1. কন্টেন্টে যান
  2. মূল মেন্যুতে যান
  3. আরো ডয়চে ভেলে সাইটে যান

১৯ স্বর্ণপদকের আড়ালের কিছু অতৃপ্তি

১০ ডিসেম্বর ২০১৯

এসএ গেমসে স্বর্ণপদক জয়ে আগের সব রেকর্ড ছাড়িয়ে গেছে বাংলাদেশ৷ আর্চারিতে এমন রেকর্ড গড়েছে যা কোনোদিনই ভাঙা সম্ভব নয়৷ সব মিলিয়ে অর্জন যে ভীষণ আনন্দের, তাতে কোনো সন্দেহ নেই৷ তবে আক্ষেপের জায়গাও আছে, আছে হতাশাও৷

https://p.dw.com/p/3UYEe
Südasienspiele 2019 | Nepal | Karate | Marzan Akter Piya |  Humaira Akhter Antara
ছবি: DW/M. Farid

শুরুতে অর্জনগুলোর কথাই বলি৷ এসব নিয়ে অবশ্য লেখালেখিও হয়েছে প্রচুর৷ এই প্রথম এসএ গেমসে সবচেয়ে বেশি ১৯টি স্বর্ণপদক জিতেছে বাংলাদেশ৷

এর আগে ২০১০ সালে ১৮টি সোনার পদক জেতাই ছিল এসএ গেমসে বাংলাদেশের সেরা সাফল্য৷সেবারের আসরটি হয়েছিল বাংলাদেশে৷ নেপালে এবার সেই সাফল্য ম্লান হলো৷

এছাড়া দেশের বাইরে সেরা সাফল্য এসেছিল ১৯৯৫ সালে, মাদ্রাজের এসএ গেমসে৷ সেবার ৭টি সোনার পদক জিতেছিল বাংলাদেশ৷

কাঠমান্ডুতে আরেকটি রেকর্ড গড়েছে বাংলাদেশ৷ আর্চারিতে রিকার্ভ ও কম্পাউন্ড মিলিয়ে দশ ইভেন্টেই আসরসেরা হয়েছে আর্চাররা৷দশটি সোনার পদকের সবগুলোই বাংলাদেশের! এক ইভেন্টের সবগুলো ইভেন্টে সোনা জয়ের এমন রেকর্ড ভবিষ্যতে হয়ত ছোঁয়া যাবে, তবে ভাঙা সম্ভব নয়৷

এর আগে নির্দিষ্ট কোনো ইভেন্ট থেকে সেরা সাফল্য এনে দিয়েছিল শুটিং৷ ১৯৯৩ সালে ৭টি সোনা জিতেছিল শুটাররা৷

ক্রিকেটেও শতভাগ সাফল্য পেয়েছে বাংলাদেশ৷ প্রথমে মেয়েরা, তারপর ছেলেরাও জিতেছে সোনা৷

ক্রিকেটের এ সাফল্য অবশ্য প্রত্যাশিতই ছিল৷ ভারত আর পাকিস্তান অংশ না নেয়ায় সেখানে তেমন কোনো চ্যালেঞ্জই ছিল না৷

চ্যালেঞ্জ যাদের জন্য বেশি কঠিন ছিল, এবারের সাফল্যে তাদের অবদানই সবচেয়ে বেশি৷ কারাতে, উশু, ভারোত্তোলন আর আর্চারির মতো খেলা এখন কীইবা পৃষ্ঠপোষকতা পায়৷ ক্রিকেটের ‘জামাই আদরের' বিপরীতে এদের অবস্থা তো অনেকটা সৎ মায়ের সন্তানদের মতো৷এবার কিন্তু বেশি স্বর্ণসাফল্য এনেছে তারাই৷

