হালের মুসলিম ফ্যাশন
ইসলাম ও হালের স্টাইল? এই দুইয়ের সমন্বয় অনেকের কাছে সমস্যার মনে হতে পারে৷ তবে ইসলামি রীতি-নীতি মেনেই মুসলিম নারীর ফ্যাশন কীভাবে সম্ভব, তারই প্রদর্শনী হয়ে গেল যুক্তরাষ্ট্রের সান ফ্রান্সিসকোর ডে ইয়াং মিউজিয়ামে৷
পরিশীলিত থেকেই আধুনিকতার ছোঁয়া
প্রদর্শনীতে হাল আমলের মুসলিম স্টাইল ও পোশাক তুলে ধরা হয়৷ তারই একটি ছিল মালয়েশিয়ার খ্যাতনামা ডিজাইনার বার্নার্ড চন্দ্রনের সিল্ক ও সারোভস্কির ক্রিস্টাল দিয়ে এই উপস্থাপন৷ যেসব ফ্যাশন নিয়ে অনেক কথা হয় কিন্তু সেগুলো উপস্থাপনের তেমন সুযোগ হয় না, সেগুলোই তুলে ধরার চেষ্টা করা হয় এখানে৷
জাকার্তা থেকে নিউ ইয়র্ক
পশ্চিমা ফ্যাশন জগতেও সাড়া ফেলতে সক্ষম হয়েছে ডিয়ান পেলাঙ্গির মুসলিম ফ্যাশন৷ ২৭ বছরের এই তরুণী সেই গুটিকয়েক মুসলিম ফ্যাশন ডিজাইনের একজন, যিনি লন্ডন, মিলান ও নিউ ইয়র্কের ক্যাটওয়াকসে নিজের কাজ তুল ধরতে পেরেছেন৷
রাজনৈতিক বার্তা
ইসলামভীতি দূর করতে ভূমিকা রাখার একটা প্রচেষ্টাও ছিল সান ফ্রান্সিসকোর এই প্রদর্শনীতে৷ যুক্তরাষ্ট্রের সংবিধানের প্রথম সংশোধনী আরবি হরফে ছাপা হয় জ্যাকেটের গায়ে৷ অন্যান্য বিষয়ের সঙ্গে ধর্মীয় স্বাধীনতার কথাও বলা হয় এই সংশোধনীতে৷ এই জ্যাকেটের ডিজাইন করেছেন লেবাননের সেলিনে সিমান ভারনন৷ উনিশ শতকের আশির দশকে শরণার্থী হিসেবে বাবা-মার সঙ্গে ক্যানাডায় এসেছিলেন তিনি, পরে পাড়ি জমান যুক্তরাষ্ট্রে৷
ট্রাম্পের ‘মুসলিম নিষেধাজ্ঞার’ জবাব
রাজনৈতিক বক্তব্য প্রকাশে ডিজাইনকে গুরুত্বপূর্ণ মাধ্যম হিসেবে প্রতিষ্ঠা করেছেন সেলিনে সিমান৷ ২০১৭ সালে তিরি তৈরি করেন ‘ব্যানড’ স্কার্ফ৷ এ সব স্কার্ফের কোনো কোনোটিতে যুক্তরাষ্ট্রের প্রেসিডেন্ট ডোনাল্ড ট্রাম্পের নিষেধাজ্ঞার আওতায় পড়া দেশগুলোর স্যাটেলাইট ছবি তুলে ধরেন তিনি৷ এই ছবিতে মডেল হিসেবে আছেন ইরানি-অ্যামেরিকান পলিটিক্যাল ফ্যাশন ব্লগার হোডা কাতেবি৷
স্পোর্টস ফ্যাশন
পোশাক, জ্যাকেট ও রাজনৈতিক বার্তাবাহী স্কার্ফের পাশাপাশি স্পোর্টস ফ্যাশনও উঠে আসে প্রদর্শনীতে৷ এ ধরনের ফ্যাশন পণ্যগুলোর মধ্যে নাইকির হিজাব এবং আহেদা জেনেট্টির আলোচিত সাঁতারের বিকিনি ছিল৷ ২০১৬ সালে এই বিকিনি সাময়িকভাবে নিষিদ্ধ করেছিল ফ্রান্স সরকার৷
স্থাপত্যবিদ্যার প্রতীকী ক্ষমতা
এই প্রদর্শনীর ডিজাইন করেছে দুই ইরানি-অ্যামেরিকান বোনের নেতৃত্বাধীন নিউ ইয়র্কভিত্তিক আর্কিটেকচার ফার্ম হারিরি অ্যান্ড হারিরি৷ দর্শনার্থীকে বিস্তৃত পরিসর দেওয়ার পাশাপাশি তার রহস্য উন্মোচনের উপলব্ধি লাভের বিষয়টি মাথায় রেখে এই ডিজাইন করা হয়৷ ২০১৯ সালের বসন্তে এই প্রদর্শনী আবার হবে জার্মানির ফ্রাংকফুর্ট আম মাইনে৷
সোশ্যাল নেটওয়ার্ক: প্রকাশের প্ল্যাটফর্ম
অগণিত ব্লগার, অ্যাক্টিভিস্ট ও ফ্যাশন ম্যাগাজিন মুসলিম ফ্যাশন জগতের জন্য নিবেদন হয়েছে৷ ইনস্টাগ্রামে গতানুগতিক হেডস্কার্ফকে অত্যাবশ্যক ফ্যাশন হিসেবে উদযাপন করেছে কথিত ‘হিজাবিস্টাস’৷ এই দিকটিও ‘কনটেমপোরারি মুসলিম ফ্যাশনস’ শিরোনামের এই প্রদর্শনীতে উঠে এসেছে৷ সান ফ্যান্সিসকোতে আগামী ৬ জানুয়ারি পর্যন্ত চলবে প্রদর্শনী৷