1. কন্টেন্টে যান
  2. মূল মেন্যুতে যান
  3. আরো ডয়চে ভেলে সাইটে যান

স্থিতি ফেরাতে লেবাননে সৌদি বাদশা আর সিরিয় প্রেসিডেন্ট

৩০ জুলাই ২০১০

সৌদি বাদশাহ আবদুল্লাহ আর সিরিয়ার প্রেসিডেন্ট বাশার আল-আসাদ দুজনে একসঙ্গে সফর করছেন মধ্যপ্রাচ্যের আরেকটি দেশ লেবানন৷ তাঁদের এই সফরকে বেশ গুরুত্বের সঙ্গে দেখা হচ্ছে৷

https://p.dw.com/p/OYeS
সৌদি বাদশাহ আবদুল্লাহ আর সিরিয়ার প্রেসিডেন্ট বাশার আল-আসাদছবি: AP

শিয়া আর সুন্নী – লেবাননে এই দুই গোষ্ঠীর দ্বন্দ্ব বহুদিনের৷ আর পাঁচ বছর আগে সুন্নী নেতা রাফিক হারিরি হত্যাকাণ্ডের পর তা আরো জটিল হয়৷ লেবাননের সুন্নী গোষ্ঠীর প্রতি আশীর্বাদ রয়েছে সৌদি আরবের৷ অন্যদিকে শক্তিশালী শিয়া দল হিজবুল্লাহ পেয়ে আসছে সিরিয়ার সমর্থন৷ আর তাই নেপথ্যের দুই শক্তিকে বৈরুত এনে একটা সমঝোতা করতে চাইছেন রফিক হারিরির ছেলে, বর্তমান প্রধানমন্ত্রী সাদ হারিরি৷ গত বছর নির্বাচনের পর সাদ হারিরির সুন্নী জোট বেশি আসনে জয়ী হয়৷ যদিও সরকার গঠনের জন্য তা যথেষ্ট ছিলো না৷ অনেক কাঠখড় পোড়ানোর পর শিয়া দলগুলোর সমর্থন নিয়ে সাদ সরকার গঠন করেন৷ তবে রফিক হত্যাকাণ্ডে হিজবুল্লাহর কয়েকজন নেতাকে জাতিসংঘ ট্রাইবুন্যাল অভিযুক্ত করতে পারে, সে আভাস মেলার পর ফের অস্থিরতা দেখা দিয়েছে৷ নতুন করে সংঘাতের আশঙ্কাও করছেন অনেকে৷

বাদশাহ আবদুল্লাহ আর প্রেসিডেন্ট বাশার শুক্রবারই পৌঁছেছেন বৈরুতে, দামেস্ক থেকে একসঙ্গে রওনা হন তাঁরা৷ মিশর থেকে বৃহস্পতিবার সিরিয়া যান আবদুল্লাহ৷ বাদশা হওয়ার পর এটাই তাঁর প্রথম লেবানন সফর৷ এর আগে রাজপুত্র হিসেবে গিয়েছিলেন, সেটা ২০০২ সালের কথা৷ আর রফিক হত্যাকাণ্ডের পর বাশারও এবারই প্রথম লেবাননে পা রাখলেন৷ লেবাননে মোতায়েন ছিলো সিরিয় সৈন্য৷ কিন্তু রফিক হতাকাণ্ডের পর সিরিয়াবিরোধী বিক্ষোভের মুখে সৈন্যদের সরিয়ে আনে দামেস্ক৷ আর তখন অনেকের সঙ্গে সাদ হারিরিও বাবার হত্যাকাণ্ডের জন্য সিরিয়াকে দায়ী করেন৷ অবশ্য এখন সে অবস্থান থেকে সরে এসেছেন তিনি৷ গত আট মাসে চারবার গিয়েছেন দামেস্কে, বৈঠক করছেন বাশারের সঙ্গে৷ দেশে একটা স্থিতিশীল অবস্থা তৈরি করতেই সাদের এই তৎপরতা বলে মনে করছেন বিশ্লেষকরা৷ অর্থাৎ, লেবাননে শিয়া-সুন্নী দ্বন্দ্বের অবসানে দুজনের এই সফর গুরুত্বপূর্ণ ভূমিকা রাখবে বলেই মনে করছে পর্যবেক্ষক মহল৷

বিমানবন্দরে সৌদি বাদশা আর সিরিয়ার প্রেসিডেন্টকে স্বাগত জানান লেবাননের প্রেসিডেন্ট মিশেল সুলাইমান ও প্রধানমন্ত্রী সাদ৷ এরপরই তাঁরা যান প্রেসিডেন্ট ভবনে৷ বৈঠক করছেন তাঁরা৷ তবে এর ফলাফল এখনো জানা যায়নি৷ দুই নেতার সফরকে কেন্দ্র করে বেশ উদ্দীপনা দেখা যাচ্ছে বৈরুতে৷ সড়কগুলোর পাশে উড়ছে দুই দেশের পতাকা৷ শোভা পাচ্ছে সফরকারী দুই নেতার বড় বড় প্রতিকৃতিও৷ রাস্তায় নিরাপত্তা ব্যবস্থা জোরদার৷ পুলিশের সঙ্গে টহল দিচ্ছে সেনা সদস্যরাও৷

সুন্নী নেতা সাদ যে দুই শীর্ষ নেতাকে বৈরুতে আনলেন, তাতে সমর্থন পাচ্ছেন হিজবুল্লাহরও৷ সাদ বলছেন, দুই নেতার এই সফর ঐতিহাসিক৷ তাঁর দেশে স্থিতিশীলতা আনতে তা রাখবে গুরুত্বপূর্ণ ভূমিকা৷ আর হিজবুল্লাহর উপপ্রধান হাসান ফাদলাল্লাহ বলছেন, এই সফর আরব জাহানের ঐক্যের প্রতীক৷

হারিরি হত্যাকাণ্ডের জন্য জাতিসংঘ ট্রাইবুন্যাল যদি হিজবুল্লাহর কাউকে অভিযুক্ত করে তবে টলমলো হয়ে যাবে সাদের সরকার৷ আর তাই দুই নেতা যার যার পক্ষকে সামলাবে, এটাই আশা করছে লেবাননের জনগণ৷ আর সেজন্যই যে এই সফর তা স্পষ্ট৷

এদিকে যুক্তরাষ্ট্র আবার এর মধ্যে অন্য একটি আহ্বান জানিয়েছে সৌদি বাদশা ও সিরিয়ার প্রেসিডেন্টের কাছে৷ ইসরায়েল-ফিলিস্তিন শান্তি আলোচনা পুনরায় শুরুর জন্য মধ্যপ্রাচ্যের এই দুটি দেশের তৎপরতা প্রত্যাশা করেছে তারা৷ তবে এর প্রতিক্রিয়ায় সিরিয়ার পররাষ্ট্র মন্ত্রণালয় দিয়েছে কড়া উত্তর৷ তারা বলছে, মধ্যপ্রাচ্যে কী করলে ভালো হবে, আর কী করলে খারাপ হবে৷ তা সিরিয়া ও সৌদি আরব ভালোই জানে৷ এ নিয়ে কাউকে উপদেশ দিতে হবে না৷

প্রতিবেদন: মনিরুল ইসলাম

সম্পাদনা: আব্দুল্লাহ আল ফারূক