হোয়াইট হাউসে সাক্ষাৎ করবেন ওবামা-দলাই লামা
১৮ ফেব্রুয়ারি ২০১০তিব্বতের ধর্মীয় নেতার সঙ্গে সাক্ষাৎ করার বিগত দুই দশক ধরে মার্কিন প্রেসিডেন্ট এবং পররাষ্ট্র মন্ত্রীর জন্য একটি রীতিতে পরিণত হয়েছে৷ তবে এই সাক্ষাতকে ঘিরে বেশ অনিশ্চয়তার সৃষ্টি হয়েছিল গত কয়েক মাস যাবত৷ অবশেষে শুক্রবার হোয়াইট হাউসের মুখপাত্র রবার্ট গিবস জানান দলাই লামার সঙ্গে দেখা করার সিদ্ধান্ত নিয়েছেন মার্কিন প্রেসিডেন্ট৷ বার্তা সংস্থা এএফপি জানিয়েছে বুধবার ওয়াশিংটনে পৌঁছেছেন দলাই লামা৷ সেখানে তাঁর অনুসারীরা তাঁকে স্বাগত জানায়৷
উল্লেখ্য, এই বৈঠকটি আরও অনেক আগেই হওয়ার কথা ছিল৷ কিন্তু প্রেসিডেন্ট হিসেবে দায়িত্ব পালনের প্রথম বছরটিতে চীনের সঙ্গে কোন ধরণের ঝামেলায় জড়াতে চাননি প্রেসিডেন্ট ওবামা৷ তাই গত বছর দলাই লামার সঙ্গে তাঁর বৈঠক হওয়ার কথা থাকলেও সেটা আর হয়ে ওঠেনি৷ তবে সম্প্রতি প্রেসিডেন্ট ওবামা তার নিজের মত করে চলার যে নীতি নিয়েছেন তার অংশ হিসেবে দলাই লামার সঙ্গে তিনি দেখা করার সিদ্ধান্ত নিয়েছেন৷ বেইজিং এই বৈঠকের তীব্র বিরোধিতা করে বলেছে এটি যুক্তরাষ্ট্রের ভুল সিদ্ধান্ত এবং দুই দেশের সম্পর্কের অবনতি হয়, এমন কাজ থেকে ওয়াশিংটনের বিরত থাকা উচিত৷ কিন্তু ওবামা প্রশাসন এই বিরোধিতাকে কেবল প্রত্যাখ্যানই করেনি বরং জানিয়ে দিয়েছে যে আজ বৃহস্পতিবার মার্কিন পররাষ্ট্র মন্ত্রী হিলারি ক্লিন্টনও দলাই লামার সঙ্গে দেখা করবেন৷ তবে সাধারণত মার্কিন প্রেসিডেন্ট ও দলাই লামার সঙ্গে সাক্ষাৎ হোয়াইট হাউসের ওভাল অফিসে হলেও এবার তার ব্যতিক্রম হচ্ছে৷ তুলনামূলক কম গুরুত্বপূর্ণ ম্যাপ অফিসে এবার দুই নেতার সাক্ষাৎ হবে৷ এর মাধ্যমে ওবামা প্রশাসন হয়তো দুই পক্ষকেই খুশি রাখার একটি চেষ্টা করতে যাচ্ছে৷
এদিকে দলাই লামা সমর্থকরা এই সাক্ষাতের সিদ্ধান্তে তাদের সন্তোষ প্রকাশ করেছে৷ দলাই লামার সচিব চিমে চোয়েকিয়াপা বলেছেন, এর ফলে তিব্বতের জনগণ মনে সাহস পাবে৷ এর অর্থ হচ্ছে বিশ্ব তাদের ভুলে যায়নি৷
উল্লেখ্য, ১৯৫০ সাল থেকে তিব্বতকে দখল করে আছে চীন৷ তিব্বতের জনগণের ধর্মীয় ও রাজনৈতিক অধিকারের জন্য দলাই লামা দীর্ঘদিন ধরে অহিংস আন্দোলন চালিয়ে আসছেন৷ ইতিমধ্যে তিনি তিব্বতে চীনা শাসনকে মেনে নেওয়ার ঘোষণা দিয়ে স্বায়ত্ত্বশাসনের দাবি তুলেছেন৷ তবে চীনা কর্তৃপক্ষের অভিযোগ, দলাই লামা বিচ্ছিন্নতাবাদী আন্দোলনের জন্য কাজ করে যাচ্ছেন৷ গত ৫১ বছর ধরে বিদেশে নির্বাসিত হয়ে আছেন দলাই লামা৷
প্রতিবেদক: রিয়াজুল ইসলাম, সম্পাদনা: সঞ্জীব বর্মন