সুদানের নারী বিক্ষোভকারীরা
বিক্ষোভের মুখে সম্প্রতি ক্ষমতা থেকে সরে দাঁড়াতে বাধ্য হন সুদানের প্রেসিডেন্ট ওমর আল-বশির৷ বিক্ষোভে অনেক নারী গুরুত্বপূর্ণ ভূমিকা পালন করেন৷
খাদিজা সালেহ
বশিরবিরোধী বিক্ষোভে অংশ নিতে ছয় বছর পর মার্চ মাসে বিদেশ থেকে দেশে ফেরেন তিনি৷ ‘‘আমার দেশের ভালো ভবিষ্যতের জন্য নিরাপদ স্থান ছেড়ে আমি দেশে এসেছি,’’ বলেন ৪১ বছর বয়সি সালেহ৷
নাহিদ গাব্রালা
১৯৮৯ সালে অভ্যুত্থানের মাধ্যমে ক্ষমতায় এসেছিলেন বশির৷ এপ্রিলে আরেক অভ্যুত্থানের কারণে তিনি ক্ষমতাচ্যুত হন৷ ডিসেম্বরে বশিরবিরোধী বিক্ষোভ শুরু হয়েছিল৷ এখনও তা চলছে৷ এখনকার বিক্ষোভের কারণ সেনাবাহিনীর কাছ থেকে সাধারণের হাতে ক্ষমতা ফিরিয়ে আনা৷ এই অবস্থায় গত জুনে বিক্ষোভরত গাব্রালাকে প্রহার করা হয়, এমনকি ধর্ষণেরও হুমকি দেয়া হয়৷ নিজের মেয়ের জন্য একটি ভালো দেশ পাবার আশায় লড়াই চালিয়ে যেতে চান তিনি৷
হাদিয়া হাসাবাল্লাহ
জুনের ৩ তারিখে গাব্রালাসহ অনেক নারীদের উপর হামলা করেছিল নিরাপত্তা বাহিনী৷ সেই সময় আহত হওয়া নারীদের দেখাশোনা করা এনজিওতে কাজ করেন হাসাবাল্লাহ৷ ঐদিন অনেক নারী যৌন হয়রানির শিকার হয়েছিলেন বলে অভিযোগ রয়েছে৷ তবে ‘‘কলঙ্কের ভয়ে সুদানের কোনো নারী ধর্ষিত হওয়ার কথা বলবে না,’’ বলে মন্তব্য করেন তিনি৷
মাহি আবা-ইয়াজিদ
বশিরের আমলে মেয়েরা প্যান্ট পরতে পারতেন না৷ তাই জুন ৩- এর বিক্ষোভে ট্রাউজার পরে হাজির হয়েছিলেন আবা-ইয়াজিদ৷ তিনিও নিরাপত্তা বাহিনীর প্রহারের শিকার হন৷ ৩৫ বছর বয়িস আবা-ইয়াজিদ বলেন, ‘‘বিক্ষোভে যাওয়ার চেয়েও তাঁর পরনের পোশাকের প্রভাব বেশি ছিল৷’’
দুহা মোহমেদ
‘‘আমি হেডস্কার্ফ পরতে চাই না, কিন্তু এটা আমার ইচ্ছা নয়৷ আমি যা ইচ্ছা পরার অধিকার চাই,’’ বিক্ষোভে অংশ নেয়ার কারণ সম্পর্ক জানাতে গিয়ে বলেন ২৩ বছর বয়সি শিক্ষার্থী মোহমেদ৷
নাগদা মনসুর
ডিসেম্বরে বিক্ষোভে অংশ নেয়ায় ৭৫ দিন কারাগারে ছিলেন তিনি৷ ৩৯ বছর বয়সি মনসুর সেনাবাহিনীর সঙ্গে কোনো আলোচনায় বসতে চান না, কারণ দারফুর যুদ্ধে তাদের ভূমিকা নিয়ে তিনি সন্তুষ্ট নন৷
মানাল ফারাহ
৪৯ বছর বয়সি ফারাহর ২২ বছর বয়সি ছেলে জুন ৩ এর বিক্ষোভের সময় নিহত হন৷ ‘‘যখন সে বিশ্ববিদ্যালয়ে পড়া শুরু করে তখন সে প্রশ্ন করেছিল, সুদানে কেন এত দুর্নীতি৷ সে বলতো, একটা পরিবর্তন দরকার, একটা নতুন সুদান দরকার... আমি আমার সন্তানের স্বপ্ন সত্যি হচ্ছে, এটা দেখতে চাই,’’ বলেন তিনি৷
আলা সালাহ
৮ এপ্রিল একটি গাড়ির উপর দাঁড়িয়ে সাদা পোশাক পরিহিত সালাহ সরকারবিরোধী বক্তব্য রাখছিলেন৷ সেই সময় একজন আলোকচিত্রীর তোলা ছবি (যেটি দেখতে পাচ্ছেন) আন্তর্জাতিক গণমাধ্যমে বেশ পরিচিতি পায়৷ ফলে বিখ্যাত হয়ে ওঠেন ইঞ্জিনিয়ারিং শিক্ষার্থী আলা৷ তাঁর সেই ছবি সুদানের ‘লেডি লিবার্টি’ কিংবা ‘ওমেন ইন হোয়াইট’ নামে পরিচিত হয়ে উঠেছে৷