Ashish Chakraborty
আশীষ চক্রবর্ত্তী, ডয়চে ভেলেছবি: DW/T. Mehedi

সমালোচকরা হয়ত বলবেন, কিছু ইভেন্টে ভারত এবং পাকিস্তান অংশ নেয়নি, তাই অতীতে দেশে পাওয়া সেরা সাফল্যকেও এবার ম্লান করা সম্ভব হয়েছে৷ তবে এ কথা বলে কারাতে, উশু, ভারোত্তোলন আর আর্চারির অর্জনকে ছোট করা যাবে না৷ ভারত, পাকিস্তান না থাকলেও যারা ছিল, তাদের তুলনায়ও অনেক ক্ষেত্রে কম সুযোগ-সুবিধা পায় তারা৷ সেকথা মনে রেখে কম জনপ্রিয় বা প্রায় শুন্য-জনপ্রিয় খেলার পদকজয়ীদের বাহবা দিতেই হবে, দিতে হবে আরো এগিয়ে যাওয়ার প্রেরণা৷ এসএ গেমসে সোনা জিতে যারা অলিম্পিকে কিছু করে দেখানোর স্বপ্ন দেখছেন, তাদের দিতে হবে সব রকমের সহযোগিতা৷ অলিম্পিক থেকে পদক আসবে কিনা সেই ভাবনায় না গিয়েও দিতে হবে৷

একটু সুযোগ পেলে দেশের ছেলে-মেয়েরা যে কী করে দেখাতে পারে তার কিছু নমুনা এই আসরেও আমরা দেখেছি৷

মেধাবী ছাত্রী হুমায়রা আক্তার অন্তরা পরিবারের আপত্তি, সমাজের অসহযোগিতাকে তুচ্ছ করে কারাতেকে ধ্যানজ্ঞান মেনেছিলেন৷ তার হাত ধরে স্বর্ণপদক এসেছে বাংলাদেশে৷ 

মারজান আক্তার প্রিয়াকে নিয়েও একসময় রাজ্যের দুশ্চিন্তা ছিল বাবা-মায়ের, বাবা বলতেন, ‘‘তোমার জন্য আমি সমাজে মুখ দেখাতে পারি না৷'' সেই প্রিয়া এখন সারা দেশের প্রিয়মুখ, বাবারও সবচেয়ে গর্বের সন্তান৷

ইতি খাতুনের তো এতদিনে বালিকা-বধূ হয়ে কোনো এক গ্রামে পড়ে থাকার কথা৷ কিন্তু বাড়ি থেকে পালিয়ে ও যোগ দিয়েছিল আর্চারি ক্যাম্পে৷ সেই ইতি জিতেছে তিনটি সোনা৷

অবদান রোমান সানা আর সোহেল রানাও করেছেন সোনা জয়ের হ্যাটট্রিক৷ তাদেরও নিশ্চয়ই দক্ষিণ এশিয়ার সেরা হওয়ার পেছনে অনেক অশ্রু বিসর্জনের গল্প আছে৷ একটা সুযোগে সবার চোখেই এখন স্বপ্ন পূরণের ঝিকিমিকি হাসি৷

এত এত সাফল্যের গল্পের আড়ালে কিছু ব্যূর্থতার গ্লানিও আছে৷ আর সব বাদ দিলেও ফুটবলের ব্যর্থতার কথা একটু বলতেই হবে৷ অনেক আশা নিয়ে গিয়েও ফাইনালেই উঠতে পারেনি জামাল হোসেনের দল৷ ভারত, পাকিস্তান ফুটবলেও ছিল না৷ তাতে কী! ভুটান আর নেপালের কাছে হেরে পাঁচ দলের মধ্যে তৃতীয় হয়েছে তারা৷

তাছাড়া ১৯টি স্বর্ণ পদক জয়েও পদক তালিকায় বাংলাদেশ যে ভারত (১৬৪), নেপাল (৫০), শ্রীলঙ্কা (৩৯) আর পাকিস্তানের (৩০) অনেক পিছিয়ে, সেকথাও মনে রাখতে হবে৷

স্কিপ নেক্সট সেকশন এই বিষয়ে আরো তথ্য

এই বিষয়ে আরো তথ্য