1. কন্টেন্টে যান
  2. মূল মেন্যুতে যান
  3. আরো ডয়চে ভেলে সাইটে যান

স্টার্জন মাছ ও ব্লু ড্যানিউব

আলেক্সান্ডার ফাইস্ট/এসি৯ এপ্রিল ২০১৫

যে মাছ সাত মিটার পর্যন্ত লম্বা, খেতে অত্যন্ত সুস্বাদু এবং যার ডিম ‘ক্যাভিয়ার' নামে সারা বিশ্বে পরিচিত – সেই স্টার্জন মাছ ড্যানিউব নদীর বদ্বীপ থেকে প্রায় লুপ্ত হতে চলেছে৷

https://p.dw.com/p/1F5Be
Zur Studie - Top Städte in Deutschland
ছবি: Fotolia/camera work

রোমানিয়ার বেআইনি মৎস্যশিকারীদের প্রিয় শিকার হল স্টার্জন মাছ৷ প্রায় সাত মিটার পর্যন্ত লম্বা হতে পারে এই মাছ! বিশ কোটি বছর ধরে এই পৃথিবীর বাসিন্দা তারা৷ কিন্তু ড্যানিউব নদীর ব-দ্বীপে তাদের দিন যেন ফুরিয়ে আসছে৷ কেননা যেমন স্টার্জন মাছ, তেমনই তাদের ডিম একটি অতি উপাদেয়, মহার্ঘ বস্তু: ক্যাভিয়ারের নাম শুনেছেন তো? ওটা হল স্টার্জন মাছের ডিম৷

কাজেই ‘পোচাররা' এই স্টার্জন মাছ ধরতে গিয়ে কোনো কিছুতেই পিছপা হয় না৷ ড্যানিউব ডেল্টা বায়োস্ফিয়ার-এর ওয়ার্ডেন নিকু আক্সেনটিয়েভ-এর নিজের অভিজ্ঞতাই তার প্রমাণ৷ তিনি বলেন, ‘‘আমার মাথায় সেই চোটের দাগ আছে৷ হাতেও নানা চোটের দাগ পাবেন৷ আমি ওদের গ্রেপ্তার করতে গেলে ওরা বড় বড় হুক অর্থাৎ আঁকশি নিয়ে আমাকে আক্রমণ করে৷ ফলে ৪০ দিন আমাকে হাসপাতালে থাকতে হয়েছিল৷''

রোঁদে বেরিয়েছেন রেঞ্জাররা

নৌকোগুলো হঠাতই রেঞ্জারদের চোখে পড়ে৷ জেলেদের দেখেও সন্দেহ জাগে৷ তখন শুরু হয় জেরা৷

রেঞ্জার জানতে চান, কী মাছ ধরা হয়েছে৷ সেগুলি দেখতেও চান৷ তাদের প্রশ্ন করেন, স্টার্জন মাছ দেখলে কী করতে হয়, তা তারা জানে কি না৷ উত্তর আসে: ‘‘আমরা কোনো স্টার্জন ধরি না!''

রেঞ্জার চ্যালেঞ্জ করেন, তাদের কাছে স্টার্জন ধরার জাল দেখা যাচ্ছে৷ কিছু রুই গোত্রীয় কার্প আর পাইকপার্চ মাছ ছাড়া আর কিছু খুঁজে পেলেন না রেঞ্জাররা৷ কাজেই জেলেদের যেতে দিতে হল৷ নিকু-র সহকর্মীরা ইতিপূর্বে দু'জন পোচার-কে হাতেনাতে ধরে ফেলেছিলেন৷ তাদের নৌকোর তলায় একটা বড় স্টার্জন মাছ লুকনো ছিল৷ পোচার-দের অকুস্থলেই জেরা করা হয়৷ তারা কী মাছ ধরেছে দেখাতে বলা হয়৷ স্বীকারোক্তি আসে – ‘‘একটা স্টার্জন৷'' পুলিশকর্মী আবার যাচাই করে নেন, তিনি ঠিক শুনছেন কি না৷ মাছ ধরার সরঞ্জাম বাজেয়াপ্ত করা হলো৷ পোচারদের শেষমেষ জেলের ঘানি টানতে হতে পারে৷

