হেরিটেজ টয় ট্রেনের হালহকিকত
দার্জিলিংয়ের টয় ট্রেন শুধু হেরিটেজ নয়, ঐতিহাসিকও। কিন্তু কতটা যত্নে আছে সেই ট্রেন? ডিডাব্লিউ-র এক্সক্লুসিভ রিপোর্ট।
টয় ট্রেনের ইতিহাস
হিমালয়ের উপর প্রায় সাত হাজার ফুট উচ্চতায় দার্জিলিংকে গ্রীষ্মাবকাশের শহর বানিয়েছিল ব্রিটিশরা। ১৮৮১ সালে সেখানে প্রথম শুরু হয় টয় ট্রেনের যাত্রা। হিমালয়ের পাদদেশ শিলিগুড়ি থেকে সাত হাজার ফুট উচ্চতার দার্জিলিংয়ে পাড়ি দিত এই ট্রেন।
খেলনা ট্রেন
দৃশ্যত খেলনার মতো এই ট্রেন চলে একটি দুই ফুটের গজ লাইনের উপর দিয়ে। বাষ্পচালিত ইঞ্জিন দিয়ে এই ট্রেন চালানোর ব্যবস্থা করেছিল ব্রিটিশরা।
এখনো আছে সেই ইঞ্জিন
দার্জিলিংয়ে এখনো আছে বাষ্পচালিত ইঞ্জিন। চারটি বাষ্পচালিত ইঞ্জিন পর্যটকদের জয় রাইডে নিয়ে যায়। তবে সেই ট্রেনগুলি শিলিগুড়ি পর্যন্ত যায় না। ঘুম বাতাসিয়া লুপ ঘুরে ফের দার্জিলিংয়ে ফিরে আসে।
ডিজেলচালিত ইঞ্জিন
সাতটি ডিজেলচালিত ইঞ্জিন এখন আছে। এই ট্রেনগুলি প্রতিদিন সকালে দার্জিলিং এবং শিলিগুড়ি থেকে ছাড়ে। বিকেলে গন্তব্যে পৌঁছায়। একাধিক সুড়ঙ্গ এবং লুপের ভিতর দিয়ে যায় ট্রেনগুলি।
করোনার প্রকোপ
করোনাকালে ব্যাপক ক্ষতি হয়েছে টয়ট্রেনের। পর্যটকশূন্য দার্জিলিংয়ে টয়ট্রেন বন্ধ হয়ে গেছিল। সম্প্রতি আবার তা চালু হয়েছে।
পরিকাঠামোর অবস্থা
ভারতের সবচেয়ে উঁচু রেলওয়ে স্টেশন ঘুম। ঘুম, সোনাদা, টুং পেরিয়ে দার্জিলিং পৌঁছায় টয় ট্রেন। মূলত হিল কার্ট রোড ধরে বিছিয়ে রাখা ট্রেনের লাইন। এই রাস্তাই দার্জিলিংয়ে ওঠার মূল সড়ক। ফলে অনেক সময়ই ক্ষতিগ্রস্ত হয় লাইন। মাঝরাস্তায় ট্রেন খারাপ হলে ট্র্যাফিক জ্যাম হয়।
জ্বালানির খরচ
বাষ্পচালিত টয় ট্রেনই পর্যটকদের মূল আকর্ষণ। কিন্তু খরচের কারণে ওই ইঞ্জিন শিলিগুড়ি পর্যন্ত চালানো যায় না।
সব আগের মতো নেই
দীর্ঘদিন ধরে টয় ট্রেন চালাচ্ছেন হরি ছেত্রী। ডিডাব্লিউকে তিনি জানিয়েছেন, টয় ট্রেন আর আগের মতো নেই। সকলে বাষ্পচালিত ট্রেনেই চলতে চান।
ডিরেক্টরের কথা
দার্জিলিং হিমালয়ান রেলওয়ের ডিরেক্টর অরবিন্দ কুমার মিশ্রের বক্তব্য, করোনার সময় এই রেলের অনেক ক্ষতি হয়েছে। বাষ্পচালিত ইঞ্জিনের খরচ এত বেশি যে তা শিলিগুড়ি পর্যন্ত চালানো সম্ভব নয়। তবে পুরো ট্রেন ভাড়া করলে তা শিলিগুড়ি পর্যন্ত যায়। ভাড়া লাগে ৮০ হাজার টাকা।