1. কন্টেন্টে যান
  2. মূল মেন্যুতে যান
  3. আরো ডয়চে ভেলে সাইটে যান

২০১৭: নারী অধিকারের জন্য অশনিসংকেত

২ জানুয়ারি ২০১৭

মার্কিন যুক্তরাষ্ট্রে নেতৃত্ব বদলের ফলে নারী অধিকারের ক্ষেত্রে বিভিন্ন বাধাবিপত্তির আশঙ্কা করছেন অ্যামনেস্টি ইন্টারন্যাশনাল ও হিউম্যান রাইটস ওয়াচের মতো সংস্থার প্রতিনিধিরা৷ ইউরোপে দক্ষিণপন্থি প্রবণতাও সে আশঙ্কা বাড়িয়েছে৷

https://p.dw.com/p/2V809
Darmstadt Gerichtsprozess Ehrenmord Angeklagte Shazia K.
ছবি: picture-alliance/dpa/B. Roessler

শুধু মার্কিন যুক্তরাষ্ট্রে নয়, পশ্চিম ও পূর্ব ইউরোপের বিভিন্ন দেশে এখন নিজেকে বিচ্ছিন্ন রাখার প্রবণতা স্পষ্ট চোখে পড়ছে৷ কোথাও জাতীয়তাবাদী রাজনীতি দক্ষিণপন্থি রাজনীতির রূপ ধারণ করছে; কোথাও রক্ষণশীল খ্রিষ্টীয় সম্প্রদায় ও তার সঙ্গে যুক্ত গির্জার মতামত রাজনৈতিক গুরুত্ব পাচ্ছে৷

সব মিলিয়ে পরিস্থিতি দাঁড়াচ্ছে এই যে, ‘নারী অধিকারের সামনে বড় বড় চ্যালেঞ্জ' দেখছেন অ্যামনেস্টি ইন্টারন্যাশনাল ইউএসএ-র সত্তা ও বৈষম্য বিভাগের সিনিয়র ডাইরেক্টর  টারা দেমঁ৷ তার মধ্যে একটি ফলশ্রুতি হবে এই যে, বিশ্বব্যাপী ‘মহিলাদের বস্তুত দ্বিতীয় শ্রেণির নাগরিক', বলে ধরে নেওয়া হবে – বলেছেন দেমঁ৷

গর্ভপাত ও গর্ভনিরোধ

‘গ্লোবাল গ্যাগ রুল' বলে পরিচিত এই নির্দেশটি চালু হয়েছিল প্রেসিডেন্ট রোনাল্ড রেগানের আমলে৷ এর ফলে যেসব গোষ্ঠী বিদেশে মার্কিন আর্থিক সাহায্য পাচ্ছে, তারা গর্ভপাতের আয়োজন রাখতে পারবে না, এমনকি কাউকে গর্ভপাত সম্পর্কে পরামর্শও দিতে পারবে না – যদি এই সব কাজের অর্থ অপরাপর সূত্র থেকে আসে, সেক্ষেত্রেও নয়৷

প্রেসিডেন্ট বারাক ওবামা ২০০৯ সালে এই বিধি প্রত্যাহার করেন বটে, কিন্তু একটি কলমের খোঁচায় তা আবার পুনর্বহাল করা যেতে পারে৷ এছাড়া মার্কিন যুক্তরাষ্ট্র জাতিসংঘের ইউনাইটেড নেশনস পপুলেশন ফান্ডে অর্থপ্রদানও বন্ধ করে দিতে পারে, যদিও ইউএনপিএফ শুধুমাত্র সন্তানধারণ সংক্রান্ত স্বাস্থ্যসেবা দেয়, গর্ভপাতে সাহায্য বা সমর্থন করে না৷

বিদেশ থেকে টাকা পেলেই বিদেশি (গুপ্ত)চর!

সারা বিশ্বে নানা নারী অধিকার সংগঠন বিবাহবিচ্ছেদ থেকে শুরু করে শিশু বিবাহ ইত্যাদি নানা বিষয় নিয়ে আন্দোলন করে যাচ্ছে, যদিও তাদের কাজের পরিবেশ যেমন বিরূপ, তেমনই তাদের অর্থবল সামান্য৷ এক্ষেত্রে একাধিক দেশ এই সব গোষ্ঠীকে ‘ফরেন এজেন্ট' হিসেবে নাম লেখাতে বাধ্য করেছে, কেননা তারা আন্তর্জাতিক দাতাবর্গের কাছ থেকে অর্থসাহায্য পেয়ে থাকে৷ যুগপৎ মার্কিন সরকারি উৎস থেকেও অর্থসাহায্য কমবে, বলে আশঙ্কা করছেন হিউম্যান রাইটস ওয়াচের নারী অধিকার বিভাগের অস্থায়ি পরিচালক জ্যানেট ওয়ালশ৷