এক ধরনের মাফিয়া

রেঞ্জাররা সাধারণত এ ধরনের সাফল্যের মুখ দেখেন না৷ ড্যানিউবের মোহনার বহু জেলে কোনোমতে সংসার চালান৷ কাজেই অনেকে এখানে অবৈধভাবে শিকার করে থাকেন, তা সে যে প্রাণীই হোক: যেমন বুনো শুয়োর৷ দূর থেকে দেখা গেল, পোচাররা কীভাবে সেটিকে এক দালালের গাড়িতে তুলছে৷

এরাও এক ধরনের মাফিয়া, বাইরে কিছুই বলে না৷ তবে ক্যামেরা চলছে, সেটা জানা না থাকলে, স্টার্জন নিয়ে বেআইনি চোরাচালান সম্পর্কে অনেক কিছু জানায়৷

পোচারদের অত্যাচারে ড্যানিউবের মাছ প্রায় উধাও৷ স্টার্জন-কে বাঁচানোর একমাত্র উপায় সম্ভবত এই ধরনের মাছের ভেড়ি, যেমন কৃষ্ণসাগরের উপকূলে সুলিনা শহরের এই ভেড়িটি৷ এখান থেকে চারামাছ নিয়ে গিয়ে ড্যানিউব নদীতে ছেড়ে দেওয়া হয়৷ তবে এমন সব মাছের ভেড়ির মালিক আছেন, যারা স্টার্জন মাছ চাষের ভান করেন, জানালেন সুলিনা'য় অবস্থিত এক ভেড়ির মালিক আন্দ্রেই বেজুসেনকো৷ তিনি বলেন, ‘‘এই ভেড়িগুলো মাছ চোরাচালানকারীদের সঙ্গে যোগসাজশে কাজ করে বলে সন্দেহ করা হয়ে থাকে৷ চুরি করে ধরা মাছগুলোকে ভেড়ির মাছ বলে চালান দেওয়া হয়৷ আসলে ওরা নদীর জলের স্টার্জন বিক্রি করছে৷''

কাজেই আজ ড্যানিউব নদীর ব-দ্বীপে রীতিমতো একটা স্টার্জন মাফিয়া গড়ে উঠেছে৷

ঘাঁটিতে ফিরতে রেঞ্জারদের প্রায় সন্ধ্যা হয়ে যায়৷ এবারও তাদের অভিযান বিশেষ সফল হয়নি – পোচাররা এক ধাপ এগিয়ে ছিল৷ শুধুমাত্র স্টার্জন ধরার বিশেষ জালগুলো বাজেয়াপ্ত করা গেছে৷ নিকু আক্সেনটিয়েভ বলেন, ‘‘এই জালগুলো স্টার্জন ধরার জন্য বিশেষভাবে তৈরি৷ খুব সূক্ষ্ম কিন্তু শক্ত এক ধরনের সুতো দিয়ে তৈরি এই জাল থেকে কচি স্টার্জনদেরও রক্ষা পাবার কোনো উপায় নেই৷''

প্রায় দশ বছর হলো এই এলাকায় স্টার্জন মাছ ধরা পুরোপুরি নিষিদ্ধ৷ বেআইনিভাবে স্টার্জন ধরা সত্ত্বেও ড্যানিউব ব-দ্বীপে তাদের সংখ্যা বাড়বে বলে আশা করা হচ্ছে৷

স্কিপ নেক্সট সেকশন এই বিষয়ে আরো তথ্য

এই বিষয়ে আরো তথ্য

আরো সংবাদ দেখান