হানোফারের মেডিক্যাল স্কুল বা মেডিৎসিনিশে হোখশুলে
১৮ অক্টোবর ২০১০মেডিৎসিনিশে হোখশুলে হানোফারের ক্যাম্পাসের মধ্যেই চারটি ক্লিনিক এবং একটি রিসার্চ সেন্টার অবস্থিত৷ তাত্ত্বিক জ্ঞানের পাশাপাশি ব্যবহারিক দিকগুলো শিখতেও উদ্বুদ্ধ করা হয় ছাত্র-ছাত্রীদের৷ প্রতিটি ক্লিনিকের সঙ্গে রয়েছে বিশাল রিসার্চ ল্যাবরেটরি৷
২০১০ সালের গ্রীষ্মকালীন সেমেস্টারে প্রায় তিন হাজার ছাত্র-ছাত্রী ভর্তি হয়েছে বিশ্ববিদ্যালয়ে৷ অন্তত ৫৭৫ জন শিক্ষানবিশকে প্রতি বছর আমন্ত্রণ জানানো হয়৷ এদের মধ্যে চিকিৎসক, গবেষক, বিজ্ঞানী এবং নার্স উল্লেখযোগ্য৷
গিরিপ্রকাশের অভিজ্ঞতা
ভারতের ছাত্র গিরিপ্রকাশ৷ তিনি মেডিৎসিনিশে হোখশুলে হানোফারে পিএইচডি করছেন সিস্টিক ফাইব্রোসিস বিষয়ে৷ তিনি সাড়ে তিন বছর জার্মানিতে থাকবেন৷ জার্মানিতে আসার পর বিভিন্ন অভিজ্ঞতা সম্পর্কে তিনি বললেন, ‘‘ আমি এ বছরের জুন মাসে জার্মানিতে আসি৷ ফ্রাঙ্কফুর্ট থেকে ট্রেন নেই৷ জার্মান পরিবহন ব্যবস্থা আমাকে মুগ্ধ করেছে৷ এছাড়া ইউরোপের কোন দেশ এত সবুজ হতে পারে তা আমি ভাবিনি৷ এখানকার মানুষরা বন্ধুসুলভ ব্যবহার করে৷ আমি চার মাস জার্মান ভাষা শিখেছি গ্যোয়েটে ইন্সটিটিউট গোটিঙ্গেনে৷ এখন আমি ভাঙা-ভাঙা জার্মান বলতে পারি, প্রতিদিনের কাজ চলে যায়৷ তবে শেখা এখনো শেষ হয়নি৷''
যেহেতু মেডিৎসিনিশে হোখশুলে হানোফার অত্যন্ত নামকরা একটি প্রতিষ্ঠান তাই গবেষণা এবং চিকিৎসা পেশার সঙ্গে জড়িত পেশাজীবিরা এই প্রতিষ্ঠান থেকে একটি ডিগ্রি লাভ করতে চান৷ সেটা গবেষণা বা কিছুদিন চাকরি – যেটাই হোক না কেন৷ এই বিশ্ববিদ্যালয়ে পিএইচডি করার সুযোগ রয়েছে৷ ডক্টরেট ডিগ্রি লাভ করতে আসছে বিশ্বের বিভিন্ন দেশ থেকে গবেষক এবং চিকিৎসকরা৷
শুধু তাই নয় জার্মানির বাইরে বেশ কিছু মেডিক্যাল স্কুলের সঙ্গে সহযোগিতামূলক চুক্তি থাকায় জার্মান ছাত্র-ছাত্রী এবং চিকিৎসকরা গবেষণা এবং উচ্চশিক্ষার জন্য একটি বা দুটি সেমেস্টার অন্য দেশে কাটাতে পারেন৷ সে সুযোগ দিচ্ছে মেডিৎসিনিশে হোখশুলে হানোফার৷
এই বিশ্ববিদ্যালয় থেকে ডক্টরেট ডিগ্রি লাভ করলে কোন কোন ক্ষেত্রে যোগ্য প্রার্থীকে চাকরির সুযোগ করে দেওয়া হয়৷ ভবিষ্যৎ পরিকল্পনা কী ? জার্মানিতে থাকতে চান, পোস্ট ডক্টরেট করতে চান নাকি ভারতে ফিরে যেতে চান ? গিরিপ্রকাশ তাঁর ভবিষ্যৎ পরিকল্পনা প্রসঙ্গে জানান,‘‘ আমার পোস্ট ডক্টরেট করার ইচ্ছে আছে৷ হতে পারে জার্মানিতে করছি বা অন্য কোথাও৷ এখনই তা বলতে পারছি না৷ নির্ভর করছে কোন্ ধরণের ল্যাবে কাজ করবো, গবেষণার বিষয়ই বা কি নেব তার ওপর৷ তবে কোন এক সময়ে ভারতে ফিরে যাওয়ার ইচ্ছে আছে৷ সেখানে নিজের ল্যাব প্রতিষ্ঠিত করবো, কাজ করবো, গবেষণা নিয়ে ব্যস্ত থাকবো৷''
কীভাবে ভর্তি হবেন
মেডিৎসিনিশে হোখশুলে হানোফারে সরাসরি আবেদন পত্র পাঠানো যায় না৷ আবেদন পত্র পাঠাতে হবে বার্লিনে৷ ঠিকানা উনি হাইফেন অ্যাসিস্ট ডট ডিই৷ প্রতি বছর আবেদন পত্র জমা দেওয়ার শেষ তারিখ ১৫ই জুলাই৷ এই বিশ্ববিদ্যালয়ে গ্র্যাজুয়েশন কোর্সের জন্য ছাত্র-ছাত্রীদের বছরে মাত্র একবারই ভর্তি নেওয় হয়৷ কোর্স শুরু হয়ে শুধুমাত্র শীতকালীন সেমেস্টারে৷ এই গ্র্যাজুয়েশন কোর্সের মেয়াদ পাঁচ থেকে ছয় বছর৷ তবে সময়কাল নির্ভর করবে আপনি কোন বিষয় নিয়ে পড়তে চান তার ওপর৷
আপনি যদি বৃত্তি না পান তাহলে প্রতি সেমেস্টারে খরচ পড়বে ৫০০ ইউরো অর্থাৎ বছরে এক হাজার ইউরো হবে টিউশন ফি৷ থাকা খাওয়া সহ প্রতি মাসে খরচ পড়বে আরো প্রায় ৭০০ ইউরো৷ চারটি বিষয়ে গবেষণায় শীর্ষে রয়েছে মেডিৎসিনিশে হখশুলে হানোফার৷ বিষয়গুলো হল:
- ইনফেকশান, ইমিউনিটি এ্যান্ড ইনফ্লামেশন রিসার্চ
- ট্রান্সপ্লান্ট এ্যান্ড স্টেম সেল রিসার্চ
- বায়োমেডিক্যাল টেকনলজি এ্যান্ড ইমপ্লান্ট রিসার্চ আর
- পাবলিক হেল্থ এ্যান্ড হেল্থকেয়ার সিস্টেম৷
প্রতিবেদন: মারিনা জোয়ারদার
সম্পাদনা: আবদুল্লাহ আল-ফারূক