১৪ লাখ মানুষের দেশে স্টার্ট-আপদের রমরমা
হয়তো তার ক্ষুদ্র জনসংখ্যাই ভবিষ্যৎমুখী স্টার্ট-আপের ক্ষেত্রে এস্টোনিয়াকে আন্তর্জাতিক মঞ্চে স্থান করে দিয়েছে৷ ডেলিভারি রোবট থেকে শুরু করে এআই-চালিত ভাষা অ্যাপ, সব কিছুই আছে এস্টোনিয়ার স্টার্ট-আপ রেঞ্জে৷
স্টারশিপের কাজ হবে...
...চিঠিপত্র বিলি করা! ভ্যানে করে এসে পিৎসা দিয়ে যাওয়া, কিংবা পার্সেল ডেলিভারি করা, কিংবা পিয়ন এসে চিঠি দিয়ে যাওয়ার আর প্রয়োজন পড়বে না৷ স্টারশিপ টেকনোলজিস কোম্পানিটির স্রষ্টা হলেন স্কাইপের দুই সহ-প্রতিষ্ঠাতা৷ কেম্পানির ট্যালিন, লন্ডন, ওয়াশিংটন, ক্যালিফোর্নিয়া ও হামবুর্গে অফিস আছে৷ সেখানে ডমিনো’স পিৎসা কোম্পানি আর হার্মেস লজিস্টিক কোম্পানি স্টারশিপ টেকনোলজিস-এর ডেলিভারি রোবটটি পরীক্ষা করে দেখছে৷
এ ধরণের স্টার্ট-আপে যারা বিনিয়োগ করে থাকে
‘ফান্ডারবিম’ কোম্পানিটির বয়স চার বছরও নয়৷ ইতিমধ্যেই সে ইউরোপের সেরা ‘ফিনটেক’ কোম্পানি – অর্থাৎ টেকনোলজি কোম্পানির অর্থ লগ্নিকারী সংস্থা হিসেবে নির্বাচিত হয়েছে৷ ‘ফান্ডারবিম’ স্টার্ট-আপের মুখ্য কার্যালয় হলো ট্যালিনের টেলিস্কিভি ক্রিয়েটিভ সিটিতে, যেখানে ‘লিংভিস্ট’ ভাষা অ্যাপ বা লিফ্ট৯৯-এর মতো স্টার্ট-আপের অফিস৷
বিজ্ঞানী থেকে ভাষাতত্ত্ববিদ
মাইট ম্যুন্টেল উদ্যোগী পুরুষ৷ এস্টোনিয়ার মানুষ; সুইজারল্যান্ডের ‘সার্ন’-এ পার্টিকল ফিজিসিস্ট হিসেবে কাজ করার সময়েই তাঁর মাথায় আসে যে, হিগস-বোসন কণিকা আবিষ্কার করার জন্য তিনি যে লগারিদমগুলি ব্যবহার করেছেন, সেগুলি দিয়ে ফরাসি ভাষাও শেখা যেতে পারে৷ আজ তিনি ভাষাশিক্ষার অ্যাপ লিংভিস্টের বিকাশে যে ৪০ জন বিজ্ঞানী সংশ্লিষ্ট, তাদের নেতৃত্ব দিয়ে থাকেন৷
স্টার্টআপ ওয়াল অফ ফেম
মানে ‘ওয়াক অফ ফেম’ আর ‘হল অফ ফেম’-এর মাঝামাঝি কিছু একটা! স্টার্টআপ সেক্টরে এস্টোনিয়ার উত্থানের শুরু স্কাইপ দিয়ে, মাইক্রোসফ্ট যা ২০১১ সালে ৮৫০ কোটি ডলার দিয়ে কেনে৷ স্কাইপের প্রতিষ্ঠাতারা তারপর ট্রান্সফারওয়াইজ, স্টারশিপ টেকনোলজিস ও অন্যান্য স্টার্টআপ শুরু করেছেন৷ সাধে কি আর তাদের ‘এস্টোনিয়ান মাফিয়া’ বলা হয়ে থাকে! এস্টোনিয়ায় প্রতি এক লাখ বাসিন্দা পিছু স্টার্টআপের সংখ্যা হলো ৩১, যা ইউরোপে তৃতীয়৷
হালফ্যাশনের প্রযুক্তি, কিন্তু চেহারাটা সে আমলের
‘ই-ড্রাইভ রেট্রো’ খনিজ তেলে চলা পুরনো আমলের ভিন্টেজ গাড়িগুলিকে পুরোপুরি ব্যাটারি-চালিত গাড়িতে পরিণত করার ক্ষমতা রাখে৷ এ ধরনের গাড়ি এখন বিশ্বব্যাপী লাক্সারি কার মার্কেটের একটা বড় অংশ দখল করতে চলেছে৷
ফ্ল্যাটের সবজি!
মহাকাশযানের সবজিও বলা যেতে পারে, কেননা, এস্টোনীয় বংশোদ্ভূত মাটিয়াস লেপ নভোচররা তাদের মহাকাশযানে যেভাবে টবে সবজির চাষ করেন, তা দেখে পৃথিবীর ইট-কাঠ-পাথরের শহরগুলোর বাসিন্দাদের জন্য একই পদ্ধতিতে সবজি চাষ করার প্রেরণা পান৷ ২০১০ সাল থেকে এ পর্যন্ত ‘ক্লিক অ্যান্ড গ্রো’ কোম্পানি সাড়ে তিন লাখের বেশি টবের বাগান ও খামার বিক্রি করেছে৷
আশ্চর্য ব্যাটারি?
স্কেলিটন টেকনোলজিস বলে থাকে, তারা নাকি ‘এনার্জি স্টোরেজ সিস্টেম ও গ্র্যাফিন-ভিত্তিক সুপারক্যাপাসিটেটর’-এর ক্ষেত্রে বিশ্বে নেতৃস্থানীয়৷ এ ধরনের ব্যাটারি অনেক বেশি শক্তি দেয়, রিচার্জ করতে খুব কম সময় লাগে ও বহুদিন ধরে কাজ করে৷ স্কেলিটন টেকনোলজিস কেম্পানি ইউরোপীয় মহাকাশ সংস্থা এসা-কে ব্যাটারি সরবরাহ করে থাকে; তাদের গবেষণা চলে ট্যালিনে, ব্যাটারি উৎপাদনের কাজ হয় জার্মানিতে৷