নারী নির্যাতন

পরিসংখ্যান বলে, বিশ্বে প্রতি তিনজন নারীর মধ্যে একজন শারীরিক অথবা যৌন নির্যাতনের শিকার হয়েছেন, অধিকাংশ ক্ষেত্রে নিজের স্বামীর হাতে৷ প্রত্যেক পাঁচজন নারীর একজন ধর্ষণ অথবা ধর্ষণের প্রচেষ্টার শিকার হবেন, বলছে জাতিসংঘ৷ এছাড়া নারীরা ভ্রুণহত্যা থেকে শুরু করে স্বগৃহে নির্যাতনের শিকার৷ অ্যামনেস্টি ইন্টারন্যাশনালের টারা দেমঁ-র মতে ‘‘মহিলাদের বিরুদ্ধে সহিংসতা একটি মানবাধিকার সংকট, একটি স্বাস্থ্য সংকট ও একটি সাস্কৃতিক সংকট৷''

যুক্তরাষ্ট্রে গর্ভপাতের অধিকার 

যুক্তরাষ্ট্রে গর্ভপাত বিরোধীরা ১৯৭২ সালে সুপ্রিম কোর্টের যে রায়টির ফলে গর্ভপাত বৈধ করা হয়, তা বাতিল করতে চান৷ ডোনাল্ড ট্রাম্প বলেছেন, তিনি সুপ্রিম কোর্টের যেসব নতুন বিচারকের নাম ঘোষণা করবেন, তারা গর্ভপাত বিরোধী হবেন৷ টেক্সাসে ইতিমধ্যেই আইন করা হয়েছে যে, গর্ভপাতের ভ্রুণকে মানবিক মর্যাদায় সমাধিস্থ করতে হবে, যার খরচ শত শত ডলার৷ ওহাইও বিশ সপ্তাহের পর গর্ভপাত নিষিদ্ধ করেছে৷

মুশকিল এই যে, ‘‘আইন যা-ই হোক না কেন, গর্ভপাত কোনোদিনই কমে না'', বলেছেন যুক্তরাষ্ট্রের ‘ন্যাশনাল অর্গানাইজেশন অফ উওমেন'-এর সভাপতি টেরি ও'নিল৷ তিনি মনে করেন, ‘‘যা কমে, তা হলো গর্ভপাতের নিরাপত্তা ও গর্ভপাত কমানোর সামর্থ্য৷''

নিম্ন আয়ের মহিলাদের পরিবার পরিকল্পনা সেবা প্রদান ও অপ্রাপ্তবয়স্ক মেয়েদের গর্ভধারণ নিরোধের জন্য যুক্তরাষ্ট্রে বিভিন্ন কর্মসূচি আছে৷ মার্কিন কংগ্রেস সেগুলিতে অর্থদান বন্ধ করতে পারে, এমন আশঙ্কা অমূলক নয়৷

নারী অধিকারের ক্ষেত্রে নেতৃত্ব দেবে কে?

সাম্প্রতিক কয়েক বছরে মার্কিন সরকার নারী অধিকারের উন্নতি ও সমর্থনে, বিশেষ করে জাতিসংঘ অনুমোদিত ‘গ্লোবাল ডেভেলপমেন্ট গোল'-সমূহ নির্দিষ্ট করার ব্যাপারে নেতৃস্থানীয় ভূমিকা নিয়েছে ৷

যুক্তরাষ্ট্র উত্তরোত্তর সেই ভূমিকা পালন করতে অস্বীকার করলে, ‘‘নারী অধিকার সংক্রান্ত আন্তর্জাতিক চুক্তি ও নারী অধিকারের ক্ষেত্রে সরকারবর্গের প্রতিশ্রুতি'', উভয় ক্ষেত্রেই জোয়ারের বদলে ভাটার আশঙ্কা দেখছেন ইন্টারন্যাশনাল উওমেন'স হেল্থ কোয়ালিশন-এর সভাপতি ফ্রঁসোয়া জিরার৷

এসি/এসিবি (রয়টার্স)

 

স্কিপ নেক্সট সেকশন এই বিষয়ে আরো তথ্য

এই বিষয়ে আরো তথ্য

আরো সংবাদ দেখান