1. কন্টেন্টে যান
  2. মূল মেন্যুতে যান
  3. আরো ডয়চে ভেলে সাইটে যান

স্বাধীনতা আর অধিকার বঞ্চিত ইরাকি নারী

১৩ মার্চ ২০১০

সাদ্দাম হোসেনের শাসনকালের খুব অভাব বোধ করছে ইরাকের নারীরা৷ সাদ্দামের আমলে যেখানে তারা মাতৃকালীন ছুটি পেত এক বছর, এখন সেই ছুটি হ্রাস পেয়ে ছয় মাসে দাঁড়িয়েছে৷ রয়েছে আরো অসহায়ত্বের বিড়ম্বনা৷

https://p.dw.com/p/MSGK
আতঙ্কিত ইরাকি নারী (ফাইল ছবি)ছবি: AP

ব্রিটিশদের চালু করা রাজতন্ত্রের অবসানের পর ১৯৫৮ সালের ১৪ জুলাই থেকে কার্যকর হওয়া ‘পার্সোনাল স্ট্যাটাস ল' এর আওতায় ইরাকের নারীরা পশ্চিমা দেশসমূহের মতোই সব ধরণের অধিকার ভোগ করতো বলে তারা বার্তা সংস্থা আইপিএস'কে জানিয়েছে৷ কিন্তু ইরাকে মার্কিন অভিযানের সাথে সাথে তাদের অধিকার লুপ্ত হয়েছে বলে মনে করেন নারী অধিকার কর্মী ইয়ানার মোহাম্মেদ৷ তিনি বলেন, দেশের সংবিধানেও নারীদের জন্য নিরাপত্তার ব্যবস্থা করা কিংবা তাদের কোন অধিকার সুরক্ষার কোন ব্যবস্থা নেই৷ তাই বহুমুখী গণতান্ত্রিক ব্যবস্থা চালু করার জন্য আহ্বান জানান মোহাম্মেদ৷

৩০ বছর বয়সি নোরা হামায়িদের মতে, নতুন আইনের সাথে সাথে এসেছে আরো বিশৃঙ্খলা৷ বাগদাদ বিশ্ববিদ্যালয় থেকে স্নাতক ডিগ্রিধারী হামায়িদ এখন তাঁর স্বপ্নের পেশায় যাওয়ার আশা ছেড়ে দিয়েছেন৷ তিনি বলেন, ‘‘এখানে বিদেশি অভিযানের আগেই আমি পড়া-লেখা শেষ করেছি৷ কারণ তখন আমি নিরাপদে, নিশ্চিন্তে বিশ্ববিদ্যালয় যেতে পারতাম৷'' কিন্তু এখন তিনি কোথাও মুক্তভাবে যেতে পারেন না৷ সবসময় ছেলে-মেয়েদের নিরাপত্তা নিয়েও দুশ্চিন্তায় থাকতে হয়৷ তিনি বলেন, ‘‘প্রতিদিন তাদের বিদ্যালয়ে রওয়ানা করা থেকে শুরু করে বাসায় ফিরে আসা পর্যন্ত অপহরণের ভয়ে থাকি আমরা৷''

Wahlen im Irak, bewaffneter Sicherheitsschutz
ফাইল ছবিছবি: AP

ইরাকের সংসদে ২৫ শতাংশ নারী সদস্য থাকলেও সেখানে নারী অধিকার সংরক্ষণের কোন সুব্যবস্থা হচ্ছে না৷ এ বিষয়ে বাগদাদের আল-নাহরাইন বিশ্ববিদ্যালয়ের রাষ্ট্রবিজ্ঞানের অধ্যাপক মাহা সাবরিয়া বলেন, এই নারী সদস্যরা তাঁদের দলীয় অধিকার রক্ষার জন্যই দলের তালিকা থেকে মনোনয়ন পান, নারী অধিকার রক্ষার জন্য নয়৷'' তাঁর মতে, ‘‘সকল ইরাকির অধিকার লঙ্ঘনের অংশ হয়ে দাঁড়িয়েছে নারী অধিকার লঙ্ঘন৷'' তিনি বলেন, ‘‘বিদেশি অভিযানের ফলে ইরাকের নারীদের উপর দ্বিগুণ বিপদ এসে চেপেছে, কারণ আমরা এটার কারণে অনেক স্বাধীনতা হারিয়েছি৷''

‘‘অধিকাংশ পুরুষ মানুষ কারাগারে আটক থাকায় এখন গোটা পরিবারের দায়িত্ব এসে পড়েছে নারীদের কাঁধে৷ এছাড়া নিরাপত্তা পরিস্থিতির অবনতি ঘটায় এবং অপরাধী চক্র নারী ও শিশুদের অধিকহারে অপহরণ করায়, আমাদের চলা-ফেরা করার স্বাধীনতাও খোয়া গেছে,'' বলেন সাবরিয়া৷ এমনকি ইরাকের নারীরা এখন অধিকতর তরুণ যুবকদের বিয়ে করতে বাধ্য হচ্ছে - এই ভরসায় যে, হয়তো স্বামী হিসেবে তারা একটু নিরাপত্তার ব্যবস্থা করতে পারবে৷

প্রতিবেদক : হোসাইন আব্দুল হাই

সম্পাদনা : দেবারতি গুহ