সুনামি ঠেকাতে উঁচু দেয়াল
জাপানের উপকূলবর্তী কয়েকটি এলাকায় সৈকত আর বসতির মাঝে সাড়ে ১২ মিটার উঁচু প্রাচীর বসানো হয়েছে৷ সুনামির আঘাত থেকে বাঁচতে এই উদ্যোগ৷
আগের কথা
২০১১ সালে ভূমিকম্প ও সুনামির আঘাতে জাপানে প্রায় ১৮ হাজার মানুষের মৃত্যু হয়েছিল৷ সেই ঘটনার পুনরাবৃত্তি ঠেকাতে বিভিন্ন পদক্ষেপ নিচ্ছে জাপান৷
উঁচু দেয়াল
২০১১ সালের সুনামির আগে উপকূলীয় বিভিন্ন এলাকায় চার মিটার উঁচু বাঁধ ছিল৷ কিন্তু সুনামির ঢেউয়ের উচ্চতা কোনো কোনো স্থানে প্রায় ৩০ মিটার ছিল৷ এই অবস্থার উন্নয়নে পৌনে ১৩ বিলিয়ন ডলার খরচ করে বাঁধের জায়গায় সাড়ে ১২ মিটার উঁচু কংক্রিটের দেয়াল তৈরি করা হয়েছে৷
দেয়াল নির্মাণের কারণ
গবেষক হিরোইয়াসু কাওয়াই বলছেন, এই দেয়াল সুনামি ঠেকাবে এবং ভূমিতে পানি প্রবেশ প্রতিহত করবে৷ সুনামির উচ্চতা দেয়ালের চেয়ে বেশি হলেও বন্যার পানি ঢুকতে দেরি হবে, আর স্থান পরিত্যাগের জন্য বেশি সময় পাওয়া যাবে বলে মনে করছেন কাওয়াই৷
সমালোচনা
দেয়াল নির্মাণের বিষয়কে ঐ এলাকার মানুষ শুরুতে স্বাগত জানালেও দিন যত যাচ্ছে ততই সমালোচনা বাড়ছে৷ যেমন ৫২ বছর বয়সি আতসুশি ফুজিতা বলছেন, ‘‘খারাপ কিছু না করেও মনে হয় যেন আমরা জেলখানায় আছি৷’’
অসহ্য
একটি টুনা মাছ সরবরাহকারী কোম্পানির প্রধান সোতারো উসুই বলছেন, ‘‘কয়েক প্রজন্ম ধরে আমরা সাগর পারে বাস করছি৷ এই দেয়াল আমাদের সাগর থেকে পৃথক করছে - যা অসহনীয় এক ব্যাপার৷’’
ক্ষতিগ্রস্ত পর্যটন
রাইকো লিজিমা নামের জাপানি এক পর্যটক বলছেন, তিনি ৫০ বছর আগে সন্তানদের নিয়ে রিকুসেনতাকাতা শহরে ঘুরতে গিয়েছিলেন৷ সেখানকার সৈকতে দাপাদাপি করেছিলেন৷ এখন দেয়াল ওঠায় সেই সৌন্দর্যের কিছুই নেই বলে মন্তব্য করেন তিনি৷ ফলে দেয়ালের কারণে ঐ এলাকায় পর্যটক আসার সংখ্যা কমে যেতে পারে বলে আশংকা করছেন স্থানীয়রা৷
আছে প্রশংসাও
তবে প্রাচীর তৈরি হওয়ার বিষয়টিকে যে সবাই নেতিবাচক হিসেবে দেখছেন, তা নয়৷ যেমন কাতসুহিরো হাতাকেয়ামা নামে স্থানীয় এক হোটেলের মালিক বলছেন, সুনামির কারণে তাঁর হোটেল ধ্বংস হয়ে গিয়েছিল৷ এখন প্রাচীর থাকায় সেই একই জায়গায় তিনি আবার হোটেলটি দাঁড় করিয়েছেন৷
জানালা
কেসেননুমা শহরের প্রাচীরের কিছু অংশে ফাঁকা জায়গা রাখা হয়েছে৷ দূর থেকে দেখলে মনে হবে যেন জানালা৷ কিন্তু এই বিষয়টিও পছন্দ করছেন না কেউ কেউ৷ যেমন ইয়ুইচিরো ইতো বলছেন, ‘‘এগুলো প্যারোডি৷ এর মাধ্যমে এমন কিছু দিয়ে আমাদের খুশি করার চেষ্টা করা হয়েছে, যা আমরা প্রথমত চাইনি৷’’