

ঘটনার পর মামলাটির তদন্ত ভিন্নখাতে প্রবাহিত করার চেষ্টা করেছিল তখনকার বিএনপি সরকার৷ জজ মিয়া নামে একজনকে দিয়ে আদালতে সাজানো জবানবন্দি দেওয়ানো হয়েছিল৷ কিন্তু ২০০৮ সালে তত্ত্বাবধায়ক সরকার ক্ষমতায় যাওয়ার পর নতুন করে এ মামলার তদন্তের নির্দেশ দেয়া হয়৷ ২০০৯ সালে মহাজোট সরকার ক্ষমতায় যাওয়ার পর মামলার অধিকতর তদন্ত করা হয়৷ সম্পূরক অভিযোগপত্রে মোট ৫২ জনকে আসামি করা হয়৷

‘তদন্তে প্রমাণ হয়েছে, হামলায় ব্যবহৃত আর্জেস গ্রেনেড পাকিস্তানে তৈরি’

‘আর যেন কোনো ১৭ বা ২১ আগস্ট দেখতে না হয়'

অ্যাডভোকেট সৈয়দ রেজাউর রহমান বলেন, ‘‘সাক্ষ্য-প্রমাণে উঠে এসেছে যে, এই হামলার উদ্দেশ্য ছিল সেই সময়ের বিরোধী দলীয় নেত্রী এবং বর্তমান প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনাকে হত্যা করে আওয়ামী লীগকে নেতৃত্বশূন্য করা৷ তারা দেশকে অস্থিতিশীল করে বাংলাদেশকে একটি অকার্যকর রাষ্ট্রে পরিণত করতে চেয়েছিল৷''

তিনি বলেন, ‘‘তদন্তে প্রমাণ হয়েছে, হামলায় ব্যবহৃত আর্জেস গ্রেনেড পাকিস্তানে তৈরি এবং পাকিস্তান থেকেই আনা হয়৷ জঙ্গি নেতা মাওলানা তাজউদ্দিন এবং পাকিস্তানি নাগরিক  আব্দুল মজিদ ভাটের সহায়তায় পাকিস্তান থেকে এই গ্রেনেড এবং গুলি এনেছে৷ মজিদ ভাট এখন কারাগারে আছে৷ তাজউদ্দিন পলাতক৷''

আরেক প্রশ্নের জবাবে তিনি  বলেন, ‘‘বিএনপি জামায়াত চার দলীয় জোট সরকারের প্রশাসন, হাওয়া ভবন. মন্ত্রী আব্দুস সালাম পিন্টুর সরকারি বাসভবনসহ ১০টি জায়গায় এই হামলা নিয়ে বৈঠক এবং পরিকল্পনা হয়েছে৷ আব্দুস সালাম পিন্টুর বাসা থেকে ১৫টি আর্জেস গ্রেনেড ও ২০ হাজার টাকা দেয়া হয়েছে হামলার জন্য৷ বাংলাদেদেশের তিনটি এবং আন্তর্জাতিক দুইটি মিলিয়ে মোট পাঁচটি জঙ্গি সংগঠন সরকারের মদদপুষ্ট হয়ে এই হামলা চালিয়েছে৷''

লুৎফুজ্জামান বাবরের আইনজীবী অ্যাডভোকেট মো. নজরুল ইসলাম ডয়চে ভেলেক বলেন, ‘‘আমি তখনকার ডিএমপি কমিশনার ও পুলিশের আইজির মামলা করেছি৷ এখন বাবর সাহেবের পক্ষে মামলা পরিচালনা করছি৷ মামলায় বলা হয়েছে, হামলার জন্য দু'টি জায়গায় ষড়যন্ত্রমূলক বৈঠক করা হয়েছে৷ সাবেক মন্ত্রী আব্দুস সালাম পিন্টর বাসা এবং হওয়া ভবনে৷ বাবর সাহেব ওই দু'টি বৈঠকে উপস্থিত ছিলেন৷ আমি প্রমাণের চেষ্টা করেছি, ওই দুটি বৈঠক হয়নি এবং বাবর সাহেব সেখানে উপস্থিতও ছিলেন না৷ ২৪ জন লোক নিহত হয়েছেন, এটা সত্য৷ আরো যারা আসামি, তাদের পক্ষে আইনজীবীরা তাদের বক্তব্য তুলে ধরেছেন, নির্দোষ প্রমাণের চেষ্টা করেছেন৷ এখন আদালত কী রায় দেন তা দেখার অপেক্ষায়৷'' 

‘প্রমাণের চেষ্টা করেছি, ওই দুটি বৈঠক হয়নি এবং বাবর সাহেব সেখানে উপস্থিতও ছিলেন না’

সম্পূরক অভিযোগপত্রে মোট ৫২ জনকে আসামি করা হলেও মানবতাবিরোধী অপরাধের মামলায় জামায়াত নেতা আলী আহসান মোহাম্মদ মুজাহিদ এবং সিলেটে সাবেক ব্রিটিশ হাইকমিশনার আনোয়ার চৌধুরীর ওপর গ্রেনেড হামলা মামলায় হরকাতুল জিহাদ নেতা মুফতি আবদুল হান্নান ও তার সহযোগী শরীফ শাহেদুল বিপুলের ফাঁসি কার্যকর হয়েছে৷ তাই এ মামলার আসামির তালিকা থেকে তাদের বাদ দেওয়া হয়৷ তাই এখন মামলার আসামি ৪৯ জন৷ পলাতক ১৯ জন আসামির মধ্যে আছেন বিএনপি চেয়ারপার্সন খালেদা জিয়ার বড় ছেলে ও দলের সিনিয়র ভাইস চেয়ারম্যান তারেক রহমান, চেয়ারপার্সনের রাজনৈতিক সচিব হারিছ চৌধুরী, ডিজিএফআইয়ের সাবেক পরিচালক মেজর জেনারেল (অব.) এটিএম আমিন আহমদ, লে. কর্নেল (অব.) সাইফুল ইসলাম জোয়ার্দার, সাবেক সংসদ সদস্য কাজী শাহ মোফাজ্জল হোসেন কায়কোবাদ, হানিফ পরিবহনের মালিক মোহাম্মদ হানিফ, পুলিশের সাবেক ডিআইজি খান সাঈদ হাসান ও ঢাকা মহানগর পুলিশের সাবেক ডিসি (পূর্ব) ওবায়দুর রহমান খান. মাওলানা তাজউদ্দিন প্রমূখ৷

অ্যাডভোকেট রেজাউর রহমান জানান, ‘‘পলাতকদের বিরুদ্ধে আদালত গ্রেপ্তারি পরওয়ানা জারি করেছেন৷ তাদের ইন্টারপোলের মাধ্যমে ফেরত আনার চেষ্টা করছে সরকার৷''

স্কিপ নেক্সট সেকশন এই বিষয়ে আরো তথ্য

এই বিষয়ে আরো তথ্য

আরো সংবাদ দেখান