1. কন্টেন্টে যান
  2. মূল মেন্যুতে যান
  3. আরো ডয়চে ভেলে সাইটে যান

সোমালিয়ায় ফুটবল দেখার উপর ফতোয়া

১৫ জুন ২০১০

চুপি চুপি দেখতে হচ্ছে খেলা৷ সংগোপনে৷ তরুণরা সোমালিয়ায় দেখতে পাচ্ছে না বিশ্বের জমজমাট এই আয়োজন৷ কিন্তু কেন?

https://p.dw.com/p/Nqnt
সোমালিয়ার জঙ্গিরা (ফাইল ছবি)ছবি: AP

সোমালিয়ার রাজধানী মোগাদিশু৷ শুনশান নীরবতা৷ রাতের শহর৷ পৃথিবীর অন্য প্রান্তের মানুষ বিশেষ করে ফুটবল প্রেমীরা যখন ব্যস্ত টেলিভিশনের পর্দায় বিশ্বকাপ ফুটবল প্রতিযোগিতার খেলাগুলো দেখতে, তখন মোগাদিশুর ফুটবল ফ্যানেরা ঘরের মাঝে টিভির শব্দ বন্ধ করে, ঘরের সমস্ত দরজা জানালা লাগিয়ে দেখছে খেলা৷ না সকলে নয়৷ কেউ কেউ৷

সোমালিয়ায় অবরুদ্ধ ফুটবল৷ কিন্তু কেন? প্রশ্নের উত্তর খুঁজতে গিয়ে জানা গেলো, ইসলামী জঙ্গি গোষ্ঠী হিজবুল ইসলামের নাম৷ তাদের নতুন ফতোয়া – টিভিতে বিশ্বকাপ ফুটবল খেলা দেখা যাবে না৷ শহরের পথে পথে চলছে জঙ্গি সংগঠনের সদস্যদের টহল৷ হাতে ভারী অস্ত্র আর খোলা জিপে চলছে প্রহরা৷

এই চরমপন্থী দলের মুখপাত্র শেখ মোহাম্মদ আবদি আরস৷ সোমবার তিনি মুখোমুখি হয়েছিলেন সাংবাদিকদের৷ বললেন, ‘‘আমি সকল সোমালি তরুণের উদ্দেশ্যে বলছি, যারা বিশ্বকাপ দেখার মনবাসনা করছে, তাদেরকে বলছি, ফুটবল খেলা দেখবে না, অর্থহীন এই ফুটবল আয়োজনে অংশ নেবে না৷ এই খেলা সময় এবং অর্থের জলাঞ্জলি দিচ্ছে৷ এই খেলা বাতিল করা হলো৷ এই প্রতিযোগিতা মুসলিমদের ব্যস্ত রাখছে৷''

কিন্তু কে শোনে কার কথা! তাই ঘরেই অবরুদ্ধ থেকে বিশ্বকাপের রোমাঞ্চকর সব খেলা কোনক্রমে দেখে চলছেন কোন কোন অতি সাহসী দর্শক-সমর্থকরা৷ বিষয়টি গোচরেও এসেছে হিজবুল ইসলামের৷ তাই জার্মানি বনাম অস্ট্রেলিয়ার খেলা যখন চলছিলো দক্ষিণ আফ্রিকায়, তখন রাজধানী মোগাদিশু থেকে ৩০ কিলোমিটার দূরের যুদ্ধ বিদ্রোহী নিয়ন্ত্রিত আফগোয়ে শহর থেকে ১৪ উঠতি বয়সের তরুণকে আটক করে নিয়ে-যাওযা হলো৷ তাদের অপরাধ, তারা টিভিতে খেলা দেখেছিল৷

বিশ্বের বিভিন্ন স্থানে বড় স্ক্রিনে খেলা দেখার ব্যবস্থা করা হলেও সোমালিয়ার লোকালয়ে কিন্তু সে আয়োজন নেই৷ কেবল আফ্রিকান ইউনিয়নের শান্তি রক্ষীবাহিনীর গ্যারিসনে লাগানো হয়েছে বিগ স্ক্রিন৷ বেশ ভাগ্য খারাপ সোমালিয়াবাসীর৷

তবে ফুটবলের উপর এই নিষেধাজ্ঞা আজই দেয়া হয়েছে এমন নয়৷ গত কয়েক বছর ধরে এই খেলা দেখা এবং খেলার উপর নেমে এসেছে খড়্গ৷ ইসলামী শরিয়া আইন প্রতিষ্ঠার আন্দোলনে থাকা এই সংগঠনের নিষেধাজ্ঞার তালিকায় রয়েছে মোবাইলে মিউজিক রিংটোনও৷ নৃত্য, সে তো মহা নিষেধাজ্ঞার তালিকায়৷ আর তাদের নিজস্ব আইন না মানলে শান্তি প্রকাশ্যে বেত্রাঘাত বা দোররা৷

ইসলামী জঙ্গিদের এই নিষেধাজ্ঞার থাবাটা বিস্তার লাভ করছে বলেই জানা যাচ্ছে৷ সোমালিয়ার সীমান্ত লাগোয়া কেনিয়ার শহর মান্দেরাতে ইতিমধ্যে বয়ান দেয়া হয়েছে, ফুটবল খেলা দেখা যাবে না৷

প্রতিবেদন: সাগর সরওয়ার

সম্পাদনা: সঞ্জীব বর্মন