স্কটল্যান্ডে গণভোট: সম্ভাবনা এবং অনিশ্চয়তা
গ্রেট ব্রিটেন থেকে স্বাধীনতার পক্ষে, নাকি বিপক্ষে? ১৮ই সেপ্টেম্বর এ প্রশ্ন সামনে রেখেই স্কটল্যান্ডে গণভোট৷ তার আগে চলুন দু’পক্ষের মধ্যে নিষ্পত্তি হয়নি এমন কিছু বিষয় এবং সার্বিক পরিস্থিতির দিকে একটু নজর দেয়া যাক৷
আশা এবং উৎকণ্ঠা
স্বাধীনত দেশ হিসেবে অভ্যুত্থান শুধু যে স্কটল্যান্ডের জন্যই একটা বিরাট পরিবর্তন এনে দেবে – তা কিন্তু নয়৷ এমন একটা ঘটনা ব্রিটেন, ইউরোপ, এমনকি ন্যাটো-কেও দাঁড় করাবে নীতিগত পরিবর্তন এবং নতুন চ্যালেঞ্জের সামনে৷
স্কটল্যান্ডের হাতে
স্কটল্যান্ডের স্বাধীনতার সমর্থকরা দৃঢ়ভাবে বিশ্বাস করেন, স্বাধীনতায় লাভই হবে, এর ফলে ক্ষতির কোনো আশঙ্কা নেই৷ উত্তর সাগরের তেল ক্ষেত্রের আয় দিয়ে দেশটি সহজেই নিজের পায়ে দাঁড়াতে পারবে বলে বিশ্বাস তাঁদের৷ ব্রিটিশ সরকারে কাছে অবশ্য রাজস্ব হারানোর ব্যাপারটি বড় রকমের ক্ষতি৷
মিলে থাকাই ভালো?
স্বাধীনতার বিপক্ষের সবাই একতার শক্তিতে বিশ্বাসী৷ তাঁরা বলছেন, স্কটল্যান্ড আর ব্রিটেনের মধ্যে অমিলের চেয়ে মিলই বেশি৷ তাছাড়া, স্বাধীনতার পরিনামে অর্থনৈতিক যে ক্ষতির আশঙ্কা দেখা দেবে তা নিয়েও তাঁরা চিন্তিত৷ স্কটল্যান্ডের অংশে তেল আর গ্যাসের যে মজুদ রয়েছে এটাও গণভোটের বড় নিয়ামক৷
মুদ্রা নিয়ে প্রশ্ন
স্কটল্যান্ড স্বাধীন হলে মুদ্রা নিয়েও জটিলতা দেখা দেবে৷ দুটো উপায় খোলা – হয় ইউরোজোনে থেকে বর্তমান মুদ্রা পাউন্ডকে রেখে দাও, অথবা নতুন মুদ্রা চালু করো৷ স্বাধীন স্কটল্যান্ড কোন পথ ধরবে?
আণবিক অস্ত্রমুক্ত এলাকা?
গ্লাসগোর উত্তর-পশ্চিমের ফ্যাসলেন নৌ-ঘাঁটিতে যে নিউক্লিয়ার সাবমেরিন রয়েছে সেগুলোর কী হবে? স্কটল্যান্ড কিন্তু আগে থেকেই আণবিক অস্ত্র রাখার বিপক্ষে৷
রানি থাকবেন?
এমনও হতে পারে, স্কটল্যান্ড স্বাধীন হলো এবং স্বাধীন দেশেও সাংবিধানিক রাজতন্ত্রের অংশ হিসেবে মাথার ওপরে থেকে গেলেন রানি দ্বিতীয় এলিজাবেথ৷ সে সম্ভাবনা অবশ্য কম৷ বেশির ভাগ স্কটই যে প্রজাতন্ত্র চান!
নাগরিকত্ব এবং ঋণ
গণভোটের মাত্র কয়েকদিন বাকি, অথচ স্কটল্যান্ডের অনেকেই স্বাধীনতার পক্ষে দাঁড়াবেন, নাকি বিপক্ষে – এ নিয়ে বেশ দোদুল্যমান৷ স্বাধীনতা নতুন দেশের জন্য কিছু সংকটও ডেকে আনতে পারে! যুক্তরাজ্যের যে পরিমাণ জাতীয় ঋণ তার কতটা দায় উত্তরাধিকার সূত্রে স্কটল্যান্ড নেবে? দ্বৈত নাগরিকত্ব কি অনুমোদন পাবে? এ সব প্রশ্নের উত্তর আজও অজানা৷
ইউরোপিয়ান ইউনিয়নে, নয়ত বাইরে
কোনো দেশ স্বাধীন হলে আপনা-আপনিই ইউরোপিয়ান ইউনিয়নের সদস্য হয়ে যাবে – এমন কোনো বিধান নেই৷ আগের কোনো দৃষ্টান্ত নেই বলে এ নিয়েও বিতর্ক আছে৷ ব্রিটিশ বিশেষজ্ঞরা বলছেন, আবেদন করেই স্কটল্যান্ডকে ইউরোপিয়ান ইউনিয়নের সদস্য হতে হবে৷