স্পষ্ট গরিষ্ঠতা নিয়েই জার্মান প্রেসিডেন্ট হলেন ভুল্ফ
৩০ জুন ২০১০যদি জনগণ এই নির্বাচনে ভোট দিত তাহলে জার্মানি প্রেসিডেন্ট হিসেবে অন্য একজনকে পেত৷ দেশের তিন-চতুর্থাংশ মানুষ মনে মনে বিরোধী পক্ষের প্রার্থী ইওয়াখিম গাউক-কেই রাষ্ট্রপ্রধান হিসেবে চাইছিল৷ তাঁর পরাজয় জার্মানদের মধ্যে অসন্তোষ আর রাজনীতি সম্পর্কে নিরাসক্তির মনোভাবকে আরও জোরদার করবে৷ জার্মান প্রেসিডেন্টের নির্বাচন কখনও পার্টি রাজনীতি থেকে মুক্ত থাকেনি৷ কিন্তু এবার সেটা ঘটেছে মাত্রাধিক৷ চ্যান্সেলর আঙ্গেলা ম্যার্কেল ও তাঁর জোট নিজেদের পার্টি রাজনীতির স্বার্থের সঙ্গে সঙ্গতি রাখেন এমন একজনকেই প্রার্থী হিসেবে মনোনীত করেন৷
এই কারণেই বহু জার্মান রাষ্ট্রপ্রধানের পদে ভুল্ফকে চাচ্ছিলেন না৷
দুই বড় বিরোধী দল সামাজিক গণতন্ত্রী এসপিডি ও সবুজ দল নির্দলীয় যাজক ও নাগরিক অধিকারবাদী ইওয়াখিম গাউককে তাদের প্রার্থী হিসেবে দাঁড় করায়, সেটাও ছিল এক সূক্ষ্ম রাজনৈতিক কৌশলমাত্র৷ এর মধ্য দিয়ে তারা এমন একটা ধারণা দিতে পেরেছে যে, রাষ্ট্রের শীর্ষ পদের জন্য সেরা এক ব্যক্তিত্বকেই তারা প্রার্থী করেছে৷ কিন্তু প্রকৃতপক্ষে এটা কোয়ালিশন সরকারকে বিব্রতকর অবস্থায় ফেলার চেষ্টা ছাড়া আর কিছু নয়৷
সে যাই হোক, নবনির্বাচিত প্রেসিডেন্ট ক্রিস্টিয়ান ভুল্ফ আন্তর্জাতিক পর্যায়ে কীভাবে দেশের প্রতিনিধিত্ব করতে চান, দেশের ভিতরে কোন্ কোন বিষয়ককে গুরুত্ব দিতে চান, তা পুরোপুরি অস্পষ্ট৷ এমনিতে জার্মান প্রেসিডেন্টের পদটি মূলত প্রতিনিধিত্বমূলক৷ তাঁকে দলীয় রাজনীতির ঊর্ধে গিয়ে সকল নাগরিকদেরই প্রতিনিধিত্ব করতে হবে৷ প্রেসিডেন্টের কাছে নাগরিকরা চাইবেন ভবিষ্যতের দিকনির্দেশ৷
ক্রিস্টিয়ান ভুল্ফ-এর পূর্বসূরিরা বিশেষ একটি বিষয়কে অগ্রাধিকার দিয়েছেন৷ হর্স্ট ক্যোয়েলারের কাছে তা ছিল আফ্রিকা, রোমান হেরৎসগের কাছে শিক্ষা, রিশার্ড ফন ভাইৎস্যাকারের কাছে তা ছিল জার্মানির ইতিহাস৷ একথাটি বলতেই হয়, পরাজিত প্রার্থী গাউকও মুক্তি ও স্বাধীন সত্তার বিষয়টিকে ধারণ করেছেন৷ কিন্তু ক্রিস্টিয়ান ভুল্ফ-এর কাছ থেকে বড় মাপের কোন বিষয় আসতে দেখা যায়নি৷ প্রাথমিকভাবে তিনি একটি দলের রাজনীতিক৷ কিন্তু তিনি যে পদে আসীন হচ্ছেন তা দলীয় রাজনীতির ক্ষমতার হিসাবনিকাশের শিকার হয়েছে৷ ক্ষতি হয়েছে পদটির৷
প্রতিবেদন: মার্ক কখ ভাষান্তর: আব্দুল্লাহ আল-ফারূক
সম্পাদনা: সুপ্রিয় বন্দ্যোপাধ্যায়